বাকৃবি প্রতিনিধি:
জুনোটিক (প্রাণী থেকে মানুষে সংক্রমণ করতে পারে) রোগগুলোর মধ্যে অন্যতম প্রাণঘাতী রোগ হলো জলাতঙ্ক বা র্যাবিস। এই রোগের লক্ষণ একবার প্রকাশ পেলে মৃত্যু অবধারিত, এর কোনো প্রতিকার নেই। জলাতঙ্ক রোগ প্রতিরোধের একমাত্র উপায় হলো ভ্যাকসিন বা টিকা। বিশ্ব জলাতঙ্ক দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) শিক্ষার্থীদের সংগঠন ‘অ্যানিম্যাল সেভিয়ার্স বাউ’ পোষা প্রাণিদের জন্য তিন দিনব্যাপী বিনামূল্যে জলাতঙ্ক রোগের টিকা প্রদান কর্মসূচি আয়োজন করেছে।
এই ক্যাম্পেইনটি ২৮ সেপ্টেম্বর শুরু হয়ে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলে। প্রতিদিন বিকাল ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত প্রশাসনিক ভবনের সামনে কৃষি অনুষদের করিডোরে এ কর্মসূচি পরিচালিত হয়। আজ সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) ক্যাম্পেইনের সমাপনী দিনে টিকা প্রদান কার্যক্রম সম্পন্ন হয়।
জানা গেছে, ক্যাম্পেইনে বাকৃবি ক্যাম্পাস এবং আশেপাশের এলাকা থেকে পোষা কুকুর, বিড়াল, খরগোশ ইত্যাদি প্রাণিদের জলাতঙ্ক টিকা এবং প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করা হয়। কেওয়াটখালি, সুতিয়াখালী, শেষমোড়সহ বিভিন্ন এলাকার পোষা প্রাণির মালিকেরা তাদের প্রাণিদের নিয়ে এসে এ কর্মসূচিতে অংশ নেন।
নিজের পোষা কুকুরের জন্য ভ্যাকসিন নিতে আসা আদনান রহমান বলেন, “আমার পোষা কুকুর পাপেটকে নিয়ে গিয়েছিলাম শিক্ষার্থীদের র্যাবিস ভ্যাকসিন ক্যাম্পেইনে। সেখানে পাপেটের প্রাথমিক শারীরিক চেকআপ করা হয় এবং প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেওয়ার পর টিকা প্রদান করা হয়। তারা সবাই প্রাণিদের যত্ন নেওয়ার ক্ষেত্রে অত্যন্ত আন্তরিক ছিলেন।”
এ বিষয়ে বাকৃবি স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী ডা. উমর ফারুক বলেন, “জলাতঙ্ক (Rabies) একটি ভাইরাসজনিত রোগ, যা সাধারণত জলাতঙ্ক ভাইরাসে আক্রান্ত কুকুর, বিড়াল, বুনো শেয়াল, বাদুড় এবং অন্যান্য প্রাণীর কামড় বা আঁচড়ের মাধ্যমে মানুষের শরীরে প্রবেশ করে। এই রোগ মস্তিষ্ক এবং স্নায়ুতন্ত্রকে আক্রমণ করে এবং একবার লক্ষণ প্রকাশ পেলে এটি প্রায় নিশ্চিতভাবে প্রাণঘাতী হয়। কামড়ের পরপরই আক্রান্ত স্থানটি ভালোভাবে ধুয়ে ফেলা এবং যত দ্রুত সম্ভব প্রতিষেধক টিকা নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। অনেক পোষা প্রাণিপ্রেমী ভাই-বোন আছেন যারা তাদের প্রাণির আঁচড় বা কামড়কে গুরুত্ব দেন না, যার ফলে জলাতঙ্কে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। পোষা প্রাণিদের নিয়মিত টিকাদানের মাধ্যমে এই রোগ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।”
এএকে /
মন্তব্য করুন