জবি প্রতিনিধি: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ও সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আবুল হোসেনের বিরুদ্ধে তথ্য গোপন করে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের পিএইচডি কমিটির এক্সটার্নাল সদস্য হওয়ার অভিযোগ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়েরই একজন শিক্ষক। ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. আবু সালেহ সেকেন্দার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শনিবার (২৭ এপ্রিল) রাতে এই অভিযোগ করেন।
বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই চলছে তুমুল আলোচনা-সমালোচনা। তবে অভিযোগটি পুরোপুরি ভিত্তিহীন দাবি অধ্যাপক ড. আবুল হোসেনের।
জবির ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. আবু সালেহ সেকেন্দার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দাবি করেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধিমতে পিএইচডির এক্সপার্ট বাইরে থেকে নিয়োগপ্রাপ্ত হতে হবে। এই এক্সপার্টিজ নিয়োগ একাডেমিক কমিটির মাধ্যমে হতে হবে। তবে সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষক হয়েও ড. আবুল হোসেন তথ্য গোপন করে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের পিএইচডি কমিটির এক্সটার্নাল মেম্বার হয়েছেন।এই নিয়োগ একাডেমিক কমিটির মাধ্যমে হয়নি। তিনি নিজেকে গুগল স্কলারে যেসব বিষয়ের এক্সপার্ট দাবি করেছেন তার সঙ্গে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতির ন্যুনতম কোনো সম্পর্কও নেই।
আবু সালেহ সেকেন্দার তার পোস্টে আরও উল্লেখ করেন, কারোর যদি এক্সপার্টিজ না থাকে তাহলে প্রথম কাজ হচ্ছে তিনি ওই বিষয়ে কোনো প্রস্তাব পেলে তা ডিনাই করবেন। যদি না করেন তাহলে তিনি তথ্য গোপনের দায়ে অভিযুক্ত হবেন এবং এই জাল-জালিয়াতি নৈতিকস্থলন ধারায় পড়বে। সেক্ষেত্রে তার সর্বোচ্চ শাস্তি হবে চাকরি থেকে অপসারণ করা। এই নিয়োগ একাডেমিক কমিটির মাধ্যমে হয়নি। একই সাথে আবু সালেহ সেকেন্দার এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে লিখিত অভিযোগ করার কথাও জানান
বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন জ্যেষ্ঠ অধ্যাপক বলেন, এমন স্পর্শকাতর অভিযোগ সম্পর্কে তদন্ত করে প্রকৃত ঘটনা তুলে আনা দরকার। এর সত্যতা কতটুকু সেটি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থে জানা দরকার সব মহলের।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. আবু সালেহ সেকেন্দারের মুঠোফোনে বেশ কয়েকবার কল দিলেও তিনি তা কেটে দেন।
তবে সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আবুল হোসেন বলেন, অভিযোগটি ভিত্তিহীন। আমি ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের পিএইচডি কমিটির কেউ না। এক্সটার্নাল মেম্বার না। এটা হতে হলে তো সিস্টেম আছে। তবে পিএইচডি কমিটির মিটিংয়ে চাইলে যে কেউ যেতে পারে। সেটা আমি গিয়েছি। তবে কাগজে কলমে এমন কোনো কমিটির সদস্য না আমি।
এই বিষয়ে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. আতিয়ার রহমানকে ফোন করা হলে তিনি রিসিভ করেননি।
উল্লেখ্য, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির কার্যনির্বাহী পরিষদ নির্বাচন-২০২২ এর আগে ইশতেহার ঘোষণার সময় ‘নির্বাচিত হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক পদ না নেওয়ার’ অঙ্গীকার করেও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিনের দায়িত্ব নিয়েছেন অধ্যাপক ড. মো. আবুল হোসেন। একই সাথে তখন শিক্ষকদের স্বার্থ বিবেচনা করে গুরুত্বপূর্ণ পদ না নেওয়ার কথা বলা হলেও ২০১৪ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত টানা ৯ বছর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করে সমালোচনার মুখে পড়েন এই অধ্যাপক।
এসআই/
মন্তব্য করুন