রাবি প্রতিনিধি: গত ঈদুল আযহার ছুটির পর থেকে কার্যত বন্ধ রয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম। শিক্ষকদের পেনশন আন্দোলনে চলতি বছরের ১ জুলাই থেকে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ থাকে; এরপর কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে ১৭ জুলাই থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।
পরবর্তীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে সংগঠিত গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর পদত্যাগের হিড়িক পড়ে যায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে। উপাচার্যসহ একে একে দায়িত্ব ছাড়েন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের প্রায় সব গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন শিক্ষকরা। এতে ভেঙ্গে পড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কাঠামো।
তবে বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) উপাচার্য পদে অধ্যাপক ড. সালেহ হাসান নকীব নিযুক্ত হওয়ার পর থেকে কিছুটা স্বস্তি এসেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে। এছাড়া, গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক পদগুলোতেও নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে।
গত মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত ডিন কাউন্সিলের সভায় ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ও হিসাব পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয় ড. সা’দ আহমেদকে; এছাড়া পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তরের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পান আবু হেনা মো. মোস্তফা কামাল। এ সভাতেই রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস শুরুর ঘোষণা আসে।
এদিকে শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) ছাত্র উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন ফোকলোর বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. আমিরুল ইসলাম কনক। অন্যদিকে জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক হিসেবে নিযুক্ত হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপক ড. আখতার হোসেন মজুমদার।
গুরুত্বপূর্ণ এ পদগুলোতে যোগদান সম্পন্ন হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনায় আর কোনো বাঁধা নেই। এমতাবস্থায় দ্রুত ক্লাস-পরীক্ষা চালু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রমকে গতিশীল করার তাগিদ দিয়েছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী সাদমান সাকিব জানান, “আমরা চাচ্ছিলাম দ্রুত উপাচার্য নিয়োগ দেওয়া হোক। যেহেতু উপাচার্যসহ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এখন এক্টিভ রয়েছে, তাই পুরোদমে ক্লাস-পরীক্ষা শুরু হওয়া প্রয়োজন। আশা করছি নতুন উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রমকে গতিশীল করতে কার্যকরী ব্যবস্থা নিবেন।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান বলেন, “নতুন উপাচার্য নিয়োগ হয়েছে এবং রেজিস্ট্রার ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকও নিযুক্ত করা হয়েছে। আমি মনে করি এখন ক্লাস-পরীক্ষা পুরোদমে চালু করা দরকার।”
এদিকে উপাচার্য পদে যোগদান করার পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক ড. সালেহ হাসান নকীব জানান, “শিক্ষার্থীদের মূল যে কাজ, লেখাপড়া ও ক্লাসরুমে ফিরে যাওয়া, সেটা অনেক দিন ধরে বন্ধ আছে। দেশে এ ধরনের একটা গণঅভ্যুত্থানের পর এটা অস্বাভাবিক ঘটনা নয়। শিক্ষকেরা ক্লাসরুম থেকে কিছুটা দূরে সরে যাওয়ায় আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়মিত ক্লাস হচ্ছে না। তবে একজন শিক্ষক হিসেবে আমার চাওয়া থাকবে, যত দ্রুত সম্ভব শিক্ষা কার্যক্রম চালু করা। আর সেই ব্যাপারে শিক্ষার্থীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ আমি কামনা করছি।”
এসএস/
মন্তব্য করুন