রাবি প্রতিনিধি: কোটা সংস্কার আন্দোলনে শুরু থেকেই নিজেদের মতো করে আন্দোলন করছিল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীরা। তবে শুরু থেকেই নমনীয় আন্দোলন করায় সমন্বয়কদের উপর ক্ষিপ্ত ছিল আন্দোলনরত সাধারণ শিক্ষার্থীদের একটি বড় অংশ।
আন্দোলনকারীদের দাবি ছিল ঢাকার সাথে সমন্বয় করে আন্দোলন করা। তবে রাবি সমন্বয়করা একেকদিন একেক কর্মসূচি দিয়েছেন। কোনোদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আবার কোনোদিন মেইট গেইটের সামনে আধাঘন্টা অবস্থান কর্মসূচি। যেটা ছিল না সারাদেশের আন্দোলনের সাথে সমন্বয়।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে রাবির আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের পেইজে ‘কোটা পুনর্বহাল করা চলবে না (রাবিয়ান)’ শিক্ষার্থীদের একের পর এক ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায়। আরিফ মাহমুদ নামে একজন লিখেছেন, আপনারা চুড়ি পড়ে বসে থাকেন, আন্দোলনে সামনে থেকে স্লোগান দেওয়া মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, এই আন্দোলন বর্জন করলাম, সমন্বয়ের সমস্যা। যারা দায়িত্বে আছে তাদের অগোছালো কর্মসূচি।
এদিকে কোটা সংস্কার আন্দোলনে মেহেদী সজিব নামে রাবির এক সমন্বয়ক পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন, তিনি লিখেছেন, ‘আমি মেহেদী সজীব। কোটাপদ্ধতি সংস্কার আন্দোলন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলাম। শুরু থেকে রাবিতে আমরা কয়েকজনে সমন্বয় করে আন্দোলন করছিলাম। শেষে মূল সমন্বয়কের সংখ্যাটা দাঁড়ায় চারজনে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য আমার সাথে সমন্বয় না করেই বাকি সমন্বয়কবৃন্দ দশ সদস্যবিশিষ্ট সমন্বয়ক পরিষদ গঠন করেন। যা থেকেই মূলত সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে সমন্বয়কদের একটা দূরত্ব সৃষ্টি হওয়ার সূত্রপাত ঘটে।
এর পরপরই আমাদের ব্যানার নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মনে প্রশ্ন জাগে। প্রায় সারাদেশে এক ব্যানারে আন্দোলন হচ্ছে, অথচ রাবিতে কেন ভিন্ন ব্যানারে হচ্ছে? যদিও এ নিয়ে আমার আগে থেকেই আপত্তির জায়গা সমন্বয়কদেরকে জানিয়েছিলাম। তারা বিষয়টি আমলে না নিয়ে নিজেদের মতামতকেই বেশি প্রাধান্য দিয়েছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে যেখানে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ ব্যানারে আন্দোলন হচ্ছিল। সেখানে সারাদেশের সাথে সুষ্ঠুভাবে সমন্বয় করতে না পারার কারণে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আলাদাভাবে ‘কোটাপদ্ধতি সংস্কার আন্দোলন’ ব্যানারে আন্দোলনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এমতাবস্থায় রাবি’র সাথে সারাদেশের সঠিকভাবে সমন্বয় হচ্ছে না বলেই সাধারণ শিক্ষার্থীরা মনে করছে। শিক্ষার্থী সমাজের মনোভাবকে শ্রদ্ধা করে আমি উক্ত কোটাপদ্ধতি সংস্কার আন্দোলন থেকে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিলাম।
এসআই/
মন্তব্য করুন