শিক্ষার মান তুলে ধরে এমন তিনটি বৈশ্বিক সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বেশ খারাপ। এর মধ্যে দু’টি সূচকে দেখা গেছে, দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের অবস্থান সবার নীচে।
ইউএনডিপি ও মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুম নলেজ ফাউন্ডেশনের প্রকাশিত ২০২১ সালের বৈশ্বিক জ্ঞান সূচকে ১৫৪টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১২০তম। বৈশ্বিক জ্ঞান সূচকে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের চেয়ে খারাপ অবস্থানে আছে পাকিস্তান (১২৩), নেপাল (১২৮) ও আফগানিস্তান (১৫১)। দক্ষিণ এশিয়ায় শীর্ষে আছে শ্রীলঙ্কা (৮৬)। ভারত ও ভুটান আছে যথাক্রমে ৯৭ ও ১০৮তম স্থানে আছে।
ফ্রান্সভিত্তিক বিজনেস স্কুল ‘ইনসিয়েড’ ও ওয়াশিংটনভিত্তিক ‘পোর্টুল্যান্স ইনস্টিটিউটের’ ২০২১ সালের ‘গ্লোবাল ট্যালেন্ট কম্পিটিটিভনেস ইনডেক্সে’ ১৩৪ দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১২৩ নম্বরে। প্রতিভা সূচক দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের অবস্থান সবার নিচে। এই অঞ্চলে শীর্ষে আছে ভারত (৮৮)। এরপর আছে শ্রীলঙ্কা (৯৩), পাকিস্তান (১০৭) ও নেপাল (১১৩)। জাতিসংঘের সংস্থা ‘ওয়ার্ল্ড ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি অর্গানাইজেশনের’ প্রকাশিত ২০২১ সালের বৈশ্বিক উদ্ভাবন সূচকে ১৩২ দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১১৬ নম্বরে। উদ্ভাবন সূচকেও দক্ষিণ এশিয়ায় সবার নিচে আছে বাংলাদেশ। সবচেয়ে ভালো অবস্থানে আছে ভারত (৪৬)। এরপর আছে শ্রীলঙ্কা (৯৫), পাকিস্তান (৯৯) ও নেপাল (১১১)।
যদিও এই রিপোর্টগুলো পাওয়া গেছে ২০২২ সালের মাঝামাঝি।
ইউনেস্কো ইনস্টিটিউট ফর স্ট্যাটিস্টিকসের হিসেব বাংলাদেশে শিক্ষাখাতে বাজেট বরাদ্দকে দায়ী করছে। ১৯৭১ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে তারা দেখেছে, দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশে শিক্ষাখাতে সবচেয়ে কম বাজেট বরাদ্দ করা হয়। বাংলাদেশের বাজেটে শিক্ষাখাতে জিডিপির মাত্র ১.৮৩ শতাংশ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। একটি দেশের জিডিপির ৬ শতাংশ শিক্ষা খাতে ব্যয় করা উচিত বলে মনে করে ইউনেস্কো।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক এস এম এ ফায়েজ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘আমাদের সরকারগুলো শিক্ষাখাতে পর্যাপ্ত বরাদ্দ দিতে পারে না এর কারণও আছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সময় আমরা যে শিক্ষার্থীদের পাই তারা অত্যন্ত মেধাবী। অথচ এই মেধাবীদের আমরা পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা দিতে পারছি না। তারা হলে থাকতে পারে না, হলের খাবারের মান খারাপ। এমনকি লাইব্রেরীতেও নেই পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা। এখন আমরা এগুলো কিভাবে বাড়ানো যায় সেই চেষ্টা করছি। এতে আশা করি পরিস্থিতির উন্নতি হবে।’
এসআই/