এডুকেশন টাইমস ডেস্ক: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সরকার পতনের এক দফা আন্দোলন ঘিরে রংপুর নগরীতে আন্দোলনকারী ও ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষে ৪ জন নিহত হয়েছে। তারা সবাই ক্ষমতাসীন দলে ও তাদের অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মী। তারা হলেন- মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা, পশুরাম থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর হারাধন রায়সহ ৪ আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ কর্মী নিহত হয়েছেন।
এছাড়াও সংঘর্ষে আহত হয়েছেন ৮ সাংবাদিকসহ শতাধিক। গুরুতর আহত অবস্থায় ৯ জনকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
কাউন্সিলর হারাধন রায় বাদে নিহত অন্য তিনজন হলেন- যুবলীগ কর্মী খসরু, মাসুম (৩১) এবং অন্যজনের পরিচয় জানা সম্ভব হয়নি। এর মধ্যে খসরুর বাড়ি রংপুর নগরীর গুড়াতিপাড়া এলাকায়। মাসুমের বাবার নামসহ বিস্তারিত নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এছাড়া নিহত আরেকজনের নাম-পরিচয় এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
অপরদিকে, বদরগঞ্জ উপজেলা সদরে রংপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য ডিউক চৌধুরী, বদরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র টুটুল চৌধুরী, উপজেলা যুবলীগ নেতা ও উপজেলা চেয়ারম্যান ফজলে রাব্বি সুইট, যুবলীগ নেতা পুলিন চৌধুরীর বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও মালামাল লুটের ঘটনা ঘটেছে।
এছাড়াও মিঠাপুকুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) কার্যালয়, সাবেক এমপি আশিকুর রহমানের বাড়িসহ বেশ কয়েকটি সরকারি অফিস ভাঙচুর করা হয়েছে। পীরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে আগুন, প্রেসক্লাবের সামনে রাখা ১১টি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও নগরজুড়ে ব্যাপক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে।
এর আগে, সকাল থেকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা রংপুর নগরীর টাউন হল চত্বরে সমবেত হতে থাকেন। অপরদিকে ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতাকর্মীরা নগরীর জাহাজ কোম্পানি এলাকায় অবস্থান নেন। বেলা ১১টার দিকে উভয়পক্ষ পরস্পরের দিকে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। একপর্যায়ে সংঘর্ষ সিটিবাজার থেকে শুরু করে জাহাজ কোম্পানি এলাকা পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার এলাকাব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে পিস্তলসহ দেশীয় অস্ত্র ব্যবহার করতে দেখা গেছে। দুপুর ২টা পর্যন্ত সংঘর্ষ অব্যাহত ছিল।
সংঘর্ষ চলাকালে একুশে টিভির ক্যামেরাপারসন আলী হায়দার রনি, এনটিভির ক্যামেরাপারসন আরমানসহ ৮ সাংবাদিককে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করা হয়েছে। সাংবাদিক পরিচয় পেলেই এবং ক্যামেরা বা মোবাইল ফোনে ছবি নিতে দেখলেই মারধরের শিকার হতে হয়েছে বলে জানিয়েছেন আহত সংবাদকর্মীরা।
২ ঘণ্টাব্যাপী চলা সংঘর্ষে শতাধিক শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ-যুবলীগের বহু নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে ৯ জনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সংঘর্ষ চলাকালে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাউকেই দেখা যায়নি।
এসআই/
মন্তব্য করুন