কুবি প্রতিনিধি:
সকল চাকরির সকল গ্রেডে ও সকল প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় বৈষম্যমূলক কোটা নিরসনের দাবিতে প্রায় ৬ ঘন্টা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কোটবাড়ী অংশ অবরোধ করে রেখেছিল কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ফলে দীর্ঘ যানজট দেখা দেয় মহাসড়কটিতে। এর আগে শিক্ষার্থীদের সাথে সংঘর্ষে জড়ায় পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) বিকাল ৩ টায় বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন আনসার ক্যাম্পের সামনে শিক্ষার্থীদের উপর লাঠি চার্জ করে পুলিশ। এর জবাবে শিক্ষার্থীরাও ইট-পাথর নিক্ষেপ করেন। পরবর্তীতে পুলিশ কাঁদুনে গ্যাস, টিয়ারশেল, ফাঁকা গুলি ছুড়েন। ফলে তিন সাংবাদিক সহ অন্তত ২০ জন শিক্ষকের আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
পরবর্তী সময়ে শিক্ষার্থীরা এক যোগে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দিকে রাস্তা অবরোধ করেন বিকাল ৪ টা বেজে ৪৫ মিনিটে। কুমিল্লা জেলা প্রশাসনের সাথে আলোচনা শেষে এই অবরোধ ছাড়ে রাত ১০ টা বেজে ৪৭ মিনিটে।
কুমিল্লা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সৈয়দ শামসুল তাবরীজ। এছাড়া আরো উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ( ক্রাইম এন্ড অপস) খন্দকার আশফাকুজ্জান,অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ( ট্রাফিক) নাজমুল হাসান, অতিরিক্ত পুলিশ ( সদর সার্কেল) কামরান হোসেন।
তাদের সাথে আলোচনায় শিক্ষার্থীরা তিনটি দাবি তুলেন। দাবিগুলো হলো- এই হামলার সাথে পুলিশের পক্ষ থেকে যারা জড়িত ছিল তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে,যারা আহত হয়েছে বা যদি কারো অঙ্গহানীর মত ঘটনা ঘটে তাহলে তার দায়ভার প্রশাসনকে নিতে হবে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আগামী কর্মসূচিগুলোতে আন্দোলনকারীদের সহায়তা করতে হবে।
এই দাবির প্রেক্ষিতে কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সৈয়দ শামসুল তাবরীজ হামলার ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন এবং জড়িতদের তদন্ত করে শাস্তি দেয়ার জন্য ৪৮ ঘন্টা সময় চান।
এছাড়া আগামীকাল (১২ জুলাই) শিক্ষার্থীদের উপর হামলার প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গনে বিকাল ৪ টায় বিক্ষোভ মিছিল করে হবে। তবে অবরোধের বিষয় পরিস্থিতি বুঝে সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা জানান আন্দোলনকারীরা।
আন্দোলনকারীদের মধ্যে অন্যতম বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ সাকিব হোসাইন বলেন, ‘আমাদের আগামীকাল মহাসড়ক অবরোধের কোনো কর্মসূচি এখনো গ্রহণ করা হয় নি। তবে আমরা শিক্ষার্থীদের উপর যে হামলা পুলিশ-প্রশাসন থেকে করা হয়েছে তার প্রতিবাদে আমরা আগামীকাল বিকাল ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ মিছিল করবো।’
এই বিষয়ে ঘটনাস্থলে কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সৈয়দ শামসুল তাবরীজ বলেন, ‘আমরা শিক্ষার্থীদের উপর যে হামলা হয়েছে তাতে দুঃখ প্রকাশ করছি। আমি কথা দিচ্ছি এর সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’
এর আগে গত ৪,৭,৮ ও ১০ জুলাই ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়ক যথাক্রমে তিন ঘন্টা ও চার ঘণ্টা, পাঁচ ঘণ্টা অবরোধ করে রাখে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
ইএইচ/
মন্তব্য করুন