spot_img

বন্যা ৮০ লাখ মানুষ ক্ষতির মুখে, মৃত্যু ১৮ জনের

এসম্পর্কিত আরো পড়ুন

ডয়েচে ভেলে বাংলা: বৃষ্টি কমে আসায় নদ-নদীর পানিও কমতে শুরু করেছে। ফলে আগামী কয়েক দিনে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি আশা করছে আবহাওয়া বিভাগ ও বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।

তবে স্মরণকালের নজিরবিহীন বন্যায় দেশের ১১ জেলার ৫০ লাখ মানুষ পানি বন্দি ও ক্ষতির মুখে পড়েছেন বলছে সরকারের তথ্য। মারা গেছেন ১৮ জন।

- বিজ্ঞাপন -

আর ব্র্যাকের হিসাব বলছে এই বন্যায় এখন পর্যন্ত ৮০ লাখ মানুষ ক্ষতির মুখে পড়েছেন। ৪৫ লাখ মানুষ নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন।

এদিকে পানি বেড়ে যাওয়ায় কাপ্তাই লেকের ১৬টি গেট রাতে খুলে দেয়া হবে। তাতে চট্টগ্রামের কিছু এলাকা নতুন করে প্লাবিত হতে পারে। খুলনায় বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় সেখানেও কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। আর পানি নেমে যাওয়ার সময় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হবে।

তাদের উদ্ধারকাজ, ত্রাণ ও চিকিৎসার জন্য প্রশাসন ছাড়াও সেনা ও নৌ বাহিনী কাজ করছে। আর বন্যা দুর্গত মানুষের পাশে দাড়াচ্ছেন শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন পেশা ও শ্রেণির মানুষ। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস তরুণ সমাজকে বন্যা দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহবান জানিয়েছেন।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপণা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে দেশের ১১ টি জেলা এখন বন্যা প্লাবিত। জেলাগুলো হচ্ছে কুমিল্লা, ফেনী, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, লক্ষ্মীপুর কক্সবাজার, সিলেট মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ। তাদের হিসবে বন্যায় ওইসব জেলায় ১৮ জন নিহত হয়েছেন। ওই জেলাগুলোতে প্রায় ১০ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা প্রায় ৫০ লাখ। জেলাগুলোর ৭৭টি উপজেলা ও ৫৮৭টি ইউনিয়ন পানির নিচে চলে গেছে।

বন্যা এলাকায় তিন হাজার ৫২৭টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। ওইসব আশ্রয় কেন্দ্রে প্রায় তিন লাখ মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। ২২ হাজার গবাদি পশুকে আশ্রয় দেয়া হয়েছে। আর ৭৭০টি মেডিকেল টিম কাজ করছে। এরইমধ্যে ওইসব এলাকায় সাড়ে তিন কোটি টাকার নগদ অর্থ সহায়তাসহ খাদ্য এবং অন্যান্য ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সজল কুমার রায় জানান, “দেশের ৯টি নদ-নদীর পানি এখনো বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বাকি নদীগুলোর পানি এখন বিপৎসীমার নিচে আছে। আজকে(শনিবার) দেশের অভ্যন্তরে এবং উজানে ভারি বৃষ্টি হয়নি। ফলে নদ নদীর পানি কমছে। আমরা দেখতে পাচ্ছি আগামী ১৮ ঘণ্টায় বৃষ্টি আরো কমবে। তাতে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি আশা করছি।”

আর আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ কাজী জেবুন্নেসা জানান, “খুলনা, বরিশাল ও নোয়খালী ছাড়া দেশের অন্য এলাকায় বৃষ্টি কমে গেছে। এটা আরো কমবে। আগামী ২৬ আগস্ট পর্যন্ত অল্প কিছু বৃষ্টি হবে। এরপর আর বৃষ্টি থাকবেনা। বন্যার পানি কমতে শুরু করেছে। এই কমার ধারা অব্যাহত থাকবে।”

এবার বন্যায় অতীতের চেয়ে ক্ষয়ক্ষতি অনেক বেশি হয়েছে। বাড়ি ঘর, ফসলের ক্ষেত ভেসে গেছে। ভেসে গেছে গবাদি পশু। ব্র্যাকের হিসাবে এই বন্যায় ৮০ লাখ মানুষ ক্ষতির মুখে পড়েছেন। ৪৫ লাখ মানুষ নি:স্ব হয়ে পড়েছেন।

তারপরেও প্রকৃত ক্ষতি এখনই নিরূপণ সম্ভব নয় বলে জানান ব্র্যাকের ডিজাস্টার হিট ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ক্লাইমেট প্রোগ্রামের পরিচালক  মো. লিয়াকত আলী। তিনি বলেন, বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতি হিসাব করা যাবে। তবে ধারণা করা যায় বিপুল ক্ষয়ক্ষতি হবে।

তিনি জানান,” জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এবার স্বাভাবিকের চেয়ে দেশের অভ্যন্তরে অনেক বেশি বৃষ্টি হয়েছে। আর ফেনী নদীর উজানে হলো ত্রিপুরা। সেখানেও স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি বৃষ্টি হয়েছে। সেখানেও বন্যা হচ্ছে। এই দুই মিলিয়ে এবার বন্যা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। তবে আমাদের কাছে এর আগাম পূর্বাভাস ছিলো।”

তিনি জানান,” কাপ্তাই লেকের ১৬টি গেট রাত ১০টায় খুলে দেয়া হবে। কারণ সেখানে পানির লেভেল বেড়ে গেছে। এর ফলে চট্টগ্রামের নিম্নাঞ্চলে কিছুটা বন্যা হবে। তবে এখন বাংলাদেশে এবং ত্রিপুরায় বৃষ্টি কমে গেছে। পানি নামতে শুরু করেছে। দ্রুতই পানি নামবে।”

এসআই/

spot_img
spot_img

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- বিজ্ঞাপন -spot_img

সর্বশেষ প্রকাশিত

spot_img