রাজশাহীর চারঘাট উপজেলায় স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি নির্বাচন নিয়ে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে সাতজন আহত হয়েছেন। সোমবার (২৭ জানুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে চারঘাট উপজেলার সরদহ ইউনিয়নের পাটিয়াকান্দি উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন, পাটিয়াকান্দি গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম (৩৬), শিমুলিয়া গ্রামের শাহজাহান আলী (৫২), তার ছেলে সেলিম হোসেন (৩২), নজমুল আলী (৩১), পলাশ আলী (৩৫), শাহু সর্দার (৪৫) এবং কাজিম উদ্দিন মোল্লা (৫৫)। তাদের চারঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নির্বাচনে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাইদ চাঁদ ও জেলা যুবদলের সাবেক আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন উজ্জ্বল গ্রুপের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছিল। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হলে প্রধান শিক্ষক এ কে এম জাকারিয়ার বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ ওঠে এবং আবু সাইদ চাঁদের গ্রুপ নির্বাচনে অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকে। তারা প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পর্কের অভিযোগ তুলে তাকে বিদ্যালয়ে অবাঞ্চিত ঘোষণা করে বিদ্যালয়ে তালা লাগিয়ে দেয়। এরপর থেকে প্রধান শিক্ষক গত ১০ দিন ছুটি নিয়ে বিদ্যালয়ে যাননি।
এ পরিস্থিতিতে ছুটি শেষে প্রধান শিক্ষক জাকারিয়া সোমবার সকালে পাশের গ্রাম থেকে কিছু লোকজন নিয়ে বিদ্যালয়ে পৌঁছালে, অপর গ্রুপের লোকজন প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বহিরাগতদের নিয়ে আসার অভিযোগ তোলেন। এই নিয়ে বাকবিতণ্ডা শুরু হলে তা দ্রুত সংঘর্ষে পরিণত হয়। সংঘর্ষে সাতজন আহত হন। এ সময় সরদহ ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য সাহাবুল ইসলামের বাড়িতে হামলা চালিয়ে একটি মোটরসাইকেলও ভাঙচুর করা হয়।
সংঘর্ষে আহত সরদহ ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “আওয়ামী লীগের মদদপুষ্ট প্রধান শিক্ষক ৩০-৪০ জন বহিরাগত ক্যাডার নিয়ে দেশীয় অস্ত্রসহ বিদ্যালয়ে প্রবেশের চেষ্টা করেন। এ সময় স্থানীয়রা বাঁধা দিলে তারা অতর্কিত হামলা চালায়, এতে আমাদের কয়েকজন গুরুতর আহত হন।”
এ বিষয়ে পাটিয়াকান্দি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এ কে এম জাকারিয়া বলেন, ‘নিয়ম অনুযায়ী ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন তফসিল ঘোষণা করা হয়েছিল। তবে একটি পক্ষ নির্বাচনে অংশ না নিয়ে আমার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে বিদ্যালয়ে যেতে বাধা দেয়। আমি বহিরাগতদের নিয়ে আসিনি, শুধু আত্মীয়-স্বজন কিছু মানুষকে নিয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু তারা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়েছে আমাদের ওপর।’
চারঘাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আফজাল হোসেন বলেন, ‘খবর পেয়ে ইউএনও, এসিল্যান্ডসহ আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। প্রাথমিকভাবে উত্তেজনা থাকলেও পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে উপস্থিত হওয়ার পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে। কেউ অভিযোগ করলে তা তদন্ত করে দেখা হবে।’
এসআই/