এডুকেশন টাইমস ডেস্ক: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলে ছাদের পলেস্তারা খসে শিক্ষার্থী আহতের ঘটনায় বিক্ষোভ-মিছিল করেছেন সেখানকার আবাসিক শিক্ষার্থীরা। এ সময় তিনদিনের মধ্যে হলের সংস্কার কাজ শুরু এবং আগামী এক মাসের মধ্যে নতুন ভবন তৈরির উদ্যোগ নেওয়াসহ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে রেখেছেন শিক্ষার্থীরা।
মূল ভবনের ২০৪ নম্বর কক্ষে সোমবার রাত দেড়টার দিকে ছাদের পলেস্তারা খসে শিক্ষার্থী আহতের ঘটনাটি ঘটে। আহত মাসুদ রানা ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী। ঘটনার পর তাকে ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়।
ওই কক্ষের বাসিন্দা শান্তি ও সংঘর্ষ বিভাগের শিক্ষার্থী ফরহাদ জুবায়ের বলেন, “মাসুদ ভাই মশারি টাঙিয়ে ঘুমাচ্ছিলেন। রাত দেড়টার দিকে ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ে তার মাথা কেটে যায়। মাথার দুই জায়গায় কেটে গেছে। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে সিটি স্ক্যান করানো হয়। রিপোর্ট দেখে ডাক্তার বলেছেন, তিনি আশঙ্কামুক্ত।”
মঙ্গলবার দুপুরে মুহসীন হল থেকে মিছিল নিয়ে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে গিয়ে দাবি তুলে ধরেন হলের শিক্ষার্থীরা।
মুহসীন হল ডিবেটিং ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সাদিক বলেন, “শিক্ষার্থীদের জীবনের নিরাপত্তার স্বার্থে আমরা দাবি তুলে ধরছি।“
সেগুলো হল-
• অবিলম্বে ঐতিহ্যবাহী হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলে নতুন ভবন তৈরির ব্যবস্থা করতে হবে। আগামী ৭ দিনের মধ্যে সুস্পষ্ট সময়সীমাসহ এ সংক্রান্ত বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দিতে হবে এবং আগামী ১ মাসের মধ্যে নতুন ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করতে হবে।
• নতুন ভবন হওয়ার আগ পর্যন্ত হলে শিক্ষার্থী অ্যালটমেন্ট কমিয়ে দিতে হবে।
• নতুন ভবন হওয়ার আগ পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার স্বার্থে প্রয়োজনীয় সংস্কার করতে হবে। এ লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল দপ্তর, কোষাধ্যক্ষ মহোদয়ের দপ্তর, এস্টেট অফিস ও হল প্রশাসনের সমন্বয়ে একটি বিশেষ টাস্কফোর্স গঠন করে আগামী তিন দিনের মধ্যে সংস্কার কাজ শুরু করতে হবে।
মুহসীন হল ডিবেটিং ক্লাবের সভাপতি মেহেদী হাসান বলেন, “বাংলাদেশের মানুষ মশারি টানায় মশার ভয়ে কিন্তু মুহসীন হলে শিক্ষার্থীরা মশারি টানায় শুধুমাত্র মশা থেকে দূরে থাকার জন্য নয় তাদের মাথার উপর যেন ছাদ থেকে পলেস্তরা খসে না পড়ে, তার থেকে দূরে থাকার জন্য।”
এই হলকে ‘ঐতিহাসিক’ বর্ণনা করে তিনি বলেন, “এ হলেই প্রথম, আমি কে তুমি কে রাজাকার রাজাকার স্লোগান দেয়া হয়েছে। আমাদের সুস্পষ্ট দাবি, মুহসীন হলে সংস্কার কাজ করতে হবে।”
এদিকে বিকাল ৪টার দিকে হলের শিক্ষার্থীরা উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমদ খানের কাছে স্মারকলিপি জমা দিতে যান। তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সায়মা হক বিদিশা ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনায় বসেন।
/ইএইচ