তানভীর খান তরুণ: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মধুর ক্যান্টিনে শিবিরের সংবাদ সম্মেলনের প্রতিবাদে প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক মো: জাহাঙ্গীর আলম সাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে ছাত্রশিবিরের সংবাদ সম্মেলনের কঠোর নিন্দা জানিয়েছেন ছাত্রদল সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। তবে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বাংলা একাডেমির বানানরীতি অনুযায়ী প্রায় ৩৫ জায়গায় ভুল ও অসঙ্গতি রয়েছে।
সেখানে ভি,আই, পি লেখা রয়েছে যা ভিআইপি হবে, সংক্ষিপ্ত শব্দ কমা দিয়ে লেখা যায় না। ফোনঃ শব্দটি হবে ফোন:, কারণ বিসর্গ (ঃ) কোনো যতিচিহ্ন নয়, এটি বাংলা বর্ণমালার একটি স্বাধীন বর্ণ, এর নিজস্ব উচ্চারণ আছে। পদান্তে অবস্থিত বিসর্গ বর্ণের উচ্চারণ: হ্। যতিচিহ্ন হিসেবে ব্যবহৃত কোলন ( : ) বা সংক্ষেপণচিহ্নের ( . ) স্থলে বিসর্গ বিধেয় নয়। অনুরূপ ফ্যাক্সঃ>ফ্যাক্স: (প্রাগুক্ত), অনুরূপ তারিখঃ>তারিখ:।
২৩-০২-২০২৫ ইং> ২৩-০২-২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ বা খ্রি., ‘ইং’ বা ‘ইংরেজি’ নামের কোনো বর্ষপঞ্জি নেই। এর নাম গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জি। বাংলায়: খ্রিষ্টাব্দ, সংক্ষেপে: খ্রি.। সূত্রঃ>সূত্র: (প্রাগুক্ত), সম্মেলন এর> সম্মেলন-এর বা সম্মেলনের। বিশ্ববিদ্যালয় এর>বিশ্ববিদ্যালয়-এর বা বিশ্ববিদ্যালয়ের (‘-এর’ পূর্ববর্তী শব্দের সাথে সেঁটে বসে), ২৫ শে>২৫শে, সার্চলাইট এর>সার্চলাইট-এর বা সার্চলাইটের (প্রাগুক্ত)। শহীদ> শহিদ (বিদেশি শব্দে ঈ-কার পরিহার্য)। পরবর্তীতে> পরবর্তীকালে বা পরে (‘পরবর্তী’ অর্থ: পরে অবস্থিত। ‘পরবর্তী’ শব্দের অব্যবহিত পরে কোনো বিষয় বা ধারণা যুক্ত হলেই কেবল শব্দটির অর্থ জাগ্রত হয়ে ওঠে। যেমন: পরবর্তী বছর।
ইসলামি ছাত্রশিবির শব্দটি ইসলামী ছাত্রশিবির হবে, কারণ সংগঠনের নাম যেভাবে নিবন্ধন করা সেভাবেই লিখতে হবে। ছাত্রশিবিরের নিবন্ধিত নাম ‘ইসলামী ছাত্রশিবির’। পরিচিত-কে (এ-কারের উপর মাত্রা পরিহার্য। ছাত্রদল এর> ছাত্রদল-এর বা ছাত্রদলের লিখতে হবে। ন্যাক্কারজনক শব্দটি ন্যক্কারজনক হবে। সার্চলাইট এ> সার্চলাইটে বা সার্চলাইট-এ (প্রাগুক্ত)। প্রেক্ষিতে> পরিপ্রেক্ষিতে (‘প্রেক্ষিত’ আর ‘পরিপ্রেক্ষিত’ এক নয়। এদের অর্থ ও প্রয়োগ আলাদা। বাক্যে সাধারণত বিশেষ্য হিসেবে ব্যবহৃত ‘পরিপ্রেক্ষিত’ অর্থ— পটভূমি, পারিপার্শ্বিক অবস্থা, প্রেক্ষাপট, দৃশ্যপট। বাক্যে সাধারণত বিশেষণ হিসেবে ব্যবহৃত ‘প্রেক্ষিত’ অর্থ দর্শন করা হয়েছে এমন, দেখা হয়েছে এমন, প্রেক্ষণ করা হয়েছে এমন।
মুক্তিযোদ্ধাদেরকে> মুক্তিযোদ্ধাদের, কারণ ‘র’-আছে এমন বহুবচনবাচক সর্বনামে ‘-কে-বিভক্তি’ পরিহার্য। আবার সহ-সভাপতি শব্দটি সহসভাপতি হবে, কারণ সবসময় ‘সহ’ একসাথে বসবে না। ‘সহ’ শব্দের আদিতে নিরেটভাবেই বসবে। যেমন: সহযোগী, সহকারী, সহপরিচালক। আর ‘সহ’ শব্দের শেষে (সহিত বা সঙ্গে) হাইফেন দিয়ে বসবে। যেমন: মাল-সহ, ব্যাখ্যা-সহ, শ্রদ্ধা-সহ। সূত্র: বাংলা একাডেমি আধুনিক বাংলা অভিধান, পৃষ্ঠা: ১৩১০ ও ১৩১১।
এসআই/