নিজস্ব প্রতিবেদক: সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের ১০ম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে সোচ্চার মো. মাহবুবর রহমান একাধিকবার শোকজের মুখে পড়েছেন। জয়পুরহাট জেলার ক্ষেতলাল উপজেলার হিন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এই সহকারী শিক্ষক শিক্ষকদের ন্যায্য অধিকার ও দাবি নিয়ে ফেসবুকে সরব থাকায় কয়েকবার কারণ দর্শানোর (শোকজ) নোটিশ পেয়েছেন।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টের কারণে তাকে আবারও শোকজ করা হয়েছে। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের পাঠানো নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে যে, তিনি ফেসবুকে সরকারি পদস্থ ব্যক্তিদের বিষয়ে ফেসবুক লাইভে বিরূপ মন্তব্য করেছেন, যা সরকারি কর্মচারী আচরণবিধির পরিপন্থী।
জানা গেছে, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার ২৬ জানুয়ারি এক আলোচনা সভায় বলেছিলেন, ‘প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকতাকে শুধু অর্থমূল্য দিয়ে বিবেচনা করলে হবে না। বেতন-ভাতায় না পোষালে অন্য পেশায় চলে যান।’ এ মন্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে মাহবুবর রহমান ফেসবুকে লাইভ করেন। এসময় শিক্ষকদের নিয়ে অসম্মানজনক কথা বলায় উপদেষ্টার পদত্যাগও দাবি করেন তিনি।
এ বিষয়ে মাহবুবর রহমান জানান,‘ফ্যাসিস্ট চলে গেছে, কিন্তু ফ্যাসিবাদী বাক স্বাধীনতাহরণকারী আইন এখনো রয়ে গেছে। আমাদের ন্যায্য দাবির জন্য কথা বললেই শোকজ ও বিভাগীয় মামলা করা হয়। ১০ম গ্রেড বাস্তবায়নসহ বিভিন্ন শিক্ষকদের অধিকার আদায়ের জন্য আমরা লড়াই চালিয়ে যাব।’
এর আগেও তিনি শিক্ষকদের বেতন-ভাতা, পদোন্নতি, রমজান মাসের ছুটি ও ১০ম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবিতে পোস্ট করায় মোট ৬বার তাকে শোকজ করা হয়েছে।
শিক্ষক সমাজের অনেকেই মনে করছেন, এটি মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ। অন্যদিকে, শিক্ষা কর্মকর্তারা বলছেন, সরকারি কর্মচারীদের জন্য নির্দিষ্ট শৃঙ্খলা রয়েছে এবং সেটি লঙ্ঘন করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের ১০ম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে অনলাইন ও অফলাইনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছেন মো. মাহবুবুর রহমান। তিনি ১০ম গ্রেড বাস্তবায়ন সমন্বয় পরিষদের সমন্বয়ক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন। ২০২৫ সালের ২৪ জানুয়ারি ঢাকায় সারাদেশের শিক্ষকদের অংশগ্রহণে আয়োজিত শিক্ষক সমাবেশ (মার্চ ফর টেনথ গ্রেড) ও যমুনা অভিমুখে পদযাত্রায় তিনি নেতৃত্ব দেন।
এবি/