জাবি প্রতিনিধি: গত ১৫ জুলাই সন্ত্রাসীদের হামলাসহ গণহত্যার আসামি ও স্বৈরশাসক শেখ হাসিনাকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সমর্থন জানানোর অভিযোগে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের তিনজন শিক্ষককে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করলো তার নিজ বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
অবাঞ্ছিতরা হলেন অধ্যাপক এ এ মামুন, অধ্যাপক জহিরুল ইসলাম খন্দকার এবং অধ্যাপক শারমিন সুলতানা।
রবিবার (১৮ আগস্ট) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি বরাবর তাদের ঘোষণাপত্র ও ১২টি দাবির প্রেক্ষিতে স্মারকলিপি জমা দেন। প্রস্তাবিত স্মারকলিপি আলোচনা সাপেক্ষে মেনে না নেওয়া পর্যন্ত সকল ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা করেন তারা।
ঘোষণাপত্রে আরো উল্লেখ করেন, তিনজন শিক্ষকই গত ১৫ জুলাই সন্ত্রাসীদের হামলার সময় সেখানে উপস্থিত থাকা সত্ত্বেও শিক্ষার্থীদের নিরাপদ আশ্রয় দেয়নি, মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেন এবং পরবর্তীতে এই ঘটনার সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা না দেওয়া, এমনকি শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আন্দোলনের শেষ পর্যন্ত গণহত্যার আসামি ও স্বৈরশাসক শেখ হাসিনাকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সমর্থন জানিয়েছেন।
স্মারকলিপিতে উপস্থাপিত দাবিগুলো হলো: একাডেমিক হয়রানির আশংঙ্কায় অবাঞ্ছিত শিক্ষকদের কোনো পরীক্ষা কমিটিতে রাখা যাবে না এবং বর্তমান পরীক্ষা কমিটি থেকে পদত্যাগ করতে হবে; সকল প্রকার লেজুড়বৃত্তিক দলীয় রাজনীতি আজীবন নিষিদ্ধ করতে হবে; সেশনজট না হওয়ার লক্ষ্যে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পরীক্ষা নেওয়া এবং দ্রুত ফল প্রকাশ করতে হবে; ৪ ক্রেডিট এবং ২ ক্রেডিট কোর্সের ক্ষেত্রে প্রতি সপ্তাহে নিয়মানুযায়ী ৩ ঘন্টা ও ২ ঘন্টার কোটা পূরণ করতে হবে; ল্যাবে শিক্ষকদের প্রত্যক্ষভাবে থাকা, দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করা; মাস্টার্স থিসিস, এমফিল, পি এইচ ডি ডিফেন্স সবার জন্য উন্মুক্ত করতে হবে; মাস্টার্স এবং ৪র্থ বর্ষের জন্য যথাক্রমে TA (Teacher Assistant) ও RA (Research Assistant) সিস্টেম চালু করার উদ্যোগ নিতে হবে; গবেষণা, চাকরি, অলিম্পিয়াড ও অন্যান্য দক্ষাত বৃদ্ধি মূলক বিষয় আগে থেকে সময়তালিকার বিজ্ঞপ্তি দিতে হবে; নতুন সিলেবাস প্রনয়নের ক্ষেত্রে ছাত্রদের অংশিধার নিশ্চিত করা হয়নি, অংশীধার নিশ্চিত করে নতুন, পরিমার্জিত, আধুনিক সিলেবাস প্রনয়ন করতে হবে; কোর্স ফিডব্যাক সিস্টেম এর মাধ্যমে যাচাই করে কোর্স শিক্ষক পরিবর্তন এর রীতি চালু করতে হবে; ডিপার্টমেন্টে অভিযোগ বক্স চালু করা এবং অভিযুক্ত শিক্ষক, শিক্ষার্থী অথবা কর্মচারী-কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যথাযথ তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে; কোনো শিক্ষার্থীর সাম্প্রদায়িক বা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করা যাবে না।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মো. সালাহউদ্দিন বলেন, আমার কাছে বিভাগের শিক্ষার্থীরা এসেছিল, তারা একটি অবাঞ্ছিত ঘোষণাপত্র দিয়েছে এবং কিছু দাবি উপস্থাপন করেছে। আমি একভাবে কোনো পদক্ষেপ নিতে পারি না, একাডেমিক কাউন্সিল সভায় কাল সিদ্ধান্ত হবে এ বিষয়ে।
এসআই/
মন্তব্য করুন