চুয়েট প্রতিনিধি :
দেশজুড়ে চলছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। উক্ত আন্দোলনে অংশ নিতে গিয়ে দেশজুড়ে অসংখ্য শিক্ষার্থী হতাহত ও গ্রেফতারের ঘটনা ঘটেছে। এরই প্রেক্ষিতে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হতাহত শিক্ষার্থীদের ন্যায়বিচার প্রাপ্তি এবং চুয়েট (চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়) সহ অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আটককৃত শিক্ষার্থীদের নি:শর্ত মুক্তির দাবিতে আজ ১লা আগস্ট বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে চুয়েট শিক্ষক সমিতির আয়োজনে এক মৌনমিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
উক্ত মৌনমিছিলটি উপাচার্য অফিসের সামনে থেকে দুপুর ১২.০০ টার দিকে শুরু হয়। উপাচার্য অফিসের সামনে থেকে শুরু হয়ে চুয়েট প্রধান ফটক পেরিয়ে কাপ্তাই মহাসড়কে কিছু সময় অবস্থান করে আবার উপাচার্য অফিসের সামনে এসে শেষ হয়। এর পর অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা।
এ ব্যাপারে চুয়েট শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. জি এম সাদিকুল ইসলাম বলেন, “রাতের আঁধারে অহিংস চুয়েট শিক্ষার্থীদের হল থেকে বের করে দেওয়া অবিবেচনাপ্রসূত, অমানবিক। সারাদেশে কর্তাব্যক্তিদের এরুপ অদুরদর্শী সিদ্ধান্ত পরিস্থিতি জটিল করছে। শিক্ষার্থীদের হত্যাকারীদের বিচারসহ সকল যৌক্তিক দাবীতে চুয়েট শিক্ষক সমাজের সমর্থন সর্বদা অবিচল থাকবে”।
এছাড়াও, সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আরাফাত রহমান তার বক্তব্যে বলেন, “একটি অহিংস আন্দোলন যারা হত্যা, দমন-নিপীড়ন এবং হয়রানীমূলক গ্রেফতারের মাধ্যমে শান্তিপুর্ন দেশে অরাজকতা সৃষ্টি করেছে, তাদেরকে নিরপেক্ষ তদন্তকারী সংস্থা এবং বিচার ব্যাবস্থার মাধ্যমে বিচারের আওতায় আনতে হবে এবং আর কোন শিক্ষার্থীদেরকে হয়রানিমূলক গ্রেফতার করা যাবে না”
বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও পরিকল্পনা বিভাগের অধ্যাপক ড.মো. রাশিদুল হাসান জানান, দেশের এমন পরিস্থিতিতে শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে শিক্ষক সমিতির সকল সদস্য মিলে মৌন মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। দেশজুড়ে আন্দোলনে যারা আহত ও নিহত হয়েছে আমরা তাদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাই। এছাড়াও এগুলোর যাতে নিরপেক্ষ সংস্থর মাধ্যমে সুষ্ঠু নিরপেক্ষ তদন্ত হয় এবং আটককৃত শিক্ষার্থীদের মুক্তি দেওয়া হয় আমারা সেই দাবী জানাচ্ছি।
উল্লেখ্য, গত ০৫ মে সরকারি প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধাসহ অন্য কোটা বাতিল করে জারি করা পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করেছেন উচ্চ আদালত। ফলে সরকারি চাকরিতে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ মোট ৫৬ শতাংশ কোটা বহাল থাকছে। বিষয়টিকে বৈষম্য আখ্যা দিয়ে এরই প্রতিবাদে দেশজুড়ে কোটা সংস্কার আন্দোলন করেছেন শিক্ষার্থীরা। পরবর্তীতে, আপিল বিভাগে এই রায় বাতিল করা হয় এবং মেধার ভিত্তিতে ৯৩%, প্রতিবন্ধী ও ক্ষুদ্র জাতিসত্তা ১% করে এবং মুক্তিযোদ্ধা কোটা
৫% করে পরিপত্র জারি করা হয়। উক্ত আন্দোলনে অংশ নিতে গিয়ে অনেক শিক্ষার্থী আহত ও নিহত হন। এরই প্রতিবাদে আজ চুয়েটে মৌন মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
এএকে /
মন্তব্য করুন