spot_img

শিক্ষার্থী প্রতিনিধি ছাড়াই আজ বসছে জাবির সিনেট অধিবেশন

এসম্পর্কিত আরো পড়ুন

রাজিব রায়হান, জাবি: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) গত তিন দশকের বেশি সময় ধরে নির্বাচন বন্ধ থাকায় ছাত্র প্রতিনিধি ছাড়াই আজ বসতে যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪১তম বার্ষিক সিনেট অধিবেশন।

শনিবার (২৯ জুন) বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট হলে বিকাল ৪টায় উপাচার্য অধ্যাপক মো. নূরুল আলমের সভাপতিত্বে ৪১তম বার্ষিক সিনেট অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে।

- বিজ্ঞাপন -

বিশ্ববিদ্যালয় কম্পট্রোলার অফিস থেকে জানা যায়, জাবির ৪১তম বার্ষিক সিনেট অধিবেশনে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রস্তাবিত বাজেটের পরিমাণ ৩১৮ কোটি ৪৪ লাখ টাকা এবং ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সংশোধিত বাজেট ৩১৮ কোটি ৭৩ লাখ টাকা।

তবে ছাত্র প্রতিনিধি ছাড়া এই সিনেট অধিবেশনকে ‘অপূর্ণাঙ্গ’ আখ্যা দিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

ছাত্রনেতারা জানান, ১৯৭৩ সালে জাতীয় সংসদে পাশ হওয়া বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশ- ১৯৭৩ অনুযায়ী জাবির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী পর্ষদ সিনেট। সেই সিনেটে অন্যান্য প্রতিনিধির সঙ্গে অধ্যাদেশের ১৯(১) এর (ক) ও ১৯ (২) ধারা মেনে জাকসু নির্বাচনের ব্যবস্থা করা এবং উপাচার্য প্যানেল নির্বাচনে সিনেটে ৫ জন ছাত্র প্রতিনিধির বিষয়টি  দুইযুগেরও বেশি সময় ধরে নিশ্চিত করা হয়নি। এই দীর্ঘ সময় ছাত্র-প্রতিনিধিদের মনোনীত সদস্য ছাড়াই সিনেটের অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রমে শিক্ষার্থীদের চাওয়া-পাওয়ার প্রতিফলন ঘটেনি।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আখতারুজ্জামান সোহেল বলেন, সিনেটে শিক্ষার্থী প্রতিনিধি না থাকায় শিক্ষার্থীরা একদিকে যেমন বঞ্চিত হচ্ছে অন্যদিকে তাদের দাবি-দাওয়াগুলো ভালোভাবে উপস্থাপিত হচ্ছে না। বাজেটকে শিক্ষার্থী কল্যাণে কাজে লাগাতে হলে অবশ্যই শিক্ষার্থী প্রতিনিধি থাকা দরকার। শিক্ষার্থী প্রতিনিধি ছাড়া সিনেট অধিবেশন কোনোভাবেই কাম্য নয়। প্রশাসনের কাছে দ্রুত সময়ের মধ্যে জাকসু নির্বাচন দেওয়ার জন্য দাবি জানাচ্ছি, যাতে করে শিক্ষার্থীরা এভাবে দিনের পর দিন বঞ্চিত না হয়।

ছাত্র ইউনিয়নের জাবি সংসদের একাংশের সভাপতি আলিফ মাহমুদ বলেন, ছাত্র প্রতিনিধি ছাড়া সিনেটে হওয়া বাজেট প্রণয়ন কখনোই শিক্ষার্থীবান্ধব হতে পারেনা। জবাবদিহিতামূলক ক্যাম্পাস নিশ্চিত করার জন্য নির্বাচিত ছাত্র নেতৃত্ব আবশ্যক। তিন দশক অতিক্রান্ত হয়ে গেলেও জাকসু নির্বাচন না হওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের হতাশ করছে। পক্ষান্তরে শিক্ষক সমিতির নির্বাচন, কর্মচারীদের নির্বাচন, কর্মকর্তাদের নির্বাচন দিব্যি চলছে বছরের পর বছর। অথচ যেই শিক্ষার্থীদের জন্য এই বিশ্ববিদ্যালয় তাদের কথা বলার জন্য কোনো প্রতিনিধি নির্বাচনের ব্যাপারে প্রশাসন নির্বিকার। বরং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে ছাত্রদের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার কথা বলা হলে বিভিন্ন অজুহাতে প্রশাসন তা খারিজ করতে তৎপর।

শাখা ছাত্র ইউনিয়নবের আরেক অংশের সভাপতি অমর্ত্য রায় বলেন, বিরানব্বইয়ের পর থেকে জাকসু নেই অর্থাৎ শিক্ষার্থী প্রতিনিধি ছাড়া প্রতিবছরই এরূপ সিনেট বসছে। শিক্ষার্থী প্রতিনিধি না থাকার কারণে শিক্ষার্থীদের অংশীদারিত্ব বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো প্রকার সিদ্ধান্তে দেখা যাচ্ছেনা। সেইসাথে ছাত্র সংসদ নির্বাচন হলে রাজনৈতিক দলগুলোর জন্যও এক প্রকার সংকট। নব্বইয়ের স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন থেকে শিক্ষা নিয়েছে আওয়ামীলীগ, বিএনপিসহ প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দল। তাই কোনো রাজনৈতিক দলকেই ক্ষমতায় এলে ছাত্র সংসদ নির্বাচন দিতে খুব একটা আগ্রহী হতে দেখা যায় না। আমরা চাইবো জাকসু হোক, বিশ্ববিদ্যালয়ে সিদ্ধান্তগত জায়গায় শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ বাড়ুক।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের চুক্তিভিত্তিক রেজিস্ট্রার মো. আবু হাসান বলেন, জাকসু না থাকায় ছাত্র প্রতিনিধি ছাড়াই সিনেটে বসতে হচ্ছে।  তবে যেহেতু জাকসু নির্বাচন উপাচার্যের কমিটমেন্টে আছে সেহেতু নির্বাচন হবে এবং আশা করি পরবর্তী সিনেটগুলোতে ছাত্র প্রতিনিধি থাকবে।

এসআই/

spot_img
spot_img

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- বিজ্ঞাপন -spot_img

সর্বশেষ প্রকাশিত

spot_img