spot_img

এক পাশে নামাজ অন্য পাশে পূজা: সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মেলবন্ধন 

এসম্পর্কিত আরো পড়ুন

এডুকেশন টাইমস ডেস্ক: লালমনিরহাট শহরের কালীবাড়ি এলাকায় একই আঙিনায় পাশাপাশি দাঁড়িয়ে মসজিদ ও কালীমন্দির। মসজিদে চলে নামাজ আদায়, মন্দিরে পূজা-অর্চনা। একপাশে সুঘ্রাণ ছড়ায় আতর, অন্যপাশে ধূপ। কোনো বিবাদ, মতবিরোধ ছাড়াই যুগ যুগ ধরে সেখানে ধর্মীয় সহাবস্থান বিরাজ করছে। গতকাল শুক্রবারও সেই চিত্র দেখা গেল।

এ দিন ছিল হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের শীতকালীন ভোগ ও লীলা কীর্তন অনুষ্ঠান। এ উপলক্ষে মসজিদ-মন্দিরের উঠানে স্থাপন করা হয় বিশাল প্যান্ডেল। অনুষ্ঠানে অংশ নেন প্রায় দুই হাজার মানুষ। সকালে শীতকালীন পূজা-অর্চনার মাধ্যমে শুরু হয় দিনের কার্যক্রম। মুসলমানদের জুমার নামাজ আদায়ের জন্য দুপুরে দুই ঘণ্টা বিরতি ছিল। এরপর শুরু হয় শীতকালীন ভোগ। এশার নামাজ শেষে অনুষ্ঠিত হয় লীলা কীর্তন। দূর-দূরান্ত থেকে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের আগমনে সরগরম হয়ে ওঠে প্রাঙ্গণ।

- বিজ্ঞাপন -

স্থানীয়রা জানান, কালীবাড়ি তথা পুরানবাজার এলাকায় ১৮৩৬ সালে কালীমন্দিরটি প্রতিষ্ঠিত হয়। নামাজ আদায়ের জন্য ১৯১৫ সালের দিকে এলাকার মুসলমানরা মন্দিরের পাশেই মসজিদ নির্মাণ করেন।

গতকাল জুমার নামাজ শেষে মসজিদের ফটকে দাঁড়িয়ে ছিলেন এলাকার মুসল্লি জাহাঙ্গীর আলম বাবু। তিনি বলেন, ‘আমরা নির্বিঘ্নে নামাজ পড়লাম। ওরা ধর্মীয় আচারাদি পালন করল। কোনো সমস্যা হয়নি। বোঝাপড়া থাকলে কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়। ভোগ ও লীলা কীর্তন উপলক্ষে এলাকার অনেক মুসলমানকে দাওয়াত দিয়েছেন হিন্দু ধর্মের লোকজন।’

স্বপন সাহা, কানু কর্মকার, তাপস বণিকসহ কয়েকজন জানান, একই প্রাঙ্গণে মসজিদ-মন্দির নিয়ে তারা গর্ব করেন। গতকালের আয়োজন ছিল অনেক বড়। প্রচুর লোকের সমাগম হয়েছে। সুষ্ঠুভাবে সম্পাদন হয়েছে পুরো অনুষ্ঠান।

কালীবাড়ি কেন্দ্রীয় মন্দিরের সভাপতি ও পুরোহিত শংকর চক্রবর্তী বলেন, ‘আমরা দুই সম্প্রদায়ের লোকজন খুব ভালো আছি।

নামাজের সময় উলুধ্বনি ও বাদ্যযন্ত্র বন্ধ থাকে। অন্য সময় স্বাভাবিক নিয়মে ধর্মীয় কাজ করে থাকি। ভোগ অনুষ্ঠানে মসজিদের ইমাম ও এলাকার মুসল্লিদের নিমন্ত্রণ করা হয়।’

পুরানবাজার জামে মসজিদের দ্বিতীয় ইমাম ক্বারি রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এটাই হচ্ছে ইসলামের সৌন্দর্য। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের এত বড় আয়োজনে কোনো সমস্যা হয়নি। যুগ যুগ ধরে বহমান রয়েছে ধর্মীয় এই সম্প্রীতি। আমরা এটিকে ধারণ ও লালন করতে চাই।’

মসজিদ কমিটির সহসভাপতি আব্দুল বাতেন রতন জানান, যেকোনো অনুষ্ঠান উদযাপনে দু’পক্ষ বসে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ পর্যন্ত অপ্রীতিকর কোনো ঘটনা ঘটেনি।

এসএস/

spot_img
spot_img

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- বিজ্ঞাপন -spot_img

সর্বশেষ প্রকাশিত

spot_img