ইবি প্রতিনিধি: লোক দেখানো পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচি করেছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) প্রসাশন। এই কর্মসূচির মূল উদ্দেশ্য বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তির (এপিএ) টার্গের পূরণ করা। মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১১টায় ‘পরিচ্ছন্ন ক্যাম্পাস’ নামে এ কর্মসূচি করা হয়।
এই কর্মসূচির শুরুতে ফলিত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অনুষদের সামনে থেকে র্যালি শুরু হয়। পরে র্যালিটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে অনুষদ ভবন সংলগ্ন বাংলা মঞ্চে এসে শেষ হয়।
কর্মসূচির অংশ হিসেবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কাগজ, শুকনো পাতা ও পলিথিন কুড়ান শিক্ষক, কর্মকর্তা ও প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা। এই অভিযানটি ২৫-৩০ মিনিটের মধ্যে শেষ হয়।
মূলত এটি শিক্ষার্থীদের উদ্বুদ্ধ করার জন্য আয়োজন করা হলেও শিক্ষার্থীদের কাউকে জানানো হয়নি। এছাড়া প্রচারের জন্য গণমাধ্যম কর্মীদেরও জানানো হয়নি।
কর্মসূচিতে উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আলমগীর হোসেন ভূঁইয়া, জীব বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. রেজওয়ানুল ইসলাম, সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন, শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন, খালেদা জিয়া হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. ইয়াসমীন আরা সাথী, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি শিরীনা বিথী, রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান, এপিএ বাস্তবায়ন টিমের ফোকাল পয়েন্ট চন্দন কুমার দাসসহ বিভিন্ন পর্যায়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা, রোভার ও বিএনসিসির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তির (এপিএ) অংশ হিসেবে এই কার্যক্রম চালানো হয়। এপ্রিলের মধ্যেই এ ধরণের একটি কার্যক্রম পরিচালনার জন্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা ছিল। মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) টার্গেট পূরণের শেষ দিন। কার্যক্রম পরিচালনার পর তথ্য আপডেট করলে এপিএ স্কোরে সেটি যুক্ত হবে। এদিকে সরেজমিন ক্যাম্পাস ঘুরে বিভিন্ন জায়গায় আবর্জনা পরে থাকতে দেখা যায়। এছাড়া ক্যাম্পাসের ডাস্টবিনগুলোর অধিকাংশই ভরে উঠেছে আবর্জনায়। ডাস্টবিনের আশেপাশেও অনেক আবর্জনা লক্ষ্য করা গেলেও এ ব্যাপারে উদ্দ্যোগ নেই প্রশাসনের।
রোভার স্কাউট ও বিএনসিসি সদস্যরা জানান, এই কার্যক্রমে বিএনসিসি ও রোভার সদস্যদের সঙ্গে নেয় প্রশাসন। তবে যেই জায়গাটিতে এই অভিযান চালানো হয়েছে সেখানে গাছের শুকনো পাতা ছাড়া তেমন আবর্জনা ছিল না। যার ফলে মোটামুটি ৩০ মিনিটের মধ্যেই জায়গাটি পরিষ্কার হয়ে যায়।
তারা আরও জানান, এই কার্যক্রম লোক দেখানো ছাড়া কিছু নয়। যে জায়গাটিতে অভিযান চালানো হলো সেটি আগে থেকেই মোটামুটি পরিষ্কার ছিল। শুকনো পাতা ছাড়া তেমন আবর্জনা ছিল না। পুরো ক্যাম্পাসে এত আবর্জনা রয়েছে সেগুলো পরিষ্কার করতে প্রশাসনের উদ্যোগ নেই। আর এই প্রোগ্রাম যদি শিক্ষার্থীদের উদ্বুদ্ধ করাই উদ্দেশ্য হয়ে থাকে তাহলে তাদের অংশগ্রহণ করতে প্রশাসন করতে প্রশাসন উদ্দ্যোগ নেয়নি কেন?
এ বিষয়ে এপিএ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা চন্দন দাস বলেন, পরিচ্ছন্নতা অভিযান একটি চলমান প্রক্রিয়া। শিক্ষার্থীদের উদ্বুদ্ধ করতে এবং কার্যক্রম তড়ান্বিত করতে এই এই পরিচ্ছনা কার্যক্রম করা হয়েছে। তীব্র গরমের কারণে আমরা শিক্ষার্থীদের যুক্ত করিনি। এ ছাড়া আমবাগান এলাকায় চারটি ডাস্টবিন স্থাপন করা হয়েছে। জুনের পরে শিক্ষার্থীদের উদ্বুদ্ধ করতে বিভিন্ন বিভাগ ও সামজিক সংগঠনগুলোকে জানানোর একটি পরিকল্পনা রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, এপিএ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ক্যাম্পাসের পরিচ্ছন্নতা অভিযান শুরু করলাম। এটা অলরেডি কন্টিনিউয়াস আছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সকলকে উদ্বুদ্ধ করার জন্য এই কার্যক্রম করেছি। শুরু শরীরের নয়, মনের ময়লাও যেন আমরা পরিষ্কার করি এই আহ্বান সবার প্রতি থাকবে।
এসআই/
মন্তব্য করুন