ইবি প্রতিনিধি: সীমান্তে হত্যা ও ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল ও ছাত্র সমাবেশ করেছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) বিকেল পাচঁ টায় ফেলানি হত্যা দিবস উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের জিয়া মোড় থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে এসে শেষ হয়। পরে সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় শিক্ষার্থীরা ‘আজকের এই দিনে, ফেলানী তোমায় মনে পড়ে; ফেলানীর রক্ত, বৃথা যেতে দিবো না; দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা; আবু সাঈদ মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ; আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে, ডাইরেক্ট একশন; ভারতীয় আগ্রাসন, বন্ধ করো করতে হবে; দিয়েছিতো রক্ত, আরো দিবো রক্ত’সহ বিভিন্ন শ্লোগান দেয়।
সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, ২০১১ সালে ভারতীয় বাহিনী ফেলানীকে হত্যা করে কাঁটাতারে ঝুলিয়ে রেখেছিলো। আবরার ফাহাদ ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে জীবন দিয়েছে। ভারত এখনো সীমান্ত হত্যা বন্ধ করেনি। ভারত সবসময় প্রতিবেশীদের সঙ্গে আধিপত্যবাদী মনোভাব নিয়ে চলে। সেদিন ভারত ফেলানীর লাশ ঝুলিয়ে রাখেনি তারা বাংলাদেশের মানচিত্রকে কাঁটাতারে ঝুলিয়ে রেখেছিলো। আমরা ফেলানী হত্যাসহ সকল সীমান্ত হত্যার বিচার চাই।
এসময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক এস এম সুইট বলেন, ‘২০১১ সালে কুড়িগ্রামে ভারত আমাদের বোন ফেলানীকে কাঁটাতারে ঝুলায় নি বরং পুরো বাংলাদেশকে ঝুলিয়ে রেখেছে। আওয়ামী সরকারের নতজানু পররাষ্ট্র নীতির কারণে এমনটি করার দু:সাহস তারা দেখিয়েছে। কিন্তু জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থানের পর ভারতের সাথে আমাদের সম্পর্ক হবে চোখে চোখ রেখে। অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আহ্বান থাকবে ভারতের সাথে যেন ন্যায্যতার ভিত্তিতে সম্পর্ক তৈরি করে। আর অতিদ্রুত ফেলানি হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত করে বিচার করতে হবে। আর সবসময় ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরূদ্ধে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে কাঁধে কাঁধ রেখে কাজ করে যাবে।’বিগত দিনে ভারত আমাদের দেশে আধিপত্যবাদ বজায় রেখেছিলো। ভারতের সাথে আমাদের সম্পর্ক হবে পারষ্পরিক ন্যায্যতার ভিত্তিতে। ভারত আমাদের সাথে যেমন সম্পর্ক রাখবে আমরাও সেভাবে তাদের সাথে সম্পর্ক রাখবো। বাংলাদেশে কোনো বিদেশি রাষ্ট্রের আধিপত্যবাদ জনগণ মেনে নিবে না। আমরা বর্তমান সরকারের কাছে সকল সীমান্ত হত্যার বিচারের জন্য যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে কুড়িগ্রামের অনন্তপুর-দিনহাটা সীমান্তের খিতাবের কুঠি এলাকায় ৭ জানুয়ারি ২০১১ সালে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ-এর সদস্যরা ফেলানী খাতুন নামের এক কিশোরীকে গুলি করে হত্যা করে। বিএসএফ ১৮১ ব্যাটালিয়নের চৌধুরী হাট ক্যাম্পের জওয়ানদের এই ঘটনার জন্য দায়ী করা হয়। ফেলানীর লাশ পাঁচ ঘণ্টা কাঁটাতারে ঝুলে ছিল। বিএসএফ নিজস্ব আদালতে এ ঘটনার জন্য দায়ী সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে।
এসএস/