ইবি প্রতিনিধি:
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) দুইদিনব্যাপী জুলাই গণঅভ্যুত্থানের আলোকচিত্র প্রদর্শনী করা হয়েছে। এ প্রদর্শনীতে জায়গা পেয়েছে আওয়ামী শাসনামলে গুমের শিকার ইবির দুই শিক্ষার্থী আল-মোকাদ্দাস ও মো. ওয়ালীউল্লাহ এর ছবি। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ২৫ ও ২৬ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা প্রদর্শনীতে এ আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করে ইসলামিক ইউনির্ভাসিটি ফটোগ্রাফিক সোসাইটি।
সরেজমিনে দেখা যায়, এ আলোকচিত্র প্রদর্শনীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের উপর লাঠিচার্জ, ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচি, ছাত্র আন্দোলনে মেয়েদের অংশগ্রহণ ও বাংলা ব্লকেড কর্মসূচিসহ বিভিন্ন আলোকচিত্র প্রর্দশন করা হয়।
এ প্রর্দশনীতে প্রতিটি বিভাগ, ল্যাবরেটরী স্কুল ও আইআইইআর এর শিক্ষা ও গবেষণার অগ্রগতির বিষয়ে প্রদর্শনী আয়োজন করা হয়। এতে মোট ৩৮ টি স্টল দেয়া হয়। প্রতিটি বিভাগ তাদের উদ্ভাবিত গবেষণাকর্ম, বই ও গবেষণা পত্র প্রদর্শন করেন।
প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ। এসময় উপস্থিত ছিলেন, দিবস উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. আলীনুর রহমানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ধর্মতত্ত্ব অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আ.ব.ম সিদ্দিকুর রহমান আশ্রাফী, প্রভোস্ট কাউন্সিলের সভাপতি অধ্যাপক ড. আবুল কালাম আজাদ, প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহিনুজ্জামান, ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওবায়দুল ইসলাম।
এছাড়াও বিভিন্ন বিভাগের সভাপতি, হলসমূহের প্রভোস্ট, শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরসহ প্রায় পাচঁ হাজার শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানের যৌথ সঞ্চালনা করেন টিএসসিসির পরিচালক অধ্যাপক ড. জাকির হোসেন ও চারুকলা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. কামরুল ইসলাম।
ফটো এক্সিবিশন নিয়ে সংগঠনটির সভাপতি সালাউদ্দিন বলেন, ‘আমাদের ফটো প্রদর্শনীর মাধ্যমে ক্যাম্পাসের ইতিহাস ও জুলাই-আগস্টের গনঅভ্যুত্থানের বিষয়গুলা তুলে ধরেছি। এতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা জুলাই অভ্যুত্থানের বিভিন্ন বিষয় দেখার সুযোগ পাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়কে আলোকচিত্র দ্বারা বিশ্ব দরবারে উন্মোচন করতে চাই।’
উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, ‘তোমাদের সকলের জন্য শুভকামনা। একটি পিছিয়ে পড়া জনপদে অবস্থিত বিশ্ববিদ্যালয়কে শুধু মাত্র শিক্ষা ও গবেষণার মাধ্যমেই আন্তর্জাতিক মানে পরিনত করা যায়। আমি বিশ্বের আধুনিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মডেল অনুসরণ করে কাজ করবো। সকলের পরামর্শ ও অংশীদারের ভিত্তিতে সংস্কারের মাধ্যমে একটি শিক্ষার্থীবান্ধব বিশ্ববিদ্যালয় গড়তে চাই। আমি বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি উন্নয়নের সড়কে নিয়ে আসবো। আগামীদিনের বাংলাদেশ কোনো দলের হবেনা। আগামীর বাংলাদেশে হবে মানুষের বাংলাদেশ, সকলের বাংলাদেশ।’
উল্লেখ্য, ২০১২ সালের ৪ফেব্রুয়ারি ঢাকা থেকে কুষ্টিয়ায় ক্যাম্পাসে যাওয়ার পথে মধ্যরাতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের দাওয়াহ অ্যান্ড ইসলামী স্টাডিজ বিভাগের ছাত্র ও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার ছাত্রশিবিরের সাবেক অর্থ সম্পাদক মো. ওয়ালীউল্লাহ এবং ফিকাহ বিভাগের মেধাবী ছাত্র, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার ছাত্রশিবিরের সাবেক সাংস্কৃতিক সম্পাদক আল মুকাদ্দাসকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পরিচয়ে গ্রেফতার করা হয়। এর পরে তাদের আর খোঁজ পাওয়া যায়নি।
/ইএইচ
মন্তব্য করুন