খুবি প্রতিনিধি: দেশে চলমান তাপপ্রবাহের কারণে দেশের প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আগামী ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত ছুটি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। তবে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হচ্ছে কি-না সে বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। বিশেষ করে স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে।
চলমান এই তীব্র দাবদাহের কারণে অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে মিল রেখে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় (খুবি) বন্ধ রাখার পক্ষে মত দিচ্ছেন অধিকাংশ শিক্ষার্থী।
তবে তীব্র দাবদাহেও যথারীতি ক্লাস-পরীক্ষা চালু রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে খুবি প্রশাসন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রফেসর খান গোলাম কুদ্দুস বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ক্যালেন্ডারের ধারাবাহিকতা রক্ষায় আমরা আগামী ৪ দিন বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রাখার কোনো চিন্তাভাবনা করছি না। তাছাড়া অধিকাংশ শিক্ষার্থীও চায় যাতে করে একাডেমিক ক্যালেন্ডার অনুযায়ী শেষ সপ্তাহের একাডেমিক কার্যক্রমে কোনো ব্যাঘাত না ঘটুক।’
এদিকে অধিকাংশ শিক্ষার্থী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের পক্ষে মত দিচ্ছেন। তারা বলেন, চলমান তীব্র তাপাদহের কারণে অনেক শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে যেতে পারেন। যে সকল শিক্ষার্থী অনেক দূর থেকে আসেন তারা গুমোট পরিস্থিতির কারণে রাতে ঠিকমতো ঘুমাতে পারেন না। আবার ভোর ৬টা বা ৭টায় উঠে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার জন্য বাস ধরতে হয়। এতে পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়ায় শিক্ষার্থীরা তীব্র মাথা ব্যাথা ও ঠান্ডা-জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন ডিসিপ্লিনের ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মো:ইমরান হোসেন বলেন, ‘সারাদেশব্যপী প্রখর রোদ ও তীব্র গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে জনজীবন। প্রতিদিনই বিগত তাপমাত্রার রেকর্ড ছাড়াচ্ছে খুলনা অঞ্চলের কোনো না কোনো জেলাতে। এমন প্রতিকূল পরিস্থিতির সাথে খাপ খাওয়াতে যেয়ে বিপর্যস্ত হয়ে উঠছে আমাদের দৈনিক জীবনযাপন যার প্রভাব পড়ছে আমাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যে। আমরা আশাবাদী সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে উপযুক্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের মাধ্যমে কতৃপক্ষ বরাবরের মতো শিক্ষার্থীদের পাশে থাকবে।’
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা ডিসিপ্লিনের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী হাসিব হাসান বলেন, ‘বর্তমানে সারাদেশে যে তাপদাহ চলছে তাতে করে দিনের বেলা বাইরে বের হয়ে ক্লাস করা একটা দুর্বিষহ অবস্থা হয়ে পড়েছে। তাছাড়া এই বিপর্যয়ের বিষয়টা নিয়ে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বিশ্ববিদ্যালয নানা ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে তারা সাময়িক বন্ধ ঘোষণা সহ অনলাইন ক্লাসের ঘোষণা দিয়েছে। বিশেষ করে আমি আমার ডিসিপ্লিন এর কথা বলতে গেলে এখানের ক্লাস গুলোতে এই তাপদাহে ক্লাস করার অনুপযোগী, অন্যান্য ডিসিপ্লিনে এসির সুবিধা থাকলেও সেটা আমাদের নেই।’
সমাজবিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের ১ম বর্ষের শিক্ষার্থী শাম্মি আক্তার মিথি বলেন, ‘চলমান এই তাপপ্রবাহের কারণে আমাদের জন্য ক্লাস করা খুব বেশি কষ্টদায়ক হয়ে যাচ্ছে। সারাদিন রোদে, গরমে ক্লাস করে প্রত্যেকটা শিক্ষার্থীই হাপিয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে আমি, যেমন দূর থেকে এসে ক্লাস করি আমার মতো যারা আছে প্রত্যেকেই প্রচন্ড তাপে অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে। তীব্র গরম ও বাতাসে জলীয়বাষ্পের পরিমাণ বৃদ্ধির কারণে হিটস্ট্রোক ও ডিহাইড্রেশনের ঝুঁকি বাড়ছে।তাই যদি এই অতিরিক্ত তাপদাহে কিছুদিনের জন্য ক্লাস অফ রাখা অথবা সকল একাডেমিক কার্যক্রম অনলাইন নেয়ার ব্যবস্থা করা হতো তাহলে আমাদের জন্য খুবই ভালো হতো।’
এসআই/