spot_img

টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং ব্যাকগ্রাউন্ডের প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে টেসলাতে যোগ দিলেন এলান

এসম্পর্কিত আরো পড়ুন

রাতুল সাহা, বুটেক্স প্রতিনিধি: প্রতিবছর অসংখ্য বাংলাদেশী গুগল, ফেসবুক, মাইক্রোসফটের মতো প্রতিষ্ঠানে যোগ দিচ্ছেন। একটা সময় এসব প্রতিষ্ঠানে ক্যারিয়ার গড়া অকল্পনীয় বিষয় মনে হলেও এখন তা সত্যি হচ্ছে। এবার বিশ্ববিখ্যাত গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেসলার এরিয়া ম্যানেজার হিসেবে জয়েন দিলেন প্রথম টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে আসা বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুটেক্স) ৩১তম ব্যাচের এলান কবির।

এক কথায় বলতে গেলে, এলানের এই যাত্রা ছিল স্বপ্ন পরিবর্তন, কঠোর পরিশ্রম এবং নিজের সামর্থ্যের সঠিক ব্যবহার করার এক চমৎকার উদাহরণ। বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০০৯ সালে ব্যাচেলর ডিগ্রি সম্পন্ন করার পর তিনি দীর্ঘদিন টেক্সটাইল খাতে কাজ করেন। তবে নিজের অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন করা এবং নতুন কিছু করার তাগিদ থেকেই তিনি ক্যারিয়ারে পরিবর্তন আনেন।

- বিজ্ঞাপন -

২০১৭ সালে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ শেষ করার পর এলান তার উচ্চশিক্ষার লক্ষ্য নিয়ে সুইডেনে যান। তিনি হেল্মস্টাড বিশ্ববিদ্যালয়ে ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে মাস্টার্স ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। এই সময়েই তার পেশাদারিত্বের দক্ষতা বৃদ্ধি করতে যুক্তরাষ্ট্রের ISCEA এবং PMI থেকে সাপ্লাই চেইন এবং প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্টের ওপর লাইসেন্স অর্জন করেন।

সুইডেনে সাত বছরের পেশাগত জীবনে একটি বিশ্বখ্যাত জিম ইকুইপমেন্ট কোম্পানিতে কাজ করেন, যেখানে চারবার প্রমোশন পান। এরপরও তার মনে হয়, নতুন ইন্ডাস্ট্রিতে অভিজ্ঞতা অর্জন করতে হবে। সেই লক্ষ্য নিয়েই তিনি টেসলার মতো জায়ান্ট কোম্পানিতে যোগ দেন।

টেসলাতে যোগদানের ধাপ ও অভিজ্ঞতা:
টেসলার প্যানেল ইন্টারভিউ ও নির্বাচনী প্রক্রিয়া ছিল অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং। যেহেতু এটি লিডারশিপ পজিশন ছিল, তাই ইন্টারভিউ বোর্ডে তার স্ট্র্যাটেজি তৈরি, টিম লিডারশিপ দক্ষতা এবং বিভিন্ন পরিস্থিতিতে সমাধান দেওয়ার সক্ষমতা প্রমাণ করতে হয়েছে। টেসলা শুধু ইঞ্জিনিয়ারিং দক্ষতাকেই গুরুত্ব দেয় না, বরং বিভিন্ন পেশার দক্ষ কর্মীদের একত্রিত করে সেরা আউটপুট দেয়।

উচ্চশিক্ষা এবং ক্যারিয়ারের পরামর্শ:
এলানের মতে, উচ্চশিক্ষার জন্য প্রয়োজন সঠিক প্রস্তুতি, পেশাগত অভিজ্ঞতা, এবং নিজস্ব অর্থনৈতিক স্বাবলম্বিতা। তার ভাষায়, “দেশে চাকরি করুন, টাকা জমান এবং নিজের টাকায় বিদেশে পড়তে আসুন।” তিনি মনে করেন, উচ্চশিক্ষা একটি দীর্ঘমেয়াদী প্রক্রিয়া এবং সঠিক পরিকল্পনা ও ধারাবাহিক প্রচেষ্টা থাকলেই সফল হওয়া সম্ভব।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা:
বিদেশে থেকেও এলান দেশের তরুণ প্রজন্মের জন্য কাজ করতে চান। স্কিল ডেভেলপমেন্ট নিয়ে তিনি সবসময়ই সোশ্যাল নেটওয়ার্কে সচেতনতা তৈরি করেন। তার মতে, “বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের মধ্যে নতুন লিডার তৈরির সময় এখনই।”

এলানের এই সাফল্যের গল্প আমাদের শেখায়, সীমাবদ্ধতাকে পেরিয়ে যেতে হলে স্বপ্ন দেখার পাশাপাশি ধৈর্য, কঠোর পরিশ্রম এবং সঠিক দিকনির্দেশনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

এএকে/

spot_img
spot_img

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- বিজ্ঞাপন -spot_img

সর্বশেষ প্রকাশিত

spot_img