আকবর আলী রাতুল, বেরোবি প্রতিনিধি: প্রথম বর্ষ থেকে ধারাবাহিকভাবে পরীক্ষা দিয়ে পাশ করে স্নাতক শেষ বর্ষের পরীক্ষার ফলাফলের দিন জানতে পারলেন প্রথম বর্ষের দ্বিতীয় সেমিস্টারে ফেল করেছেন তিনি। ঘটনাটি ঘটে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) ২০১৭-২০১৮ শিক্ষাবর্ষের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী শামীম ইসলামের সাথে।
এমন ঘটনায় হতাশ হয়ে ফলাফলের দাবিতে সোমবার (১৯ মার্চ) সকাল ১০টায় ভুক্তভোগী শামীম অনশন করেন ও তার সহপাঠীরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে বিক্ষোভ করেন।
জানা যায়, শামীম প্রথম বর্ষের দ্বিতীয় সেমিস্টারে ইনট্রোডাকশন টু কম্পিউটার (কোর্স কোড-১২০৬) ব্যবহারিক কোর্সে ফেল করেন কিন্তু ঐ সেমিস্টারের চূড়ান্ত ফলাফলে তাকে ২.৫৬ সিজিপিএ দিয়ে উত্তীর্ণ দেখানো হয়। পরবর্তী সেমিস্টারগুলোতে নিয়মিতভাবে তার পরীক্ষা নেওয়া ও ফলাফল দেয়া হয়। সবগুলো সেমিস্টারেই তাকে সিজিপিএসহ পাশ দেখানো হলেও ৪র্থ বর্ষের ২য় সেমিস্টারের ফলাফলে তার ফলাফল প্রথম সেমিস্টারের ওই কোর্সের ফেলের জন্য আটকানো হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ড.সরিফা সালোয়া ডিনাকে আহ্বায়ক করে একটি তথ্যানুসন্ধান কমিটি গঠন করা হয়। পরবর্তীতে একাডেমিক কাউন্সিলের ৪২তম সভার সুপারিশক্রমে সিন্ডিকেটের ৯১তম সভার অনুমোদনক্রমে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
তদন্ত কমিটির সদস্য ড. নিতাই কুমার ঘোষ জানান, বর্তমানে বিষয়টি তদন্তের শেষ পর্যায়ে আছে।
ভুক্তভোগী শামীম বলেন, প্রথম বর্ষের দ্বিতীয় সেমিস্টারের চূড়ান্ত ফলাফলে আমাকে উত্তীর্ণ দেখানো হয় ফলে পরবর্তী বর্ষের পরীক্ষাগুলোতে বসতে পারি এবং সফলতার সাথে পাশ করি। যদিও আমি ঐ সময়ে জানতে পারি প্রথম বর্ষের একটি কোর্সে আমাকে ফেল দেখানো হয়েছে। ফলে আমি বিভাগ ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ দপ্তরে যোগাযোগ করি আমার মানোন্নয়ন পরীক্ষা দেয়ার জন্য। কিন্তু নানা জটিলতা দেখিয়ে আমার ওই পরীক্ষা নেয়া হয়নি। যদিও বিশেষ অনুমতির ভিত্তিতে আমার পরীক্ষা নেয়া হবে বলে মৌখিকভাবে জানানো হয় কিন্তু বছরের পর বছর পেরোলেও আমার এই পরীক্ষা নেওয়া হয়নি।
তিনি জানান, উপাচার্য হাসিবুর রশিদের সাথে তার বাসভবনে দেখা করেও কোনো সমাধান পাননি। ফলে বাধ্য হয়ে আমরণ অনশনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।
তার সহপাঠীরা জানান, একজন শিক্ষার্থী যদি প্রথম বর্ষেই অকৃতকার্য হয় তবে তাকে পাশ দেখানো হল কেন, কেনই বা এ বিষয়ে সমাধান দিতে এত দেরি হচ্ছে? তাকে এভাবে হয়রানি করা হচ্ছে যার প্রতিবাদে আমরা এখানে বিক্ষোভ করছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের এমন উদাসীনতা আমাদের হতবাক করছে। আমরা এই সমস্যার দ্রুত সমাধান চাই।
ইংরেজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান আসিফ আল মতিন বলেন, এই সমস্যার ব্যাপারে তৎকালীন বিভাগীয় প্রধান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সাথে যোগাযোগ করে সমাধান করার চেষ্টা করেছিলেন তবে কোভিড মহামারির কারণে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় সেটি ফলপ্রসূ হয়নি। আগামীতে একাডেমিক সভা ও সিন্ডিকেট সভায় সিদ্ধান্ত হলেই এই সমস্যা সমাধান করতে পারব।
উপাচার্য ড. হাসিবুর রশীদ বলেন, সমস্যাটি নিয়ে তদন্ত কমিটির গঠন করা হয়েছে, প্রতিবেদন পেলেই সিদ্ধান্ত নিয়ে নেব। এক সপ্তাহের মধ্যে বিষয়টি সমাধান হবে।
এসআই/
মন্তব্য করুন