spot_img

সাধারণ শিক্ষার্থী মানেই শিবির, এই শালারা হচ্ছে সব শিবির: রাবি জিয়া সাইবার ফোর্স নেতা

এসম্পর্কিত আরো পড়ুন

রাবি প্রতিনিধি:

‘সাধারণ শিক্ষার্থী মানেই শিবির’ বলে মন্তব্য করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদল নেতা ও শাখার জিয়া সাইবার ফোর্সের সাধারণ সম্পাদক হাসিবুল ইসলাম হাসিব। সম্প্রতি ছাত্রলীগের এক কর্মীর সঙ্গে এই ছাত্রদল নেতার ২ মিনিট ৫১ সেকেন্ডের ফাঁস হওয়া কল রেকর্ডে এমন মন্তব্য করতে শোনা যায়।

- বিজ্ঞাপন -

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় রাবি শাখা ছাত্রলীগের ১০১ জন নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে মামলা করেছেন শাখা ছাত্রদলের এক নেতা। এই মামলা থেকে ছাত্রলীগের এক কর্মীর নাম বাদ দেওয়ার বিষয়ে আরেক ছাত্রদল নেতা হাসিবুল ইসলাম হাসিবের কথোপকথনের কল রেকর্ডটি সাংবাদিকদের হাতে এসেছে।

কল রেকর্ডে ছাত্রলীগের ওই কর্মীকে হাসিব বলেন, শুনেন এখন আপনাদের (ছাত্রলীগ) সব থেকে বড় শত্রু কে জানেন? জবাবে ছাত্রলীগ কর্মী বলেন, কে ভাই? হাসিব বলেন, কে বড় শত্রু বলেন তো?

ছাত্রলীগ কর্মী বলেন, এ বিষয়ে আমার কোনো আইডিয়া নেই, ভাই। হাসিব বলেন- সবচেয়ে বড় শত্রু হচ্ছে সাধারণ শিক্ষার্থী। এরা হচ্ছে শিবির। সাধারণ শিক্ষার্থী মানেই শিবির। এই শালারা হচ্ছে সব শিবির। তারা কিন্তু আপনাকে ছাড় দেবে না। আমাদের মামলার লিস্ট দেখছেন? জবাবে ছাত্রলীগ নেতা বলেন- জি, ভাই দেখলাম। ফোনের অপর পাশ থেকে হাসিব বলেন, আমাদের মামলা এখনো এন্ট্রি হয়নি, কাল হবে। আমরা তো একটা মামলা করেছি। বিশ্ববিদ্যালয় ও হল প্রশাসন আরেকটা মামলা করবে। লিস্ট তো দেখেছেনই। এ লিস্ট অনুযায়ী আরেকটা মামলা হবে। যেটা হল প্রশাসন করবে।’

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের রাজনীতিতে গ্রুপিংয়ের কথা উল্লেখ করে হাসিব বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নেতাকে বলেও লাভ হবে না। আমাদের একটা গ্রুপ আছে। রাজনীতিতে একটা গ্রুপিং আছে।

ছাত্রলীগ নেতা বলেন, অবশ্যই, জি ভাই। হাসিব বলেন, আপনি মনে হয় জানেন না। আপনি যদি আবিরকে বলেন, এখন আবির যার সঙ্গে রাজনীতি করে তাকে দিয়েও যদি বলানো হয় লাভ নাই।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন সর্বোচ্চ নেতা কে? আহ্বায়ক রাহি ভাই। উনিও যদি আমাকে মানা করে মামলাটা করো না তাও লাভ হবে না। ছাত্রলীগ নেতা বলেন, জি, ভাই। হাসিব বলেন, আমাদের সিদ্ধান্ত আমরা নেই। আমরা যেটা করব সেটাই। তবে আমি একটু আপনার বিষয়ে কথাবার্তা বলি।’

এ সময় হাসিব প্রশ্ন করে আরো বলেন, ‘আপনার সেশন কত ছিল? রুনু কিবরিয়া কমিটির কোন পদে ছিলেন? জবাবে ছাত্রলীগ নেতা বলেন, না ভাই আমি পদে ছিলাম না। এরপর হাসিব বলেন, আপনি ফোন দিয়েছেন। আপনার সোহরাওয়ার্দী হলে আবার সভাপতি নিয়াজ আছে। নিয়াজ আসলে আবার আমার ডিপার্টমেন্টের ছোট ভাই। সেও ফোন দিচ্ছে। আপনারা তো বুঝেন। আমি নাম বাদ দিতে বললে বলবে আমি দালাল। আমি টাকা খেয়ে এ কাজ করেছি। তো এটা আমি কৌশলে একটু আলোচনা করি। আলোচনা করে কল দিব। আমার সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন। ফোনের ওপাশ থেকে ছাত্রলীগ নেতা বলেন, জি ভাই, আপনার কথা শুনেছি।’

ফাঁস হওয়া এই কথোপকথনটি স্বীকার করে হাসিবুল ইসলাম হাসিব বলেন, ‘কারো ক্ষতি করার উদ্দেশ্যে কোনো কথা বলা হয়নি। কারো কাছে কোনো টাকা-পয়সা চাইনি। আমি যতটুকু পেরেছি ছাত্রলীগের ছেলেপেলেদের সহযোগিতার চেষ্টা করেছি। যারা রানিং ছাত্র আছে, তারা যেন পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারে, সে চেষ্টা করেছি। তবে আমি সহযোগিতার বিনিময়ে কারো কাছে টাকা দাবি করিনি।’

সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সুলতান আহমেদ রাহী বলেন, ‘সে কোন পরিপ্রেক্ষিতে এটি বলেছে সেটা আমার বোধগম্য নয়। সংগঠনের দায়িত্বশীল পদে থেকে অপ্রাসঙ্গিক বিষয়ে আমরা কখনোই অন্য কোনো সংগঠন নিয়ে মন্তব্য করতে আগ্রহী নই এবং এ ব্যাপারে আমরা যথেষ্ট সচেতন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৭ হাজার শিক্ষার্থীর প্রথম পরিচয় সাধারণ শিক্ষার্থী। দলীয় মতাদর্শের ভিত্তিতে আমরা কাউকে আলাদা চোখে দেখি না। সকল সাধারণ শিক্ষার্থী আমাদের স্নেহের অনুজ বা শ্রদ্ধেয় অগ্রজ ভাই-বোন।

তিনি আরো বলেন, আমাদের রাবি ছাত্রদলের পদধারী কেউ কোনো বিষয়ে মন্তব্য করলে সেটি আমরা সাংগঠনিকভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারি, তবে সেই শিক্ষার্থী আমাদের দলের (রাবি ছাত্রদল) কোনো পদে বা দায়িত্বে নেই সেহেতু এটা তার ব্যক্তিগত মতামত। এ বিষয়ে আমাদের সুস্পষ্ট নির্দেশনা, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল সকল মত ও আদর্শের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। সুতরাং এখানে খণ্ডিত বক্তব্য নিয়ে ধূম্রজাল সৃষ্টির সুযোগ নেই। দলীয় শৃঙ্খলা অনুযায়ী সংগঠনের আহবায়ক, সদস্য সচিব ও দপ্তর সম্পাদকের বাইরে যেকোনো বক্তব্য বা বিবৃতির দায় ব্যক্তির, এখানে সংগঠনের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।

/ইএইচ

spot_img
spot_img

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- বিজ্ঞাপন -spot_img

সর্বশেষ প্রকাশিত

spot_img