spot_img

হারিয়ে যাচ্ছে কুবির ‘ছাত্র আন্দোলন চত্ত্বর’

এসম্পর্কিত আরো পড়ুন

কুবি প্রতিনিধি: কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় সারাদেশে প্রথম হামলা শিকার হয় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। গত ১১ জুলাই আনসার ক্যাম্প সংলগ্ন মোড়ে পুলিশের হামলার শিকার হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সেই স্মৃতি ধরে রাখতে ‘ছাত্র আন্দোলন চত্ত্বর’ নামে ওই স্থানের নামকরণ করা হয়। কিন্তু সরকার পতনের ছয় মাসের মধ্যেই হারিয়ে গেছে চত্বরটি।

জানা যায়, জুলাই বিপ্লবের সূচনা লগ্নে কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে গত বছরের ১১ জুলাই বিকাল ৩টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অভিমুখে যাত্রা করলে ক্যাম্পাসের অদূরে আনসার ক্যাম্পের সামনে পুলিশি বাঁধার মুখে পড়েন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা পুলিশের সেই ব্যারিকেড ভেঙে সামনে এগিয়ে যেতে চাইলে দুপক্ষের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে ছাত্রদের দমন করতে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। এর জবাবে শিক্ষার্থীরাও ইট-পাথর নিক্ষেপ করলে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড, কাঁদানে গ্যাস এবং ছররা গুলি নিক্ষেপ করে। এতে সাধারণ শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকসহ ৩০ এর অধিক আহত হয়।

- বিজ্ঞাপন -

পুলিশের অতর্কিতে হামলার প্রতিবাদে ১২ জুলাই ঘটনাস্থলটিকে ‘ছাত্র আন্দোলন চত্বর’ ঘোষণা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। নামকরণের স্মৃতিস্বরূপ গাছও রোপণ কর হয়েছিল। পরবর্তীতে আন্দোলন আরও বেগবান হলে ২৮ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের নেতাকর্মী ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের সদস্যরা ওই স্থানে টানানো নামফলক ছিঁড়ে ফেলে।

কোটা সংস্কার আন্দোলন গণ-অভ্যুত্থানের রূপ নিলে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে এবং শেখ হাসিনা পালিয়ে যান। সরকার পতনের ৬ মাস পূর্ণ হলেও ছাত্র ‘আন্দোলন চত্ত্বর’কে সংস্কারের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, বর্তমান সরকার কিংবা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেউই কোনো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। এতে ম্লান হয়ে গেছে জুলাই বিপ্লবের প্রথম রক্ত দেয়ার ইতিহাস। ফলে ৬ মাসের মধ্যেই প্রায় হারিয়ে গেছে ‘ছাত্র আন্দোলন চত্ত্বর’।

হারিয়ে যাওয়া ‘ছাত্র আন্দোলন চত্ত্বর’ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও আন্দোলনকারী ফরহাদ মিয়া কাউসার বলেন, ‘ছাত্র আন্দোলন চত্ত্বর কুবি শিক্ষার্থীর জন্য ঐতিহাসিক স্থান। ওই স্থানে স্বৈরাচার হাসিনার লালিত পুলিশের দ্বারা আমরা হামলার শিকার হই। ওই ঘটনার পর থেকে সারা বাংলাদেশে আন্দোলনের স্পৃহা আরও উজ্জীবিত হয়। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ছাত্র আন্দোলন চত্ত্বর’ নিশ্চিহ্ন হওয়ার একটা কারণ হতে পারে আন্দোলন যারা নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, তাদের অনেকেরই শিক্ষা জীবন শেষ আবার অনেকেই জেলা রাজনীতিতে চলে গেছেন। যারা ক্যাম্পাসে আছেন তারা এটা নিয়ে খুব বেশি কনসার্ন না। আমরা চাইব প্রশাসনিক উদ্যোগে ওই জায়গাটা স্মৃতিবিজড়িত করা যায় কি-না।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কুমিল্লা জেলার আহ্বায়ক এবং তৎকালীন কুবির সমন্বয়ক মোহাম্মদ সাকিব হোসাইন বলেন, ‘ওই জায়গটা ব্যবহার করার জন্য আমরা কতৃপক্ষের অনুমতি নিব। ফর্মালি ওই জয়াগায় একটা চত্বর বানানোর জন্য যা যা প্রয়োজন সেভাবে ওই জায়গাকে আমরা সংরক্ষণ করব। আমরা অতি তাড়াতাড়ি স্থানটিকে একটি আইকনিকভাবে গড়ে তুলব। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যরা একইসঙ্গে কাজ করবে।’

‘ছাত্র আন্দোলন চত্ত্বর’ পুনরায় স্থাপনের বিষয় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো: মুজিবুর রহমান মজুমদারের সঙ্গে কথা বললে তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যদি আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাহলে আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নেব।’

এএকে/

spot_img
spot_img

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- বিজ্ঞাপন -spot_img

সর্বশেষ প্রকাশিত

spot_img