রাবি প্রতিনিধি:
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও সহকারী প্রক্টর ড. পুরনজিত মহালদারকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তিনি শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে ২০১৬ সাল থেকেই গেস্ট টিচার হিসেবে ক্লাস নিয়ে আসছিলেন।
গতকাল (২ আগস্ট) এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউ’র সাধারণ শিক্ষার্থীরা এ ঘোষণা দেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশে চলমান শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কারের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের উপর হামলা-নির্যাতনের বিরুদ্ধে গত ১ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের নিপীড়নবিরোধী শিক্ষক সমাজের ব্যানারে সচেতন শিক্ষকবর্গের সমাবেশে উপস্থিত শিক্ষার্থীদের উপর ন্যক্কারজনক হামলার ছবি ও ভিডিও সারাদেশে সর্বস্তরের মানুষের কাছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছে। সেই হামলার পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এবং ছাত্র উপদেষ্টা সাংবাদিকদের ব্রিফ করার সময় পাশে থেকে তার বক্তব্য হামলাকারীদের পক্ষে এবং শিক্ষার্থীবিরোধী; যা পরবর্তীকালে আন্দোলন ও ছাত্র অসন্তোষকে উস্কে দিয়েছে।
এছাড়াও শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে অতিথি (গেস্ট) শিক্ষক হিসেবে একাধিক কোর্সে পাঠদানের দায়িত্ব পালনকালে একাধিক কোর্সের শিক্ষার্থীদের সাথে অসদাচরণ, নানাভাবে হেনস্তা ও অসহযোগিতারও অভিযোগ করেছে শিক্ষার্থীরা।
বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থীরাও একই দাবি তুলেছেন বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
জানতে চাইলে একাধিক শিক্ষার্থী জানান, বিভিন্ন সময় বিশ্ববিদ্যালয়ে তাকে মোবাইল হাতে ভিডিও লাইভ করা ছাড়া কোনো ভূমিকা পালন করতে দেখা যায় না। তাছাড়া আন্দোলন চলাকালীন তিনি হামলাকারীদের পক্ষ নিয়ে মৌনতা অবলম্বন করেছেন। শ্রেণিকক্ষেও শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সময় হেনস্তা করে থাকেন। এমন একজন ব্যক্তিকে আমরা শিক্ষক হিসেবে মানতে পারি না।
তারা আরও বলেন, তিনি সহকারী প্রক্টরের দায়িত্বও ঠিকভাবে পালন করেন না। তিনি রাতের আঁধারে নারী শিক্ষার্থীদের ও কাপলদের লাইট মারেন এবং নারী শিক্ষার্থীদের সাথে খারাপ আচরণ করেন। অনেক শিক্ষার্থীকে মারতেও দেখেছেন তারা। একজন সহকারী প্রক্টরের কাজ কখনো এমন হতে পারে না।
নিজের অবস্থান পরিষ্কার করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটা পোস্ট শেয়ার করেছেন ড. পুরনজিত মহালদার। ওই পোস্টে তিনি লিখেছেন, আমি বরাবরই শিক্ষার্থীদের সাথে ছিলাম, এখনও আছি। ১৬ জুলাই বাংলা বিভাগের প্রাক্তন ছাত্র মিনারুল ইসলাম মেঘ গ্রেপ্তার হলে আমি রাত ১টায় জানতে পেরে থানায় যাই। ওসি না থাকায় পরের দিন সকালে যেতে বলেন। পরেরদিন সকালে থানায় যাবার মুহূর্তে ওসিকে ফোন দিলে বলেন যে, ওনাকে তো চালান দেওয়া হয়ে গেছে। ১৬ জুলাই রাতে আমার বাসাতে ৫ জন ডিনার করে। হঠাৎ করে হল বন্ধ হওয়ায় বিভাগের কয়েকজন ছাত্রকে বাড়ি যেতে টাকা দিয়েছি।
যেদিন মো. আব্দুল হালিম (একজন শিক্ষার্থী) গ্রেফতার হয় তার আগের দিন রাতে আমার মোবাইলের ডিসপ্লে নষ্ট হয়। যেটা ঠিক হয় (আলীর দোকান, স্টেশন বাজার) পরের দিন। তাই আমার সাথে যারা যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছিলেন আমি মোবাইলে কিছু দেখতে না পারায় যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।
তিনি আরো লিখেছেন, পরে যখন বিভাগের শিক্ষকরা গিয়েছিলেন আমি সেটাও জানতাম না। (দিলিপদা চেয়ারম্যান স্যার বিভাগে ডেকেছেন বলেছিলেন, কারণ বলেননি। আমি বলেছিলাম আমার দেরি হতে পারে)। এগুলো আমার বলার দরকার ছিল না। কিন্তু আমার মনে হচ্ছে আমাদের ছাত্রদের কেউ ভুল তথ্য দিতে পারে। যাইহোক আবারও বলছি শিক্ষার্থীদের সাথে আমি ছিলাম। তাদের যেকোনো প্রয়োজনে সব সময় আছি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. আসাবুল হক বলেন, এ বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই।
আরএন/
মন্তব্য করুন