চবি প্রতিনিধি: অমর একুশে বইমেলা-২০২৫ এ প্রকাশিত হয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) হিসাববিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মিজবাহুল জান্নাত তারিনের প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘কথা ছিলো সুবিনয়’। বইটি সৃজনশীল প্রকাশনা সংস্থা ‘দূরবীণ’ থেকে প্রকাশিত হয়েছে। অমর একুশে বইমেলা ২০২৫ কিংবদন্তী পাবলিকেশন এর ঢাকা ৭৫-৭৬-৭৭ নং স্টলে এবং চট্টগ্রাম বইমেলা ৩০,৩১ নং স্টলে বইটি পাওয়া যাচ্ছে।
এই কাব্যগ্রন্থের অন্যতম প্রধান প্রতিপাদ্য হলো স্মৃতির অস্তিত্ব। স্মৃতি কি কেবলই অতীতের ছায়া, নাকি তা বর্তমান সত্তাকে গঠন করে? স্মৃতি কি আশ্রয়, নাকি এক অনিবার্য কারাগার?
বইটির নাম শুনলেই প্রথমেই মনে প্রশ্ন জাগে—সুবিনয় কে? কাব্যগ্রন্থের কবিতাগুলো পড়তে পড়তে বোঝা যায়, জীবনের সব হারানো, অপ্রাপ্ত, অস্বীকৃত অনুভূতির প্রতিচ্ছবি হয়ে ওঠে এই চরিত্র। যে হাতের মুঠোয় এসেও ফসকে গেছে; যে বাস্তবের কঠিন পর্দায় ভেঙে চুরমার হয়েছে।
বইটি সম্পর্কে পাঠকমহল জানান, কাব্যগ্রন্থটির শিরোনামে অদৃশ্য ব্যথার সুর বাঁজে। লেখিকা তার লেখায় সুবিনয়ের ব্যথা, আশা এবং ভালোবাসার আকাঙ্ক্ষাকে এমনভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন যা নিজের ব্যক্তিগত স্মৃতির সঙ্গে অদ্ভুত সংযোগ তৈরি করে। অলঙ্কারপূর্ণ ভাষায় প্রতিটি শব্দের ওজন এমনভাবে অনুভব করিয়েছেন মনে হয় যেন সকলেই কোনো না কোনোভাবে সুবিনয়।
কখনো মনে হয়, সুবিনয় এক বাস্তব চরিত্র—একজন, যাকে কবি একদিন ভালোবেসেছিলেন, যার সঙ্গে তার সংলাপ ছিল, প্রতিশ্রুতি ছিল, কিংবা যার কাছে তিনি কিছু পাওয়ার আশায় ছিলেন। কিন্তু কাব্যের অভ্যন্তরে প্রবেশ করতেই বোঝা যায়, সুবিনয় কেবল একজন প্রেমিক নয়, বরং এক শূন্যতাবাহী সত্তা—এক অনুভূতি, যা সম্পর্কের বন্ধন ছিন্ন হয়ে গেলেও মনে গেঁথে থাকে। তিনি যেন এক দীর্ঘ প্রতীক্ষার প্রতীক, যেন এক অমোঘ বেদনাবাহী ছায়া, যার অস্তিত্ব বাস্তবিক হলেও সময়ের কাছে পরাজিত।
সবকিছুর বেড়াজালে একটা প্রশ্ন রয়েই যায়। তবে কি সুবিনয় সময়েরই আরেক নাম? কিংবা স্মৃতির? কিংবা এক এমন শূন্যতার, যা সব সম্পর্কের?
বইটির বিশেষত্ব সম্পর্কে লেখিকা ‘মিজবাহুল জান্নাত তারিন বলেন ‘ আমরা সকলেই জীবনের কোনো না কোনো পর্যায়ে সুবিনয়ের মতো কাউকে চিনি, যাকে হয়তো হারিয়েছি, হয়তো ভুলতে পারিনি, কিংবা হয়তো তার অস্তিত্ব কেবল স্মৃতির পাতায় টিকে আছে। এই কাব্যগ্রন্থ আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়—সব গল্পের শেষ হয় না, কিছু সম্পর্কের নাম হয় না, কিছু অপেক্ষার কোনো ফলাফল থাকে না। কিন্তু তবুও, এগুলো আমাদের জীবনের অংশ হয়ে থাকে। বইয়ের সবচেয়ে চমকপ্রদ দিক এটাই—আমি কোনো উত্তর দিই নি, বরং পাঠকদের ভাবনার জগতে প্রবেশের একটি দরজা খুলে দিয়েছি।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় লেখালিখি করা এই তরুণ লেখিকা ‘মিজবাহুল জান্নাত তারিন’ নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করছেন কবি হিসেবে।
এএকে/