বাকৃবি প্রতিনিধি: বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) অবস্থিত বাংলাদেশ কৃষি পরমাণু গবেষণা ইনস্টিটিউটে (বিনা) ‘কিশোরগঞ্জ জেলায় বিনা উদ্ভাবিত জাত ও প্রযুক্তিসমূহের সম্প্রসারণ এবং বিদ্যমান শস্যবিন্যাসে বিনার জাতসমূহ অন্তর্ভুক্তিকরণ’ শীর্ষক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (০৭ অক্টোবর) সকাল ১০টায় বিনার সেমিনার কক্ষে এ কর্মশালাটি আয়োজিত হয়।
অনুষ্ঠানে বিনার গবেষণা বিভাগের পরিচালক ড. মো. ইকরামুল হকের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিনার মহাপরিচালক ড. মো. আবুল কালাম আজাদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রশিক্ষণ ও পরিকল্পনা বিভাগের পরিচালক ড. শরিফুল হক ভূঞা, প্রশাসন ও সাপোর্ট সার্ভিস বিভাগের পরিচালক ড. মো. মনজুরুল আলম মণ্ডল এবং কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (শস্য) কৃষিবিদ মো. শাহীনুল ইসলাম। এছাড়া বিনার অন্যান্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাসহ কিশোরগঞ্জ জেলার কৃষক ও শস্য ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন।
কর্মশালার শুরুতে বিনার প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা (উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগ) ড. রেজা মো. ইমন বিনা উদ্ভাবিত বিভিন্ন শস্যের জাত ও তার গুণাগুণ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। তিনি কিশোরগঞ্জের ভূমি প্যাটার্ন, চাষ ব্যবস্থাসহ বর্তমান শস্য উৎপাদনের অবস্থা তুলে ধরে বলেন, বিনা উদ্ভাবিত শস্যগুলো কিশোরগঞ্জ জেলায় অন্তর্ভুক্ত করলে উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি মাটির স্বাস্থ্য ও গুণাগুণ বজায় থাকবে। এছাড়া বিনার উদ্ভাবিত জাত ও প্রযুক্তি অন্তর্ভুক্ত করলে সার্বিক উন্নয়ন এবং কৃষিক্ষেত্রে অগ্রগতির সম্ভাবনাও রয়েছে। তিনি আরও উল্লেখ করেন, শস্যবিন্যাসে বিনা উদ্ভাবিত জাত অন্তর্ভুক্ত করলে ক্রপিং ইন্টেনসিটি ও ফলন বৃদ্ধি পাবে, যার ফলে কিশোরগঞ্জ জেলার সামগ্রিক উৎপাদনশীলতা বাড়বে।
এরপর মুক্ত আলোচনায় কৃষক, উদ্যোক্তা, বিভিন্ন স্টেকহোল্ডার এবং অন্যান্য কৃষি কর্মকর্তারা তাদের মতামত উপস্থাপন করেন। পাশাপাশি একটি প্রশ্নোত্তর পর্বেরও আয়োজন করা হয়।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ড. মনজুরুল আলম মণ্ডল বলেন, কিশোরগঞ্জসহ সারা দেশে শস্যের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির প্রচুর সুযোগ রয়েছে। সঠিক শস্য প্যাটার্ন, উন্নত কৃষি প্রযুক্তি এবং উন্নত বীজ ব্যবহার করে আমরা বার্ষিক উৎপাদন অনেক বৃদ্ধি করতে পারি। এছাড়া উৎপাদন পরবর্তী সংরক্ষণও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যা আধুনিকায়নের প্রয়োজন রয়েছে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, বিনা উদ্ভাবিত শস্যের মধ্যে কিছু ক্ষেত্রে মাঠ পর্যায়ে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিচ্ছে। বিশেষভাবে বিনাধান-২৫ এর ট্রায়ালে যা ফলন দেখিয়েছে, মাঠে তার চেয়ে কিছুটা কম হচ্ছে, যার মূল কারণ হলো তীব্র তাপমাত্রা। অতিরিক্ত তাপমাত্রার কারণে এ বছর বপিত ধানে অতিরিক্ত পরিমাণে চিটা দেখা গেছে। বর্তমান পরিস্থিতি ও আবহাওয়া বিবেচনায় আমাদের গবেষণাগুলোর পরিকল্পনা সাজাতে হবে। ঝড়, বৃষ্টি ও তাপমাত্রা সহিষ্ণু ধানসহ অন্যান্য ফসলের জাত আবিষ্কারে মনোনিবেশ করতে হবে। দেশের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার খাদ্য চাহিদা পূরণে আমরা বিদ্যমান শস্যের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি নিয়ে কাজ করছি। পাশাপাশি ভবিষ্যতের আবহাওয়া বিবেচনায় নতুন নতুন জাত উদ্ভাবনের কাজ চলমান রয়েছে। আশা করছি, বিনা উন্নত ও বিরূপ আবহাওয়া সহিষ্ণু জাত উদ্ভাবন করে দেশের খাদ্য চাহিদা পূরণে আরও বেশি ভূমিকা রাখবে।
এসএস/
মন্তব্য করুন