এডুকেশন টাইমস
৪ জুলাই ২০২৪, ৪:৪১ অপরাহ্ণ
অনলাইন সংস্করণ

সরকারি চাকরিতে কোটা এল যেভাবে

ছবি: সংগৃহীত

এডুকেশন টাইমস ডেস্ক: সরকারি চাকরিতে কোটার বিষয়টি নতুন নয়। স্বাধীনতার পর নির্বাহী আদেশে সরকারি চাকরিতে কোটাপদ্ধতি চালু করা হয়। সংবিধানের আলোকে শুরু থেকেই বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে নিয়োগে কোটা রয়েছে।

সংবিধানের ২৯ এর ৩(ক) উপধারায় বলা আছে, “নাগরিকদের যে কোনো অনগ্রসর অংশ যাহাতে প্রজাতন্ত্রের কর্মে উপযুক্ত প্রতিনিধিত্ব লাভ করিতে পারেন, সেই উদ্দেশ্যে তাহাদের অনুকূলে বিশেষ বিধান-প্রণয়ন করা হইতে রাষ্ট্রকে নিবৃত্ত করিবে না।”

১৯৭২ সালে মুক্তিযোদ্ধাদের সরকারি চাকরিতে নিয়োগের জন্য ৩০ শতাংশ কোটা সংরক্ষণ করা হয়। ওই সময় ৪০ শতাংশ জেলা কোটা, ১০ শতাংশ যুদ্ধবিধ্বস্ত নারী কোটা এবং ২০ শতাংশ মেধা কোটা ছিল। ১৯৭৬ সাল পর্যন্ত ২০ শতাংশ পদ মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ করা হতো। বাকি পদ কোটায় নিয়োগ হতো। ১৯৭৬ সালে জেলা কোটা ২০ শতাংশ কমিয়ে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ ৪০ শতাংশে বাড়ানো হয়।

১৯৮৫ সালে মেধা কোটা ৪৫ শতাংশ, নারী কোটা ১০ শতাংশ, জেলা কোটা ১০ শতাংশ, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী কোটা ৫ শতাংশ এবং মুক্তিযোদ্ধার জন্য ৩০ শতাংশ কোটা নির্ধারণ করা হয়।

পরবর্তীতে ১৯৯৭ সালেই এই কোটা ব্যবস্থাকে আরও সম্প্রসারিত করে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের এর আওতাভুক্ত করা হয়। এর মধ্যে যোগ হয় এক শতাংশ প্রতিবন্ধী কোটা।

১৯৭৭ সালে তৎকালীন পে ও সার্ভিস কমিশনের একজন সদস্য বাদে সবাই সরকারি নিয়োগে কোটাব্যবস্থার বিরোধিতা করেন।

২০১৮ সাল পর্যন্ত সরকারি চাকরিতে মোট ৫৬ শতাংশ কোটা প্রচলিত ছিল। এর মধ্যে ৩০ শতাংশ বীর মুক্তিযোদ্ধা (পরে বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও নাতি-নাতনি) কোটা, ১০ শতাংশ নারী কোটা, ১০ শতাংশ জেলা কোটা এবং ৫ শতাংশ ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী কোটা। এ ছাড়া ১ শতাংশ পদ প্রতিবন্ধী প্রার্থীদের দিয়ে পূরণের নিয়ম চালু হয়। ওই বছর কোটা সংস্কার করে ১০ শতাংশ করার দাবিতে শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীরা বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের ব্যানারে আন্দোলনে নেমেছিলেন। আন্দোলনের মুখে একপর্যায়ে সরকার প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে পুরো কোটাব্যবস্থাই বাতিল করে। ওই বছরের ৪ অক্টোবর কোটা বাতিলবিষয়ক পরিপত্র জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

পরে ২০২১ সালে সেই পরিপত্রের মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের অংশটিকে চ্যালেঞ্জ করে কয়েকজন বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান রিট করেন। ৫ জুন এই রিটের রায়ে পরিপত্রের ওই অংশ অবৈধ ঘোষণা করা হয়। এর পর থেকে আবার আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’–এর ব্যানারে ১ জুলাই থেকে টানা আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীরা।

আন্দোলনকারীদের দাবির মধ্যে আরও রয়েছে পরবর্তী সময়ে সরকার কোটাব্যবস্থা নিয়ে কোনো পদক্ষেপ নিতে চাইলে ২০১৮ সালের পরিপত্র বহাল রেখে কমিশন গঠন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি চাকরিতে সব গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দেওয়া; সংবিধান অনুযায়ী অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনা করা; চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটাসুবিধা একাধিকবার ব্যবহারের সুযোগ বন্ধ করা; কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্য পদগুলোতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দেওয়া এবং দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া।

এসআই/

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

পলিটেকনিক-বুটেক্স শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ, আহত ২৮ জন ঢামেকে

বুটেক্স ও ঢাকা পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ

জাবিতে প্রাণরসায়ন ছাত্র সংসদের ভিপি বনি আমিন, জিএস ইমন

শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষে রণক্ষেত্র পুরান ঢাকা

ববি শিক্ষার্থী রবিনের ‘ষোল আনা’

ওসির কথায় উজ্জীবিত হয়ে থানায় পিস্তল নিয়ে এলো চার শিশু

কুরআন দিয়ে নবীন শিক্ষার্থীদের বরণ বেরোবি দাওয়াহ সোসাইটির 

যবিপ্রবিতে বৈদ্যুতিক গাড়ি নিয়ে রিসার্চ সেলের সেমিনার

২৩ দিনে রেমিট্যান্স এলো ১৭২ কোটি ৬৩ লাখ ডলার

নিয়োগ দিচ্ছে আকিজ বেকারস, থাকছে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা

১০

বিভিন্ন কলেজ শিক্ষার্থীদের যৌথ আক্রমণ, সোহরাওয়ার্দী কলেজে ব্যাপক ভাঙচুর, পরীক্ষা স্থগিত

১১

ইবিতে হাতেনাতে আটক দুই চোর, পুলিশে সোপর্দ

১২

পুরো সোহরাওয়ার্দী কলেজ এখন ধ্বংসস্তূপ: অধ্যক্ষ কাকলি

১৩

ইবির বঙ্গবন্ধু হলের পুকুরে মাছের পোনা অবমুক্ত করলেন উপাচার্য 

১৪

অভিজ্ঞতা ছাড়াই ১৮,০০০ বেতনে চাকরি জেন্টল পার্কে, যোগ্যতা এইচএসসি পাশ

১৫

খুলনা জেলা স্টেডিয়ামে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার প্রতিবাদে খুবি শিক্ষার্থীদের সংবাদ সম্মেলন

১৬

আমাকে স্যার বলার দরকার নেই, আমি আপনাদের ভাই: নাহিদ ইসলাম

১৭

২ দিনের আল্টিমেটাম শেষে জাবিতে রেজিস্ট্রার ভবনে তালা

১৮

ইবিতে জমিয়তে তালাবায়ে আরাবিয়ার ৯৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন

১৯

পবিপ্রবিতে র‍্যাগিংয়ের শিকার হয়ে ৩ শিক্ষার্থী অসুস্থ, অভিযুক্ত ৭ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার

২০