জাবি প্রতিনিধি: আগামী ১৫ মে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) আসন্ন ডীন নির্বাচনে ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডিন পদে মনোনয়ন বাতিলের বিরুদ্ধে আপিল করেছেন ঐ অনুষদের প্রার্থী ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের অধ্যাপক নীলাঞ্জন কুমার সাহা।
রবিবার (৫ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নূরুল আলম বরাবর রিটার্নিং অফিসারের কার্যক্রমের প্রতিকার চেয়ে দেওয়া এক আবেদন পত্রে এ তথ্য জানা যায়।
লিখিত আবেদনপত্র সূত্রে জানা যায়, নীলাঞ্জন কুমার সাহা বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের আসন্ন ডিন নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে গত ২৯ এপ্রিল মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। তার মনোনয়নপত্রে প্রস্তাবনা করেন ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের অধ্যাপক শেখ আবু তাহের এবং সমর্থন করেন একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক দেবাশীষ সাহা।
তবে প্রার্থী নীলাঞ্জন কুমারের অজ্ঞাতসারে তার প্রস্তাবক শেখ আবু তাহের ডিন হিসাবে একাউন্টিং ও ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের অধ্যাপক মো: সালাহ উদ্দিন রাজীবের মনোনয়ন পত্রে সমর্থক হিসেবে স্বাক্ষর করেন। মনোনয়নপত্র জমাদানের পরে বিষয়টি নীলাঞ্জন কুমার সাহা জানতে পারলে মো: সালাহ উদ্দিন রাজীব আসন্ন ডিন নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসারকে অবহিত করে মনোনয়ন পত্রটি প্রত্যাহারের জন্য বৈধ প্রার্থী তালিকা প্রকাশিত হওয়ার আগেই গত ৩০ এপ্রিল ইমেইলের মাধ্যমে এবং পহেলা মে সশরীরে উপস্থিত হয়ে আবেদনপত্র জমা দেন। তবে সশরীরে এবং লিখিতভাবে আবেদনের পরও সালাহ উদ্দিন রাজীবের মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহার না করে সম্পূর্ণভাবে আইন অমান্য করে প্রার্থীদের অনুপস্থিতিতে মনোনয়নপত্র বাছাই করে চলতি মাসের ২ তারিখে তড়িঘড়ি করে বৈধ প্রার্থীদের তালিকা ঘোষণা করে।
পত্রে বলা হয়, দেশে প্রচলিত আইন অনুযায়ী মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের সময় কোনো ত্রুটি বিচ্যুতি পরিলক্ষিত হলে তা প্রার্থীকে অথবা মনোনীত প্রতিনিধিকে দেখানোর কথা এবং তা প্রতিকারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব।
এতে আরও বলা হয়, রিটার্নিং কর্মকর্তা গত ২৯ এপ্রিল মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এ এ মামুন কর্তৃক প্রস্তাবিত এবং সে সময়ে উপস্থিত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ কর্তৃক সমর্থিত এক প্রস্তাব গ্রহণ করেন। তাঁর প্রস্তাবটি ছিল, মনোনয়নপত্রে কোনো ধরনের ভুল ত্রুটি থাকলে প্রয়োজনে সংশ্লিষ্টদের ডেকে তা প্রতিকার করে দাখিলকৃত মনোনয়নপত্র বৈধ হিসেবে গ্রহণ করতে হবে। এক্ষেত্রে, রিটার্নিং অফিসার আইন এবং সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত কোনোটিই অনুসরণ করেননি। এমনকি এই আপত্তির বিষয়ে তার গৃহীত সিদ্ধান্ত তাদের লিখিত বা মৌখিকভাবেও অবহিত করেননি। ফলে, কী কারণে মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে অথবা আবেদন গ্রহণ করা হয়নি তা অস্পষ্ট।
পত্রে আরও বলা হয়, তফশিল ঘোষণার সময় কিংবা মনোনয়নপত্র দেওয়ার সময় রিটার্নিং অফিসারের পক্ষ থেকে ডিন নির্বাচন সংক্রান্ত বিষয়ে অদ্যাবধি কোনো ধরনের নীতিমালা, আইন বা প্রচলিত নিয়মসমূহের সংকলন লিখিত অথবা মৌখিকভাবে অবহিত করা হয়নি। অন্যদিকে, বৈধতালিকা প্রকাশের আগেই কেউ নিজেকে প্রার্থী হিসেবে পরিচয় দিলে তা রিটার্নিং কর্মকর্তাকে অবজ্ঞা করা অথবা রিটার্নিং কর্মকর্তার ঐ সকল প্রার্থীদের প্রতি পক্ষপাতীত্বের বহিঃপ্রকাশ ঘটায়।
লিখিত আবেদন পত্রে অধ্যাপক নীলাঞ্জন কুমার বিশ্ববিদ্যালয়ের এ সংক্রান্ত সংবিধির ১.২৪ ধারা মোতাবেক উপাচার্যের নিকট প্রতিকার প্রার্থনা করেন এবং অবৈধভাবে বাছাইকৃত প্রার্থী তালিকা বাতিল করে আইনানুগভাবে প্রার্থীদের উপস্থিতিতে মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন করেন। একইসাথে উত্থাপিত অভিযোগ সমূহ আমলে নিয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।
তবে আপিল করার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে অধ্যাপক নীলাঞ্জন কুমার সাহা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নূরুল আলমের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কেউই ফোন রিসিভ করেননি।
এসআই/
মন্তব্য করুন