এডুকেশন টাইমস ডেস্ক: নতুন কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সংগঠন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। কর্মসূচি অনুযায়ী ৯ দফা দাবিতে আগামীকাল বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) সারাদেশে গণসংযোগ করবে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।
আজ বুধবার (২৪ জুলাই) রাতে সংগঠনটির সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসুদ প্রেরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।
এতে বলা হয়, দেশে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সরকার সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর নির্যাতনের স্ট্রিম রোলার চালিয়ে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে প্রায় তিন শতাধিক ছাত্র-জনতাকে হত্যা করা হয়েছে। কয়েকজন সমন্বয়ককে গুম করে ফেলা হয়েছে। অন্যতম সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদকে গত ৫ দিন ইনজেকশন দিয়ে সেন্সলেস অবস্থায় গুম করে নির্যাতন করা হয়েছে এবং আজকে চোখ বাধা অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। জানালার পাশে পড়ার সময় কোমলমতি শিশু সামিরকে হেলিকপ্টার থেকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপর স্মরণকালের সবচেয়ে বড় বর্বরোচিত হামলা চালানো হয়েছে। এমনকি স্কুল ও কলেজের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের উপর নেক্কারজনক হামলা চালিয়ে অসংখ্য শিক্ষার্থীকে আহত ও শহীদ করা হয়েছে।
“এই অবস্থায় আমরা দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলতে চাই শুধুমাত্র আদালতের রায় ও প্রজ্ঞাপন দিয়ে কোটা ব্যবস্থার সংস্কার করে সরকার দেশব্যাপী চালানো গণহত্যার দায় এড়াতে পারে না। আমাদের ৯ দফা দাবি এখন গণমানুষের দাবীতে পরিণত হয়ছে। এটি এখন গোটা বাংলাদেশের মানুষের মুক্তির সনদ৷ ৯ দফা দাবি আদায়ে নতুন কর্মসূচী আগামীকাল দেশব্যাপী গণসংযোগ।” এই ৯ দফা দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত ছাত্রসমাজের আন্দোলন চলমান থাকবে বলে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।
৯ দফা দাবিতে যা রয়েছে:
১. প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ছাত্র হত্যার দায় নিয়ে জাতির কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে;
২. আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী ও আওয়ামী সন্ত্রাসী কর্তৃক ছাত্র হত্যার দায় নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে মন্ত্রীপরিষদ এবং দল থেকে পদত্যাগ করতে হবে;
৩. ঢাকাসহ যত জায়গায় নিহত হয়েছে সেখানকার ডিআইজি, পুলিশ কমিশনার ও পুলিশ সুপারদের চাকরি থেকে বরখাস্ত করতে হবে;
৪. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ও প্রক্টরদের পদত্যাগ করতে হবে;
৫. যে পুলিশ সদস্যরা শিক্ষার্থীদের উপর গুলি করেছে, ছাত্রলীগ-যুবলীগসহ যে সকল সন্ত্রাসীরা শিক্ষার্থীদের উপর নৃশংস হামলা পরিচালনা করেছে এবং পরিচালনার নির্দেশ দিয়েছে তাদেরকে আটক করে এবং হত্যা মামলা দায়ের করে দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রেফতার দেখাতে হবে;
৬. দেশব্যাপী যেসব শিক্ষার্থী ও নাগরিক নিহত ও আহত হয়েছে তাদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ প্রদান করতে হবে;
৭. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রলীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ করে ছাত্রসংসদকে কার্যকর করতে হবে;
৮. অবিলম্বে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও হলসমূহ খুলে দিতে হবে;
৯. কোটা আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত শিক্ষার্থীদের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কোন ধরনের হয়রানি করা হবে না মর্মে অঙ্গীকার করতে হবে।
এসআই/