spot_img

স্মার্ট পড়াশোনার জনপ্রিয় ১০ পদ্ধতি

এসম্পর্কিত আরো পড়ুন

সাব্বির হোসেন:

পরীক্ষার প্রস্তুতির ক্ষেত্রে আমরা অনেকেই শেষ মুহূর্তে রাত জেগে পড়াশোনা করি। কিন্তু এ পদ্ধতি কতটা কার্যকর? বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, স্মার্ট স্টাডি টেকনিক এবং নিয়মিত চর্চা একজন শিক্ষার্থীর পড়াশোনায় সাফল্য আনতে পারে। চলুন জেনে নেওয়া যাক, স্মার্ট পড়াশোনার জনপ্রিয় কিছু পদ্ধতি—

- বিজ্ঞাপন -

পড়াশোনার সঠিক পরিবেশ: পড়াশোনার উপযুক্ত পরিবেশ শেখার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পড়াশোনার জন্য একটি নির্দিষ্ট স্থান বেছে নিন, যা শুধু এ কাজের জন্য বরাদ্দ থাকবে। আপনি চাইলে কিছু বিষয় মাথায় রাখতে পারেন, যেমন প্রতিদিন পড়ার জায়গা পরিবর্তন করুন। এতে আপনার মনোযোগের মাত্রা বাড়বে। সোশ্যাল মিডিয়া এবং অন্যান্য বিরক্তিকর বিষয় থেকে দূরে থাকুন। একাগ্রতা বজায় রাখতে ফোনে ‘ডিস্টার্ব না করুন’ মোড চালু রাখতে পারেন এবং পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করুন।

এসকিউআরআর মেথড: এই মেথড পাঁচ ধাপে বিভক্ত—সার্ভে (Survey), প্রশ্ন করা (Question), পড়া (Read), স্মরণ করা (Recite), এবং রিভিউ (Review)। প্রথমে সার্ভের মাধ্যমে পুরো অধ্যায়ের ওপর ধারণা নিন। এরপর অধ্যায়ের বিভিন্ন অংশ নিয়ে প্রশ্ন তৈরি করুন। তারপর পড়ুন, স্মরণ করুন এবং শেষে সেই প্রশ্নগুলোর উত্তর দেখে রিভিউ করুন। এই মেথড শিক্ষার্থীদের মধ্যে দীর্ঘ মেয়াদে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করে।

রিট্রিভাল প্র্যাকটিস: অনেকে বই দেখে পড়তে অভ্যস্ত, কিন্তু এই অভ্যাস আপনাকে শিখতে সাহায্য করবে না। বই না দেখে নিজের জানা তথ্যে প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করুন। এতে মস্তিষ্ক তথ্যগুলো বেশি সময় মনে রাখতে সক্ষম হয়। বিষয়টি শিখতে না পারলে পুনরায় বই দেখে তা শিখুন এবং পরে পরীক্ষা দিন।

স্পেসড প্র্যাকটিস: প্রচলিত ধারণা হলো, একটানা কয়েক ঘণ্টা পড়লে ভালো মনে থাকে। কিন্তু গবেষণা বলছে, নির্দিষ্ট বিরতি দিয়ে পড়লে শিক্ষার্থীরা দীর্ঘ সময় ধরে তথ্য মনে রাখতে সক্ষম হন। এ পদ্ধতিতে একটি বিষয়কে ছোট ছোট অংশে ভাগ করে কয়েক দিন পড়ার চেষ্টা করুন। এতে বিষয়টি মস্তিষ্কে ভালোভাবে গেঁথে যায়।

পিকিউআরআর মেথড: পিকিউআরআর মেথডে রয়েছে ছয়টি ধাপ—প্রিভিউ (Preview), প্রশ্ন করা (Question), পড়া (Read), প্রতিফলন করা (Reflect), পুনরাবৃত্তি (Recite), এবং রিভিউ (Review)। এ পদ্ধতি অনুসরণ করে শিক্ষার্থীরা তথ্যকে গভীরভাবে অনুধাবন করতে পারেন। প্রতিটি ধাপ অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে সাজানো, যা শিক্ষার্থীদের শেখার প্রক্রিয়া সহজ করে।

ফেইনম্যান টেকনিক: আপনি সহজে কোনো বিষয় বুঝতে চাইলে ফেইনম্যান টেকনিক ব্যবহার করতে পারেন। এ পদ্ধতিতে আপনি যে বিষয় শিখছেন, সেটিকে এতটা সহজভাবে ব্যাখ্যা করতে হবে, যেন একটি শিশুও তা বুঝতে পারে। এভাবে আপনি কোনো ধারণা গভীরভাবে উপলব্ধি করতে পারবেন এবং নিজের ভুল ধরতে পারবেন। এটি জটিল বিষয়গুলো সহজভাবে বুঝতে এবং স্মরণ করতে সাহায্য করে।

লাইটনার সিস্টেম: লাইটনার সিস্টেম একটি ফ্ল্যাশকার্ডভিত্তিক শিক্ষণপদ্ধতি। এতে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন তথ্য সহজ থেকে কঠিনের ক্রমে ফ্ল্যাশকার্ডে লিখে বারবার পুনরাবৃত্তি করেন। সহজ বিষয়গুলো দ্রুত এবং কঠিন বিষয়গুলো সময় নিয়ে শিখতে হয়। এতে শিক্ষার্থীরা স্বাভাবিকের চেয়ে দ্রুত এবং কার্যকরভাবে শিখতে পারেন।

রঙের মাধ্যমে নোট নিন: রং ব্যবহার করে নোট নেওয়া একটি কার্যকর মস্তিষ্কবান্ধব পদ্ধতি। রঙের ব্যবহার তথ্যের ধরন অনুযায়ী ভিন্ন হতে পারে, যেমন গুরুত্বপূর্ণ তথ্যকে লাল রঙে, সূত্রকে সবুজ রঙে এবং অতিরিক্ত তথ্যকে নীল রঙে লিখে চিহ্নিত করতে পারেন। এতে বিভিন্ন তথ্য মনে রাখা সহজ হয় এবং পরীক্ষার সময় দ্রুত রিভিউ করা যায়।

মাইন্ড ম্যাপিং: মাইন্ড ম্যাপিং হলো এমন পদ্ধতি, যার মাধ্যমে তথ্যগুলো ছবির মাধ্যমে সাজাতে পারবেন। মস্তিষ্কের স্বাভাবিক প্রবণতা হলো ছবি এবং দৃশ্যের মাধ্যমে তথ্যকে ভালোভাবে মনে রাখা। তাই বিভিন্ন তথ্য মাইন্ড ম্যাপ আকারে সাজালে তা সহজে মাথায় থাকবে এবং দীর্ঘ সময় স্মৃতিতে থাকবে।

ব্যায়াম ও ঘুমের গুরুত্ব: শারীরিক ব্যায়াম শুধু শরীর সুস্থ রাখে না, মস্তিষ্কের কার্যকারিতাও বাড়ায়। পড়াশোনার আগে হালকা ব্যায়াম করলে রক্তসঞ্চালন বৃদ্ধি পায় এবং মস্তিষ্কের কার্যকারিতা উন্নত হয়। এ ছাড়া ঘুমের গুরুত্ব অপরিসীম। ঘুমানোর আগে পড়া বিষয়গুলো পুনরায় রিভিউ করুন। এতে তথ্যগুলো মস্তিষ্কে বেশি সময় জমা থাকে এবং স্মৃতিতে পুনরায় ফিরে আসে।

 

/ইএইচ

spot_img
spot_img

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- বিজ্ঞাপন -spot_img

সর্বশেষ প্রকাশিত

spot_img