নিউজ ডেস্ক: বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ অন্য আরও ১৩ উপদেষ্টা শপথ নিয়েছেন। উপদেষ্টাদের মধ্যে জায়গা পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ।
জানা যায়, স্কুলশিক্ষক বিল্লাল হোসেনের চার সন্তানের মধ্যে আসিফ দ্বিতীয় এবং একমাত্র ছেলে। বাড়ি কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানার আকুবপুর গ্রামে। বাবা বিল্লাল হোসেন আকুবপুর ইয়াকুব আলী ভূঁইয়া পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। মা রোকসানা আক্তার একজন গৃহিণী। পরিবারের মধ্যে বড় বোন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক সম্পন্ন করে স্বামীর সঙ্গে জাপানে বসবাস করছেন। তৃতীয় বোন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। আর ছোট বোন রাজধানীর হলিক্রস কলেজে পড়াশোনা করছেন।
আসিফের শিক্ষক বাবা বিল্লাল হোসেন বলেন, আসিফের আন্দোলন করার বিষয়টি শুরুতে জানা ছিল না। যখন জানলাম, ফোন করে তাকে অনেকবার বাড়ি আসতে বলেছি। কিন্তু তার বক্তব্য ছিল, ‘আমার অনেক ভাইবোন শহীদ হয়েছে, আন্দোলন থেকে ফেরা যাবে না। হয় গুলি খেয়ে মরবো, না হয় আন্দোলন সফল করে ঘরে ফিরবো।’
তিনি বলেন, ১৯ জুলাই থেকে আসিফের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। পড়ে শুনলাম, সে নিখোঁজ হয়েছে। পাঁচ দিনেও সন্ধান না পেয়ে আমরা যখন দিশেহারা, তখন জানলাম তাকে গুম করা হয়েছে। দ্রুত শাহবাগ থানায় দিয়ে নিখোঁজের ডায়েরি করতে গেলে ওসি আমাদের জিডি নেননি। হতাশ হয়ে যাত্রাবাড়ী থানায় যাই। কিন্ত সেখানেও একইভাবে আমাদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়। পুলিশের দ্বারে দ্বারে ঘুরলে তারা আমাদের কথা শোনেনি। অবশেষে সংবাদ সম্মেলন করে আসিফের গুমের বিষয়টি দেশবাসীকে জানাই।
পরবর্তীতে ২৪ জুলাই হাতিরঝিল এলাকায় আসিফ মাহমুদকে পাওয়া গেলেও ২৬ জুলাই আবারও তাকে তুলে নেয় পুলিশ। ২৭ জুলাই ডিবি কার্যালয় থেকে ফোন করে জানানো হয়, আপনার ছেলে ডিবি কার্যালয় আছে, এসে দেখে যান। আমি আর আসিফের মা সেখানে গিয়ে দেখা করি। সেখানে ডিবিপ্রধান হারুন আমাকে দিয়ে একটি ভিডিও রেকর্ড নিতে চেয়েছিল যে, সমন্বয়করা আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা স্বেচ্ছায় দিয়েছেন। তার এ প্রস্তাবে আমি রাজি হইনি। পরে আমরা বাড়িতে চলে আসি। একদিন পর ডিবি থেকে আবারও ফোন করা হলে দ্রুত সেখানে যায়। তখন তাদের গাড়ি দিয়ে আসিফসহ আমাদের বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হয়।
এসএস/
মন্তব্য করুন