শাবিপ্রবি প্রতিনিধি:
আবাসিক ছাত্রীর সাথে হল প্রভোস্টের ‘খারাপ আচরণ’ ও আবাসিক হল ত্যাগ করতে বলায় ঘুমের ঔষধ খেয়ে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে হলটির প্রভোস্টের বিরুদ্ধে।
সোমবার (৩জুন) রাত ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
আত্মহত্যার চেষ্টা করা ছাত্রীর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী। এছাড়া তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের ১০৭ নম্বর কক্ষের আবাসিক ছাত্রী।
হল সূত্র ও ছাত্রীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ১০৭ নম্বর কক্ষে অবস্থানরত ছাত্রীদেরকে বের করে দিয়ে ওই কক্ষকে গণরুম বানাতে চেয়েছেন হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. চন্দ্রানী নাগ। এর প্রতিবাদ করেন ভুক্তভোগী ছাত্রী। ফলে হলের অফিস কক্ষে ওই ছাত্রীকে ডেকে নিয়ে শাসিয়েছেন হল প্রভোস্ট। এসময় তিনি ওই ছাত্রীর সাথে রুক্ষ আচরণ করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়া রুমকে গণরুমে পরিণত করতে দ্রুতই হল ছাড়তে নির্দেশনা দেন প্রভোস্ট। যার ফলে উপায় না পেয়ে ঘুমের ঔষধ খেয়ে নিজ কক্ষে আত্মহত্যার চেষ্ট চালায় ওই ছাত্রী। এরপর রাত ৯টার দিকে খবর পেয়ে ওই কক্ষের দরজা ভেঙ্গে ছাত্রীকে উদ্ধার করে প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা। পরে তাকে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ভুক্তভোগীর সহপাঠী ও রুমমেট সানজিদা নওরিন সূবর্ণা বলেন, রবিবার (২ জুন) ও আমার সাথে ফোনে কথা বলে জানায় হল প্রভোস্ট আমাদেরকে রুম ছাড়তে বলছেন। আমাদের রুম নাকি গণরুম বানাবেন। আজও নাকি হল সুপারের মাধ্যমে রুম ছাড়তে বলা হয়। পরবর্তীতে হল প্রভোস্ট ম্যামের সাথে ওর কি একটা বিষয় নিয়ে ঝামেলা হয়েছে শুনেছি। প্রভোস্ট ম্যাম আমাদের বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও ছাত্র উপদেষ্টার কাছে তার নামে নালিশ দিয়েছেন। এখন শুনি সে নাকি ঘুমের বড়ি খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে। এখন সে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছে বলে জেনেছি।
এ বিষয়ে সমাজকর্ম বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক মিজানুর রহমান বলেন, আজ (৩ জুন) বিকালের দিকে বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের প্রভোস্ট ড. চন্দ্রানী নাগ আমাকে কল দিয়ে তার বিষয়ে কথা বলেন। সে নাকি প্রশাসনের সাথে উচ্চস্বরে কথা বলেছে। কি বিষয়ে উচ্চস্বরে কথা বলেছে তা জানি না। এ বিষয়ে ছাত্র উপদেষ্টাকে নিয়ে আলোচনা করবো বলে প্রভোস্টকে জানিয়েছিলাম।
তিনি আরো বলেন, মেয়েটি হাসপাতালে ভর্তি আছে। আমি এখন মেয়েটিকে দেখতে হাসপাতালে এসেছি।
এ বিভাগের ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. তাহমিনা ইসলাম বলেন, মেয়েটির বন্ধুরা আমাকে জানিয়েছে সে নাকি আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে। খবর পেয়ে আমি সাথে সাথে বিভাগীয় প্রধান, হল প্রভোস্ট ও প্রক্টরকে বিষয়টি জানিয়েছি। পরবর্তীতে রুমের দরজা ভেঙে তাকে ওসমানীতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে আমাকে জানানো হয়েছে।
ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত জানতে হল প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. চন্দ্রানী নাগ ও প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. কামরুজ্জামান চৌধুরীকে একাধিকবার কল দিলে তারা কল রিসিভ করেননি।
আরএন/
মন্তব্য করুন