নিউজ ডেস্ক:
নির্বাচন কমিশনের ডেটা সেন্টারে সংরক্ষিত ১১ কোটির বেশি বাংলাদেশি নাগরিকের ব্যক্তিগত তথ্য চুরির ঘটনায় ২০ হাজার কোটি টাকার লেনদেনের প্রাথমিক তথ্য পেয়েছে পুলিশ। তথ্য চুরির এ ঘটনায় ডেটা সেন্টারের সাবেক পরিচালক তারেক এম বরকতউল্লাহকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বুধবার সকালে রাজধানীর কাফরুলের উত্তর কাজীপাড়া থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান।
তালেবুর রহমান জানান, ২০২২ সালের ৪ অক্টোবর এনআইডি যাচাই সেবা গ্রহণ বিষয়ে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন ও আইসিটি মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি হয়। চুক্তি অনুসারে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল নির্বাচন কমিশনের তথ্য উপাত্ত কোন অবস্থাতেই কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে বিনিময় বা বিক্রি করতে পরবে না। উক্ত চুক্তি অনুসারে ১১ কোটিরও বেশি নাগরিকের ব্যক্তিগত তথ্যের মিরর কপি তৈরি করে ২০১৯ সালের এপ্রিলে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলকে প্রদান করা হয়।
তিনি আরো জানান, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল নাগরিকের ব্যক্তিগত তথ্যের মিরর কপিটি ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে ডিজিকন গ্লোবাল সার্ভিস লিমিটেড নামক একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে বানিজ্যিক উদ্দেশ্যে ব্যবহারের জন্য প্রদান করে।
ডিজিকন গ্লোবাল সার্ভিস লিমিটেড প্রতিষ্ঠানটি নাগরিকদের ব্যক্তিগত এই তথ্যসমূহ porichoy.gov.bd/ নামক ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ১৮০ টিরও বেশি দেশি-বিদেশি, সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর থেকে এখন পর্যন্ত অর্থের বিনিময়ে বিক্রি করে আসছে।
উপ-পুলিশ কমিশনার জানান, জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে সংরক্ষিত ১১ কোটিরও বেশি নাগরিকের ব্যক্তিগত তথ্য সম্বলিত ডাটা সেন্টারটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামো হিসেবে প্রজ্ঞাপন দ্বারা স্বীকৃত।
গ্রেফতারকৃতরা বিভিন্ন কোম্পানীসহ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামোতে বেআইনিভাবে প্রবেশ করে উক্ত পরিকাঠামো থেকে উপাত্ত ভান্ডারের (ডাটাবেজ) অনুলিপি সংগ্রহ করে স্থানান্তর করে এবং ডিজিটাল ও ইলেকট্রনিক প্রতারণা করে। এছাড়াও তারা ব্যক্তির আইনগত কর্তৃত্ব ব্যতিত ব্যক্তিগত নাগরিক তথ্যাদি অবৈধভাবে সংগ্রহ ও বানিজ্যিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করে।
তিনি আরো জানান, প্রাথমিকভাবে নাগরিকদের ব্যক্তিগত তথ্য আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে বানিজ্যিক উদ্দেশ্যে ব্যবহারে ২০ হাজার কোটি টাকার ই-ট্রানজেকশনের তথ্য পাওয়া গেছে।
এ ঘটনায় আজ গ্রেপ্তারকৃতসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে সাইবার নিরাপত্তা আইনে রাজধানীর কাফরুল থানায় একটি মামলা রুজু হয়েছে।
/ইএইচ
মন্তব্য করুন