জাবি প্রতিনিধি:
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) মাস্টারপ্ল্যানসহ চার দফা দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের নেতাকর্মীরা। রবিবার (২৪ মার্চ) দুপুর ১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মুরাদ চত্বর থেকে শুরু হয়ে মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে বটতলায় এসে শেষ হয়। সেখানে সমাবেশ করেন আন্দোলনকারীরা।
অন্যান্য দাবিগুলো হলো— ছাত্র ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দের বহিষ্কারাদেশ বাতিল, বিভাগগুলোকে প্রাপ্য টাকা বুঝিয়ে দিয়ে শিক্ষার্থী কল্যাণ ফি বাতিল করা, নতুন হল খুলে দিয়ে মেয়াদ উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের হল থেকে বের করা এবং মাদক সিন্ডিকেট নির্মূল করা।
এসময় ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের সহসভাপতি আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৪৮ ব্যাচের শিক্ষার্থী আশফার রহমান নবীন বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল সংকটের মূলে মাস্টারপ্ল্যানবিহীন উন্নয়ন দাবি করে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টারপ্ল্যানবিহীন উন্নয়নের ফলেই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণপ্রকৃতি আজ ধ্বংসের মুখে। ফলে আজ আমরা শীতকালেও আগের মতো আর অতিথি পাখি দেখতে পাই না। শিক্ষার্থীরা আজ মাঠে খেলতে পারছে না, তারা জড়িয়ে পড়ছে নানা অবৈধ কর্মকাণ্ডে, যা আমাদের এই বিশ্ববিদ্যালয়ে সামগ্রিকভাবে খারাপ প্রভাব ফেলছে। পরিপূর্ণ মাস্টারপ্ল্যান ছাড়া আর কোনো ভবন বিশ্ববিদ্যালয়ে হতে দেয়া হবে না। অটোমেশনের আওতায় বিশ্ববিদ্যালয়কে আনতে হবে। পাশাপাশি অমর্ত্য-ঋদ্ধের বিরুদ্ধে যে প্রহসনের বহিস্কারাদেশ প্রদান করা হয়েছে তা অতি দ্রুত বাতিল করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আজ প্রায় দুই মাস পেরিয়ে গেলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এখনো অবৈধ শিক্ষার্থীদের হল থেকে বের করতে পারেনি। প্রশাসনকে অতি দ্রুতই সকল মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের হল থেকে বের করে বৈধ শিক্ষার্থীদের সিট বুঝিয়ে দেয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। পাশাপাশি নতুন দুইটি হল অনতিবিলম্বে খুলে দেয়ার দাবি জানাচ্ছি।’
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট জাবি শাখার সংগঠক সজীব আহমেদ বলেন, ‘প্রশাসন নিপীড়নের বিরুদ্ধে আন্দোলন করায় আমাদের যে দুজন নেতাকে বহিস্কার করেছে, তা প্রহসন ছাড়া কিছুই না। আমরা চাই দ্রুত এই সিদ্ধান্ত বাতিল করে তাদেরকে ক্লাসে ফিরিয়ে আনা হোক। সেই সাথে ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি ফি এর সাথে অতিরিক্ত যে ৬ হাজার টাকা ধার্য করে তারা প্রমাণ করেছে তারা বিশ্ববিদ্যালয়কে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে চায়। প্রশাসনের উচিত শিক্ষার্থীদের অতিরিক্ত অর্থচাপ না দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উচিত নিয়মিতভাবে বিভাগগুলোকে টাকা দেয়া। দ্রুত সময়ে প্রশাসনের উচিত এই সিদ্ধান্ত বাতিল করা।’
প্রসঙ্গত, গত ২২ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটে নতুন কলা ভবনের দেয়ালে অঙ্কিত বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি মুছে গ্রাফিতি অঙ্কন করা ছাত্র ইউনিয়ন (একাংশের) সভাপতি অমর্ত্য রায় এবং সাধারণ সম্পাদক ঋদ্ধ অনিন্দ্যকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়। বহিষ্কারের আদেশের বিরুদ্ধে করা রিটের শুনানি শেষে বিচারক তাদের উভয়কে পরীক্ষায় বসার অনুমতি প্রদান করে এবং বহিষ্কারাদেশ কেন অবৈধ নয়, তা জানতে চেয়ে চিঠি দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে।
এএআর/
মন্তব্য করুন