spot_img

দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠগুলোতে অস্থিরতা কেন?

এসম্পর্কিত আরো পড়ুন

রুমি নোমান: দেখুন দেশে বেশ কিছুদিন ধরে দেশের সরকারি উচ্চ বিদ্যাপীঠগুলোতে অস্থিরতা বিরাজ করছে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানগুলোর সর্বোচ্চ অভিভাবক কিংবা তদারকি সংস্থাও সরাসরি কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। শিক্ষকরা তাদের দাবিতে কঠোর অবস্থানে আবার কোটার সংষ্কার নিয়ে মাঠে রয়েছেন বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী। পাশাপাশি প্রশ্নফাঁস কেলেঙ্কারি তো আছেই!

কিন্তু একটু খেয়াল করে দেখুন তো, বেসরকারি কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কী বন্ধ আছে? কোনো সেশন জট কিংবা ক্লাস-পরীক্ষায় বিঘ্নতা আছে? উত্তরটা না বোধক।

- বিজ্ঞাপন -

আবার আরেকটা বিষয় লক্ষ্য করুন, একটি বিশেষ সময়েই কিন্তু আন্দোলনগুলো চলমান। এই আন্দোলনগুলির তীব্রতার ঘোষণাও কিন্তু পূর্বে থেকেই অনুমেয় ছিল। গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর নিকট এ তথ্য থাকা স্বাভাবিক।

কিন্তু দীর্ঘদিনেও এসব সমাধানে তেমন কোনো ফলপ্রসু পদক্ষেপ নেই। নেই কোনো আলোচনা। উল্টো ইউজিসির পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফিরে যেতে নির্দেশনা দেওয় হয়েছে। অথচ এর আগে থেকেই শিক্ষক-কর্মকর্তারা দাবি আদায়ের অংশ হিসেবে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ রেখেছেন।

হঠাৎ দেখলাম ১৩ জুলাই সরকারি দলের সম্পাদকের নেতার সঙ্গে দাবির বিষয়ে তাদের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বৈঠকে বসেছেন শিক্ষক নেতারা। কিন্তু গণমাধ্যম থেকে জানা গেছে সেখানেও উপস্থিত ২-১ জন ব্যতিরেকে অন্যান্য শিক্ষক নেতারা কথা বলার তেমন সুযোগ পাননি। তবে সচেতন মহলের অনেকের মনেই প্রশ্ন জেগেছে, তাহলে দাবিটা কার নিকট?

প্রেক্ষাপটের অন্যদিক হলো, আন্দোলন কি তবে কেউ জিইয়ে রাখতে চাচ্ছে? যদি সেটাই হয়, পক্ষটা কারা? সরকার নাকি অন্য কোনো পক্ষ?

প্রশ্নটা একারণেই যে, দুটো দাবিই সরকারের পক্ষ থেকে নিরসনের সুযোগ রয়েছে। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে বিষয়গুলোর আশু সমাধানে জরুরি ভিত্তিতে কোনো পদক্ষেপ নেই। ইতিমধ্যেই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকের নতুন শিক্ষার্থীরা ক্লাস শুরুর আগেই সেশনজটে পড়েছেন। তেমনি প্রতিটি শিক্ষার্থীই ভুক্তভোগী। এক কথায় কার্যত অচল দেশের সর্বোচ্চ এ বিদ্যাপীঠগুলো।

এদিকে আপলি বিভাগে এ বিষয়ে শুনানিতে প্রধান বিচারপতি বলেন, আপিল বিভাগ প্রয়োজনে সংবিধানের ১০৪ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী হাই কোর্টের রায় সংশোধন কিংবা এ বিষয়টি নিয়ে একটি উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন কমিটিও করতে পারে।

অন্যদিকে হাইকোর্টের রায়ে ২০১৮ সালের আগের সব কোটা পুনর্বহালের আদেশের পাশাপাশি প্রয়োজনে সংস্কারে সুযোগ দেওয়া হয় সরকারকে। তারপরও এ অস্থিরতা নিরসনের বদলে তা উসকে দেওয়া হচ্ছে বলেই প্রতিয়মান।

তবে শিক্ষার্থীদের বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন হলেও শিক্ষকদের দাবি কিন্তু সরকারের হাতেই বিদ্যমান। এরই মাঝে সরকার প্রধান জানালেন তারা আন্দোলন করতে করতে ক্লান্ত হলে তারপর কথা বলবেন। তাহলে কি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আরও দীর্ঘদিন অচল থাকুক, এটাই চাওয়া হচ্ছে?

সবশেষে বলতে চাই, শিক্ষাব্যবস্থার বর্তমান অবস্থা কতটুকু সন্তোষজনক সেটা শিক্ষাবিদরা বিবেচনা করবেন। কিন্তু দিনের পর দিন এ অস্থিরতা শিক্ষার্থীদের তথা উচ্চ শিক্ষার ক্ষতি করছে সেটি কি কেবলই বিরোধীদের ইস্যু সৃষ্টির চেষ্টা? নাকি প্রতিবেশী কোনো দেশের সঙ্গে সমঝোতা কিংবা চুক্তি বিষয়ে স্মৃতির বিলোপ!

লেখা: রুমি নোমান

সাংবাদিক

spot_img
spot_img

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- বিজ্ঞাপন -spot_img

সর্বশেষ প্রকাশিত

spot_img