spot_img

কোটা আন্দোলন: শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে শাবিপ্রবির ইউট্যাবের বিবৃতি

এসম্পর্কিত আরো পড়ুন

শাবিপ্রবি প্রতিনিধি: সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে বিবৃতি দিয়েছে ইউনিভার্সিটি টিচার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইউট্যাব) শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি) শাখার নেতৃবৃন্দ।

বুধবার (১৭ জুলাই) দুপুরে ইউট্যাব শাবিপ্রবির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো: সাজেদুল করিম এবং সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো: খায়রুল ইসলাম স্বাক্ষরিত যৌথ বিবৃতিতে এ প্রতিবাদ ও নিন্দা জানান।

- বিজ্ঞাপন -

বিবৃতিতে শিক্ষকবৃন্দ বলেন, দেশে সংঘটিত অনাকাঙ্খিত ন্যাক্কারজনক ও বর্বরোচিত হামলায় শিক্ষার্থীদের হতাহত ও হত্যার পরিস্থিতিতে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকগণ আমাদের নৈতিক অবস্থান থেকে কী করতে পারি বা আমাদের কী করা উচিৎ সে বিষয়ে আলোচনার জন্য একটি সভা হয়।

সভায় শিক্ষকবৃন্দ সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করে একমত পোষণ করেন যে, সারাদেশের শিক্ষার্থীরা অত্যন্ত পরিশিলিত, শান্তিপূর্ণ এবং অহিংস পন্থায় কোটা সংস্কারের আন্দোলন চালিয়ে আসছিল। কয়েক দিনের মধ্যেই শিক্ষার্থীদের স্বত:স্ফূর্ত অংশ গ্রহণে সে আন্দোলন দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে, চাকরিতে বৈষম্যমূলক কোটা মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থি মেনেই সকল শিক্ষার্থী একত্রিত হতে থাকে এবং সেই প্রেক্ষিতে অচিরেই তাদের যৌক্তিক দাবি মেনে নেয়া হবে বলে তারা আশাবাদী হয়।

কিন্তু গত ১৪ জুলাই সরকার প্রধানের বক্তৃতায় শিক্ষার্থীরা সম্পূর্ণরুপে আশাহত ও তাচ্ছিলের শিকার হয় এবং তাদেরকে সর্বজন পরিত্যাজ্য শব্দে আখ্যায়িত করায় ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। শিক্ষার্থীরা তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় সেই সর্বজন পরিত্যাজ্য শব্দ ব্যবহার করে স্লোগান দেয়ায় তাদের উপর হামলা করার জন্য ওৎপেতে থাকা সন্ত্রাসীচক্র একটি উছিলা পেয়ে যায়।

সন্ত্রাসী চক্রটি নৃশংসভাবে আক্রমণ করার জন্য পরিকল্পনামাফিক প্রস্তুতি গ্রহন করে। সে মোতাবেক প্রথমে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের উপর হালকা আক্রমন হয় এবং পরের দিন (১৫ জুলাই) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রকাশ্য দিবালোকে ও রাত্রীতে পৈশাচিক হামলা চালানো হয়।

এতে বলা হয়, এই নৃশংস বর্বরোচিত হামলায় নারী শিক্ষার্থীসহ অসংখ্য শিক্ষার্থী মারাত্মক আহত, জখম ও রক্তাক্তবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গেলে সেখানেও তাঁদেরকে আক্রমন করার প্রচেষ্টা চলে। পরেরদিন (১৬ জুলাই) পূর্ব ঘোষনা অনুযায়ী বিক্ষোভ সমাবেশে সারা দেশেই বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী অংশগ্রহন করে। সন্ত্রাসীচক্র ও তাদের দোসররা যৌথভাবে আবারও শিক্ষার্থীদের উপর নৃশংশ হামলা চালায়, অসংখ্য শিক্ষার্থী হতাহত ও ৬ জন নিহত হয়। হামলা এবং প্রতিরোধ দেশের সর্বত্র ব্যপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে, চলতে থাকে শিক্ষার্থী নির্যাতন, বন্ধ ঘোষণা করা হয় সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, দেশে এক ভয়ংকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় যা কোনো মহলের কাছেই কাম্য হতে পারে না।

শিক্ষক নেতৃবৃন্দরা এই নৃশংস বর্বরোচিত হামলার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানান এবং শিক্ষার্থীদের হতাহত ও নিহত হওয়ায় গভীর উদ্বেগ ও শোক জ্ঞাপন করেন। শিক্ষার্থীদের উপর এ ধরণের জঘন্য হামলা যেন আর না হয় সে জন্য সংশ্লিষ্ট সকল মহল যথাযথ দায়িত্ব পালন করবেন মর্মে তাঁরা প্রত্যাশা করেন।

শিক্ষকবৃন্দ যে কোন ধরণের সংঘাতময় সামাজিক পরিস্থিতি দেশের বিপর্যস্ত অর্থনৈতিক অবস্থার আরও অপূরণীয় ক্ষতি করবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন। তাঁরা সুষ্ঠু বিচার বিভাগীয় তদন্ত সাপেক্ষে হামলাকারী সন্ত্রাসীদের দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করার আহবান জানান। তাঁরা মনে করেন, শিক্ষার্থীরা কোটা সংস্কারের দাবীটি অত্যন্ত ন্যায় সঙ্গত ও যৌক্তিক ধরে নিয়েই আন্দোলন করছে, এর পিছনে কোন মহলের ইন্ধন আছে বলে মতলবী অভিযোগ একেবারই ভিত্তিহীন এবং অমূলক। সর্বোতভাবেই যাতে আন্দোলন শান্তিপূর্ণ ও অহিংস থাকে, শিক্ষার্থীদের সার্বিক নিরাপত্তা ও দ্রুত সৃষ্ট সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য তাঁরা সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি উদাত্ত আহ্বান ও দাবি জানান।

এসআই/

spot_img
spot_img

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- বিজ্ঞাপন -spot_img

সর্বশেষ প্রকাশিত

spot_img