আনিসুর রহমান, ইবি: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ডায়না চত্বরে হঠাৎ দেখা মিলল আমির খান অভিনীত ‘পিকে’ মুভির সেই বাস্তবিক ‘পিকে’ ক্যারেক্টারকে। তাকে ঘিরে প্রবল আগ্রহে সকলেই ভিড় জমায় ডায়না চত্বরে । তাকে ঘিরে কেউ তুলছে ছবি, কেউবা করছে ভিডিও।
ডায়না চত্বরে বাস্তবিকভাবে ছিল না আমির খান। ‘পিকে’ ক্যারেক্টার সজ্জিত হয়ে দর্শক মাতাচ্ছিলেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) এক থিয়েটার কর্মী। দেখা মিলল বিশ্বের ইতিহাসে সর্বকালের সেরা কমেডিয়ান চার্লি চ্যাপলিনের। পুরো নাম চার্লস স্পেনসর চ্যাপলিন। কারো কাছে তিনি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ কমেডিয়ান।
চোখ সামনের দিকে নিতে দেখা মিলল অন্যরকম দৃশ্য। পার্বতী, আলাদিন, মেলিফিসেন্ট, পিকে, গাঙ্গুবাই, শাকচুন্নি, মিরাবেল, চার্লি চ্যাপলিন, মুঞ্জেলিকা, জোকার, ভিনসেন্ট ভ্যানগগ, এপারসিয়েটের মত ক্যারেক্টার বাস্তবিকভাবে অলংকৃত করে সংগঠনটির কর্মীরা।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থিয়েটাররের আয়োজনে দ্বিতীয় বারের ন্যায় ‘ক্যারেক্টার ডে’ উদযাপন করা হয়েছে। শুক্রবার (৩ মে) গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা উপলক্ষে দুপুর ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত চলে এই আয়োজন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ডায়না চত্বরে সংগঠনটির কর্মীরা ভিন্ন ভিন্ন ক্যারেক্টারে নিজেদের উপস্থাপন করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিতে এসে এমনই সব বিরল ক্যারেক্টারের মানুষ দেখে ভর্তিচ্ছু এক পরীক্ষার্থী আনিকা তাবচ্ছুম বলেন, আমি পরীক্ষার হল থেকে বের হয়েই অবাক হয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের চার্লি চাপলিন এলো কখন? যে কি না আমার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। কোনো কথা না বলে যে মানুষকে বিনোদন দেওয়া যায় তার বড় উদাহরণ চার্লি চাপলিন ।
তিনি আরও বলেন, চরিত্র ধারণ করে তার মতো বাচনভঙ্গি করা যথেষ্ট মেধাবী এবং দক্ষ শিল্পী না হলে সম্ভব নয়। তাদের এই শৈল্পিক এবং সৃষ্টিশীল কাজ আমাকে খুবই মুগ্ধ করেছে।
জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় থিয়েটারের সদস্যের অভিনয় দক্ষতা বাড়ানোর উদ্দেশ্য এই উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছিল। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাংস্কৃতিক দিক দিয়ে আগ্রহী করে তুলতে দিনটি পালন করা হয়েছে বলেও জানান সংগঠনটির নেতৃবৃন্দ।
আলাদীন ক্যারেক্টারে অভিনীত থিয়েটারে সদস্য শেখ এ এম রুম্মান বলেন, ‘আমাদের সংগঠন সব সময় থিয়েটারের সদস্য ও নাট্যকর্মীদের নিয়ে সৃজনশীল কাজ করার চেষ্টা করে। মূলত গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার দিন প্রচুর দর্শনার্থী, পরীক্ষার্থী ও অভিভাবক ক্যাম্পাসে উপস্থিত থাকেন। অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের নিয়ে চিন্তিত থাকেন। আর পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষা নিয়ে চিন্তিত থাকে। তাই থিয়েটার তাদের ওই একঘেয়েমি কাটাতে ভিন্নধর্মী এই আয়োজন করে থাকে।’
সে তার অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন, ‘আমি আলাদিন ক্যারেক্টারটা নিজের মধ্যে ধারণ করার চেষ্টা করেছি। ‘ক্যারেক্টার ডে’তে সফলভাবে অংশ নিতে পেরে আমার অনেক ভালো লাগছে।’
সংগঠনটির সম্পাদক মাহির আল মুজাহিদ বলেন, ‘একটা মানুষ যে ভিন্ন ভিন্ন চরিত্র ধারণ করতে পারে সেটি ফুটিয়ে তোলা। মূল আকর্ষণ ছিল ভর্তি পরীক্ষা দিতে আসা পরীক্ষার্থীরা। তারা অত্যন্ত কৌতূহলী হয়ে পরিবেশনাটি উপভোগ করেছে সেটিই আমাদের সার্থকতা। দর্শকদের ইতিবাচক সাড়া পেয়েছি।’
উল্লেখ্য, বিশ্ববিদ্যালয় থিয়েটার প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই বিনোদন দিতে সব সময় কাজ করে যাচ্ছে।
এসআই/
মন্তব্য করুন