আনিসুর রহমান, ইবি: শিক্ষক সংকট, সেশন জট, শিক্ষকদের স্বেচ্ছাচারিতাসহ নানামুখী সমস্যায় জর্জরিত ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) সমাজ কল্যাণ বিভাগ। সোমবার (৬ মে) বেলা ১২টায় বিভাগের শিক্ষার্থীদের সাথে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. এ কে এম মতিনুর রহমানের মতবিনিময়কালে এসব অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যালেন্ডারে কোনো ছুটি না থাকলেও বিভাগটির শিক্ষার্থীদের ছুটি সব সময়। এমনও হচ্ছে যে পুরো একটা সেমিস্টারে একটি ক্লাসও হচ্ছে না। আবার কখনো যদি একটা ক্লাস নেয় তখন চার-পাঁচটা উপস্থিতি দেখানো হয়। কখনো রাত ১২টার পরে শিক্ষক অনলাইনে ক্লাস নিচ্ছে। এ সময় যদি কোনো শিক্ষার্থী ক্লাস করতে না চায় তবে পড়তে হয় শিক্ষকদের রোশনালে।
তারা আরো জানান, সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার পর ইনকোর্স পরীক্ষা নেয়া হয়। যথাযথ ইনকোর্স না নেওয়ার ফলে শিক্ষক তার মর্জি মাফিক নাম্বার দেন। পরীক্ষা শেষ হলে ফল প্রকাশ নিয়ে অনিশ্চিয়তা দেখা দেয়।
বিভাগটির ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা জানান, দীর্ঘ ৬ বছর পরেও স্নাতক শেষ করতে পারেননি তারা। সমস্যার কথা শিক্ষকদের জানালেও শিক্ষক সংকটকে দায়ী করছেন তারা। কিন্তু শিক্ষক নিয়োগের ব্যাপারেও নেই বিভাগের চেয়ারম্যানের বিন্দুমাত্র আগ্রহ। এছাড়াও পরীক্ষা নাকের ডগায় না আসা পর্যন্ত দেওয়া হয় না পরীক্ষার সময়সূচি। আবার পরীক্ষার পূর্ব রাত্রে পরীক্ষা বাতিল করার নজিরও আছে। শ্রেণি কক্ষে নেই কোনো সাউন্ড সিস্টেম যার ফলে পিছনে বসা শিক্ষার্থীরা পড়েন ভোগান্তিতে।
এ বিষয়ে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. এ কে এম মতিনুর রহমান বলেন, প্রত্যেক বিভাগের সংকট নিরসনের লক্ষ্যে শিক্ষক শিক্ষার্থীদের সাথে মতবিনিময়ের পরিকল্পনা করেছি। এর ধারাবাহিকতায় আজ সোমবার সমাজকল্যাণ বিভাগের শিক্ষার্থীদের সাথে মতবিনিময়ে বসেছি। সেখানে তারা একাধিক গুরুতর অভিযোগ করেছেন। যা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমি এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের সাথে আলোচনা করে নিরসনের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো।
বিভাগের চেয়ারম্যান সহকারী অধ্যাপক শ্যাম সুন্দর সরকার বলেন, সব বিভাগেই এধরনের শিক্ষার্থী থাকেন। যার শৃঙ্খলার মধ্যে থাকা ভালো লাগে না। কেউ খারাপ বলছে আবার কেউ ভালো বলবে এটা থাকবেই। আমার বিভাগে চরম শিক্ষক সংকট। মাত্র দু’জন শিক্ষক নিয়ে একটা বিভাগ চলছে। তবে আমরা আমাদের মধ্যে যথেষ্ট আন্তরিকভাবে চেষ্টা চালাচ্ছি। আমরা মাঝে অনলাইনে চার-পাঁচটা ক্লাস নিয়েছি। তারা না জেনে বলছে একটাও ক্লাস হয়নি।
এসআই/
মন্তব্য করুন