কুবি প্রতিনিধি: কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) হলসমূহ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধের সিদ্ধান্তকে প্রত্যাখান করে হলে অবস্থান করছে শিক্ষার্থীরা। এদিকে প্রশাসনের সিদ্ধান্তকে প্রত্যাখান করে হলের প্রাধ্যক্ষরা জানিয়েছে, শিক্ষার্থীরা চাইলে হলে থাকতে কোনো বাঁধা নেই।
গতকাল ৩০ এপ্রিল জরুরি সিন্ডিকেট সভা ডেকে বিশ্ববিদ্যালয় এবং হলসমূহ বন্ধ ঘোষণা করে। এবং শিক্ষার্থীদের আজ বিকাল ৪টার মধ্যে হল ত্যাগ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
হলে থাকার প্রসঙ্গে ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের আবাসিক শিক্ষার্থী জয় রায় বলেন, আমরা হল ছাড়ছি না। প্রাধ্যক্ষ স্যারও থাকার পক্ষে। তাছাড়া হলের বেশিরভাগ শিক্ষার্থী এখানে টিউশনি করিয়ে পড়াশোনা করতে হয়। এক্ষেত্রে আমাদের দাবি, পরিবহন ব্যবস্থা যেন অবিলম্বে চালু করা হয়।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের আবাসিক শিক্ষার্থী সামিউল ইসলাম শুভ বলেন, প্রশাসনের এমন অবিবেচনামূলক সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা প্রকাশ করছি। আমরা কোনভাবেই হল ত্যাগ করবো না। অবিলম্বে এমন সিদ্ধান্তকে বাতিল ঘোষণা করা হোক। প্রশাসনিক ঝামেলায় আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা কেন ভুক্তভোগী হবো?
এদিকে আজ হলসমূহ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণার প্রতিবাদে সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল এবং মানববন্ধনে একাত্মতা পোষণ করেছেন কাজী নজরুল হলের প্রাধ্যক্ষ নাসির হোসাইন এবং শেখ হাসিনা হলের আবাসিক শিক্ষক মো. আল-আমিন।
একাত্মতা পোষণ করে নাসির হোসাইন বলেন, বর্তমানে চলমান সংকট সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্তে সর্বোচ্চ পর্যায়ে গিয়ে পৌছেছে। শিক্ষার্থীদের সংকটের মুখেই এরকম সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আমার মনে হয় না, এমন কিছু ঘটেছে। আর কাজী নজরুল হলে কোনরকম অবৈধ অস্ত্র বা টাকা ডুকে নাই। আমার হল খোলা থাকবে। আমার হলের শিক্ষার্থীদের দায়িত্ব আমি নিচ্ছি।
শেখ হাসিনা হলের আবাসিক শিক্ষক আল-আমিন বলেন, আমি দায়িত্ব নিয়ে বলছি, আমার হলে কোনপ্রকার অবৈধ অস্ত্র নেই। আমার হল স্বাভাবিক আছে। আমি শিক্ষার্থীদের বলেছি, তারা তাদের মতো করে হলে থাকতে পারবে। শিক্ষার্থীদের কেউ জোরপূর্বক হল থেকে বের করতে পারবে না।
পরবর্তীতে হল বন্ধের বিষয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ শামসুজ্জামান মিলকী বলেন, এখানে আমাদের হল প্রশাসনের নতুন করে কোন সিদ্ধান্ত নেই। সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্তই এখন পর্যন্ত বহাল রয়েছে। তবে শিক্ষার্থীরা চাইলে হলে থাকতে পারবে।
এই বিষয়ে নওয়াব ফয়জুন্নেসা হলের প্রাধ্যক্ষ বলেন, ‘গতকাল হল বন্ধের বিষয়ে একটি সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে শিক্ষার্থীরা যদি হলে থাকতে চাই তবে আমার মনে হয় না কোন সমস্যা হবে। কারণ এমনিতেও প্রতিটি বন্ধেই হল বন্ধ ঘোষণা হয়। আমি শিক্ষার্থী এবং প্রশাসনের সাথে কথা বলে এই বিষয়ে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নিব।’
শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের প্রাধ্যক্ষ জিয়া উদ্দিন বলেন, হল কেন্দ্রিক কোন ঝামেলা না হওয়ায় হল প্রশাসন হলের শিক্ষার্থীদের বের করে দেয়ার কোন সিদ্ধান্ত নিবে না। তাই শিক্ষার্থীরা চাইলে হলে অবস্থানও করতে পারবে আবার চলেও যেতে পারবে।
এসআই/
মন্তব্য করুন