spot_img

সিদ্ধান্ত নিলেও বাস্তবায়নে ব্যর্থ জাবি উপাচার্য নূরুল আলম, সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন

এসম্পর্কিত আরো পড়ুন

রাজিব রায়হান, জাবি: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) উপাচার্য অধ্যাপক মো. নূরুল আলম বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচন আয়োজনসহ বিভিন্ন সময়ে নানা প্রতিশ্রুতি দিলেও তা বাস্তবায়ন করতে ব্যর্থ হয়েছেন। ফলে উপাচার্যের সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত বছরের ২৬ মে জাহাঙ্গীরনগর ইউনিভার্সিটি ডিবেটিং সোসাইটির (জেইউডিএস) অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. নূরুল আলম জাতীয় নির্বাচনের পর জাকসু নির্বাচনের আয়োজন করা হবে বলে জানিয়েছিলেন। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪০তম বার্ষিক সিনেটেও সিনেটরদের দাবির প্রেক্ষিতে দ্রুত সময়ের মধ্যে জাকসু নির্বাচন আয়োজনের আশ্বাস দেন তিনি। আশ্বাসের পর গতকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪২তম বার্ষিক সিনেট অধিবেশনও অনুষ্ঠিত হয়ে গেছে। তবুও জাকসু নির্বাচন আয়োজনের দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

- বিজ্ঞাপন -

এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল থেকে অছাত্রদের বের করে গণরুম বিলুপ্তির প্রতিশ্রুতি দিয়ে পরপর তিনটি সিন্ডিকেট সভায় সিদ্ধান্ত নিয়েও বাস্তবায়ন করতে ব্যর্থ হন উপাচার্য। একপর্যায়ে সিন্ডিকেটে সিদ্ধান্ত নিলেন অছাত্ররা হল থেকে বের না হলে, তাদের সনদ বাতিল করা হবে এবং রাষ্ট্রীয় আইনে মামলা দেওয়া হবে। সেটাও বাস্তবায়ন করতে পারেননি তিনি।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে মাদকের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বললেও এখনও বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন জায়গায় দিনে-রাতে অবাধে মাদক সেবন চলছে। এর মধ্যে কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ, আল-বেরুনী হল সংলগ্ন মাঠ, সুইমিংপুল সংলগ্ন এলাকা, পরিবহন চত্বর, মুক্তমঞ্চ ও আবাসিক হলের নিজ কক্ষে মাদকের আসর বসে নিয়মিতই। তবুও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নেই কোনো কার্যকর পদক্ষেপ। ফলে উপাচার্যের দেওয়া বিভিন্ন সময়ের বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে দাবি করেছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

এ বিষয়ে ক্ষোভ জানিয়ে ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের একাংশের সভাপতি আলিফ মাহমুদ বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান হয়েও উপাচার্য তার গৃহীত সিদ্ধান্তে দ্বিচারিতা করেছেন। দ্রুত হল খোলা হবে বলে প্রায় ৬ মাস তিনি শিক্ষার্থীদের অনলাইনে ক্লাস করিয়েছেন। হলগুলো সঠিক সময়ে চালু করতে না পারায় বিরাট এক সেশন জটের মুখোমুখি হয়েছেন শিক্ষার্থীরা। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন নির্বাচনের পর জাকসু হবে। তার বাস্তবায়ন তো দূরে থাক, ন্যূনতম কোনো পদক্ষেপ আমরা নিতে দেখিনি। কিছুদিন আগে ঘটে যাওয়া ধর্ষণের ঘটনায় বহিরাগত বের করবেন মর্মে তিনবার সিন্ডিকেটে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কিন্তু মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা তার কথার তোয়াক্কা না করে বীরদর্পে হলে থেকেই যাচ্ছে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সোহেল আহমেদ বলেন, ‘আমাদের আবাসিক হলে শিক্ষার্থীরা যেভাবে মানবেতর জীবনযাপন করছে, তা কোনো ভাবেই কাম্য নয়। ফলে তাদের প্রথম দুই বছর অনেক কষ্ট সহ্য করতে হয়, পড়াশোনার ক্ষতি সাধিত হয়। তিনবার সিন্ডিকেটে অছাত্রদের বের করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েও বাস্তবায়ন করতে পারেনি। উপাচার্য তার প্রতিশ্রুতি রক্ষায় অনেক ক্ষেত্রেই নজিরবিহীন ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন। উনি নিজেই সিন্ডিকেটের সভাপতিত্বে থাকা অবস্থায় গৃহীত সিদ্ধান্তই বাস্তবায়ন করতে ব্যর্থ হয়েছেন। গতকাল সিনেট অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এটি অপূর্ণাঙ্গ ছাড়া আর কিছু নয়। এখানে নেই কোনো শিক্ষার্থী প্রতিনিধি। তাদের ছাড়া কিভাবে সিনেট পরিচালিত হয়? মেয়াদোত্তীর্ণ সিনেটরদের নিয়ে বসেছে ৪১তম সিনেট অধিবেশন।’

এ বিষয়ে সিনেট সদস্য অধ্যাপক মো. মোতাহার হোসেন বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিলেও, নেয়নি কোনো কার্যকর পদক্ষেপ। অছাত্রদের বের করার জন্য তিনবার সিদ্ধান্ত নিয়েও বাস্তবায়ন করতে ব্যর্থ হয়েছে তারা। মাদকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে চেয়েও নেয়নি কোনো কার্যকর ব্যবস্থা। জাকসু নিয়েও ছিল তাদের নানা প্রতিশ্রুতি। এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের কাছে কোনো ভাবেই কাম্য নয়।’

এসআই/

spot_img
spot_img

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- বিজ্ঞাপন -spot_img

সর্বশেষ প্রকাশিত

spot_img