spot_img

জবি ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে চাঁদা না দেওয়ায় ফল ব্যবসায়ীকে মারধরের অভিযোগ

এসম্পর্কিত আরো পড়ুন

জবি প্রতিনিধি: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শাখা ছাত্রলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি মহিউদ্দিন অনিসহ একাধিক নেতার বিরুদ্ধে চাঁদা না দেয়ায় বাদামতলীর এক ফল ব্যবসায়ীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে।

ভুক্তভোগী ওই ব্যবসায়ীর নাম হেলাল উদ্দিন। তিনি পুরান ঢাকার সদরঘাট এলাকায় ফল বিক্রির ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। মহিউদ্দিন অনির নের্তৃত্বে কয়েকজন তাকে অন্য একটি হোটেলে নিয়ে চাঁদা দাবি করে। চাঁদা দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় মারধরের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী। হোটেলের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, মহিউদ্দিন অনি ওই ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে তেড়ে গিয়ে তাকে একাধারে কয়েকটি থাপ্পড় ও কিল-ঘুষি মারেন।

- বিজ্ঞাপন -

ভুক্তভোগী ও ব্যবসায়ী অভিযোগ করে বলেন, গত শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) রাতে জবি ছাত্রলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি মহিউদ্দিন অনির নেতৃত্বে ৫-৬ জন আমার উপর অতর্কিত আক্রমণ করে। সাপ্তাহিক বন্ধ থাকায় আমি পুরোনো টাকা কালেকশন করতে সদরঘাট এলাকায় ছিলাম। এক পর্যায়ে কথা বলতে বলতে আমি জুবলী স্কুলের সামনে চলে যাই, এমতাবস্থায় অনি আমাকে দেখে। তখন সে হৃদয়কে বলে ওরে ধরে ওর পকেটে কত টাকা আছে দেখ। তখন আমি তাদেরকে দেখে দৌঁড়ে পালাই। আমার সাথে প্রায় দুই লাখ ছত্রিশ হাজারের মতো টাকা ছিলো। আমি বুঝতে পারি আমার পকেটে থাকা যে টাকা আছে তারা নিয়ে যাবে। দৌঁড়ে গিয়ে আমি হোটেলে অবস্থান করি। সেখান থেকে আমাকে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে এসে প্রচণ্ডভাবে মারে। অনি আমাকে চড়-থাপ্পড় ও কিল-ঘুষি দেয়। একপর্যায়ে হোটেলে থাকা লোকজন আমাকে রক্ষা করে।

ভুক্তভোগী আরও বলেন, আমার সাথে থাকা দুই লাখ ছত্রিশ হাজার টাকার মধ্যে দুই লাখ উন্নিশ হাজার টাকা তারা ভাগিয়ে নিয়ে যায়। বাকি টাকা মানিব্যাগে থাকায় নিতে পারেনি। আমার সাথে থাকা মোবাইল নেওয়ার জন্য বেশ কয়েকবার চেষ্টা করে।

অনির সাথে ৫-৬ জনের নাম জানতে চাইলে হেলাল বলেন, অনি, সৌরভ, রিপন, হৃদয় আরও কয়েকজন ছিলো। তাদেরকে সবাইকে আমাদের এখানের ব্যবসায়ীরা চিনে। তারা বিভিন্ন সময়ে টাকা চাইতে আসে।

ঘটনার দিনের কথা উল্লেখ করে হেলাল বলেন, হোটেলে থাকা সিসিটিভি ফুটেজে আমাকে মারার সকল ভিডিও আছে। আমি হোটেলে অবস্থান করার পরও তারা সেখান থেকে আমাকে বাহির করে নিয়ে আসে সেই ভিডিও সিসিটিভি ফুটেজে আছে। সেখানে থাকা হোটেলের স্টাফ এবং স্থানীয় লোকজন সকলে আমাকে মারতে দেখেছে।

হেলাল আরও বলেন, গতকাল রাতে তারা আমাকে ফলো করতে করতে ওয়ারী পর্যন্ত আসে। তিনজন মোটরসাইকেল নিয়ে আসে। আমি তাদেরকে দেখে রিকশা করে দ্রুত চলে যাওয়ায় চেষ্টা করি। তারা আমার সাথে কথা বলার জন্য ডাকতে থাকে। আমি সাড়া না দেওয়ায়। আমাকে মারার ভয়ভীতি দেখায়।

ভুক্তভোগী হেলাল আরও বলেন, আমি মামলা করার জন্য সূত্রাপুর থানায় যাই। পুলিশ আমার মামলা নেয়নি। তারা আমাকে টাকা দিয়ে বিষয়টি সমাধান করে ফেলতে বলে। এক পর্যায়ে অনি পুলিশকে বলে তারা যেনো আমাকে পাঁচ মিনিটের জন্য ছাড়ে, আর এর মধ্যে সে আমাকে মেরে ফেলবে।

টাকার নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে মহিউদ্দিন অনি বলেন, সে আমার পূর্ব পরিচিত। ২০১৪-১৫ সাল থেকে তার সাথে আমার পরিচয়। সে নাকি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি ইব্রাহিম ফরাজী ভাইকে টাকা দেয়। তার সাথে এ বিষয়ে কথা বল ছিলাম এক পর্যায়ে সে আমার বাবা-মার নাম ধরে গালি দেয়। পরে আমিও তাকে দুইটা থাপ্পড় দিছিলাম। যেহেতু সে আমার পূর্ব পরিচিত তাকে আমি সরি বলে ছিলাম, সেও আমাকে সরি বলেছিল। সূত্রাপুর থানার এসআই আসাদ ভাই, রবিউল ভাই ছিলো সামনে। তারা বিষয়টা জানে, আমাদের মধ্যে বিষয়টি সমাধান হয়ে গেছে।

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহিম ফরাজী বলেন, অনেকে আমার নাম বলে পার পেয়ে যেতে চায়। এসব ইমোশনাল কথা বলে কোনো লাভ নাই। আমি কাউকে বলি নাই আমার জন্য অন্য কাউকে মাইর দিতে। আমার সাথে ওই ব্যবসায়ীর ৬-৭ বছর ধরে কোন যোগাযোগ নেই। টোকাই, ছিনতাইকারী কখনো ছাত্রলীগ হতে পারে না।

এ বিষয়ে সূত্রাপুর থানার ওসি মো: মাসুদ আলম বলেন, এ বিষয়ে আমাদের কাছে কোনো ধরনের অভিযোগ আসেনি। আমরা এ বিষয়ে কোনো অবগত না। সংশ্লিষ্ট যারা দেখেছে তারা বলতে পারবে।

এসআই/

spot_img
spot_img

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- বিজ্ঞাপন -spot_img

সর্বশেষ প্রকাশিত

spot_img