শাবিপ্রবি প্রতিনিধি: দীঘিনালায় সাম্প্রদায়িক হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) বিকেল চারটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তারা।
এসময় তারা বলেন, গত ১৮ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়ি সদরের নোয়াপাড়া এলাকায় ১৪ টির অধিক চুরির মামলা এবং ২ টি মাদক মামলার আসামি মো. মামুন মোটরসাইকেল চুরি করে পালানোর সময় বাইক অ্যাকসিডেন্ট হয় এবং জনগণের হাতে গণপিটুনিতে আহত হয় । আহত অবস্থায় হাসপাতালে নেয়ার পর সে মারা যায়। এই ঘটনাকে পাহাড়ের সেটেলার বাঙ্গালিরা সাম্প্রদায়িক হিসেবে নিয়ে খাগড়াছড়ি সদরের মধুপুরে হামলা চালানোর চেষ্টা করে। কিন্তু স্থানীয় পাহাড়ি এবং প্রশাসনের বাধার মুখে বাঙ্গালিরা পিছু হটে।
একই ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরিকল্পিত ভাবে গতকাল ১৯ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়ির দীঘিনালা লারমা স্কয়ারে সেটেলার বাঙালিদের প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে স্থানীয় আদিবাসীদের উপর সাম্প্রদায়িক হামলা শুরু হয়। এ হামলায় পাহাড়ি আদিবাসীদের ঘরবাড়ি এবং ৫০ এর অধিক দোকানপাটে জিনিসপত্র লুটপাট এবং পুড়িয়ে দেয়া হয় । এই সময় প্রশাসন নীরব ভূমিকা পালন করে । যার কারণে অনেক পাহাড়ি আদিবাসীরা ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয় এবং অর্ধ শতাধিক পাহাড়ি আহত হয়। এমন সাম্প্রদায়িক হামলার প্রেক্ষিতে পাহাড়ি আদিবাসীরা নিরাপত্তাহীনতায় ঘরবাড়ি ছেড়ে জঙ্গলে নিরাপদ অবস্থান নিতে বাধ্য হয়। এর আগেও ২০১৭ সালে মোটরসাইকেল ছিনতাইয়ে হত্যা ও অপরাধমূলক ঘটনাকে সাম্প্রদায়িক হিসেবে নিয়ে রাঙ্গামাটির লংগদু উপজেলায় পাহাড়িদের উপর সাম্প্রদায়িক হামলা হয়েছিল। একই সাথে গভীর রাতে খাগড়াছড়ি সদরের নারানখাইয়া এলাকায় শান্তিপূর্ণ অবস্থায় টহল থাকা পাহাড়িদের উপর খাগড়াছড়ি সদরের নারানখাইয়া এলাকায় সেনাবাহিনীর ওপেন ফায়ার গুলিতে ১ জন নিহত এবং ১০ জনের অধিক আহত হয়। আজও রাঙ্গামাটির বন রুপায় আদিবাসীদের শান্তিপূর্ণ মিছিলের উপর বাঙালি সেটেলার দ্বারা হামলা হয়। পাহাড়ের মানুষ এখন নিরাপত্তাহীনতায় আছে। আমরা এসব সাম্প্রদায়িক হামলা , সেনাবাহিনীর আক্রমণ করা এবং মব জাস্টিস এর বিরুদ্ধে আমরা তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
এ সময় শিক্ষার্থীরা পাঁচ দফা দাবিও তুলে ধরেন। শিক্ষার্থীদের দাবি সমূহ হলো
১) পাহাড়ে সাম্প্রদায়িক হামলার বিচার করতে হবে।
২) পাহাড়ের আদিবাসীদের ওপর এই নেক্কার জনক ঘটনার সময় প্রশাসনের নীরব ভূমিকার জবাবদিহি দিতে হবে।
৩) সাম্প্রদায়িক হামলায় ক্ষতি গ্রস্থ পরিবারদের ক্ষতি পূরণ প্রদান করতে হবে।
৪) পার্বত্য শান্তি চুক্তি বাস্তবায়ন করে পাহাড়ের সমস্যা সমাধান করতে হবে।
৫) সেনা শাসন তুলে পাহাড়েও সমতলের ন্যায় প্রশাসনিক শাসন ব্যবস্থা চালু করতে হবে।
এএকে /
মন্তব্য করুন