কুবি প্রতিনিধি: কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) ‘শহীদ আব্দুল কাইয়ুম স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্ট ২০২৪’ এ পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগ বনাম গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের মধ্যকার খেলায় দুই দলের খেলোয়াড় ও দর্শকদের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এ নিয়ে দুই দলের অধিনায়ক প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন চার সদস্যের কমিটি গঠন করেছে।
তদন্ত কমিটি আগামী ৩ কার্যদিবসের মধ্যে প্রশাসনের কাছে রিপোর্ট জমা দিবেন। এছাড়া তদন্ত চলাকালীন সময়ে দুই বিভাগের খেলাই স্থগিত থাকবে।
বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো: মজিবুর রহমান মজুমদার স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশ থেকে বিষয়টি জানা যায়।
৪ সদস্যের তদন্ত কমিটিতে আহ্বায়ক হিসেবে আছেন ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ড. এম এম শরীফুল করিম ও সদস্য সচিব হিসেবে আছেন সহকারী প্রক্টর মো: সিদ্দিকুর রহমান। এছাড়া সদস্য হিসেবে আছেন পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক ড. দুলাল চন্দ্র নন্দী, প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সোহরাব উদ্দিন।
তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. এন এম শরীফুল করিম বলেন, ‘আমি চিঠি পেয়েছি। তিন কার্যদিবসের মধ্যে আমরা রিপোর্ট বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে জমা দিয়ে দিব।’
এর আগে এই মারামারির ঘটনায় দুই বিভাগ থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে। লিখিত অভিযোগে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ফুটবল দলের অধিনায়ক গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী, খেলোয়াড়দের বিচার চেয়েছে আবার গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ফুটবল দলের অধিনায়ক পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের খেলোয়াড়, শিক্ষার্থীদের বিচার চেয়েছে।
পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ফুটবল দলের অধিনায়ক নাঈম আহমেদ অভিযোগপত্রে লিখেন, গতকাল সাড়ে তিনটায় পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের সাথে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ফুটবল খেলা অনুষ্ঠিত হয়। খেলা চলাকালীনসময় শেষার্ধের শেষ পর্যায়ে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষর্থীরা তাদের গ্যালারী ছেড়ে এসে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের উপর অতর্কিত হামলা করে এবং হামলাকারীদের অন্যতম ও প্রধান ২জন খেলোয়াড় (৫-নং ও ১২-নং জার্সি যথাক্রমে রিফাত ও জিসান) কিল, ঘুষি ও চড় মেরে পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের ৪ জন খেলোয়াড়কে আহত করে।
অন্যদিকে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ফুটবল দলের অধিনায়ক আহমেদ মিনার অভিযোগপত্রে ম্যাচে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অখেলোয়াড়সুলভ আচরণগুলো তুলে ধরে সুষ্ঠু বিচার চান। তার উল্লিখিত অখেলোয়াড়সুলভ আচরণগুলো হলো― পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের দর্শকরা তাদের জন্য নির্ধারিত গ্যালারিতে (উত্তর পাশে) অবস্থান না করে দক্ষিণ পাশে সাংবাদিকতা বিভাগের জন্য নির্ধারিত গ্যালারির সামনে আমাদের দর্শকদের পাশে অবস্থান করে এবং বিভিন্ন আক্রমণাত্মক ও উস্কানিমূলক মন্তব্য করতে থাকে।
মিনার অভিযোগপত্রে লিখেন, মাঠে বিশৃঙ্খলার উদ্দেশ্যে ১৬ সদস্যের স্কোয়াডের বাহিরের প্লেয়ারকে নিয়ম ভঙ্গ করে মাঠে নামিয়ে দিলে ম্যাচ রেফারি তা প্রতিহত করে।
এছাড়া পদার্থবিজ্ঞানের খেলোয়াড়দের ব্যাপারে সাংবাদিকতা বিভাগের অধিনায়ক আরো অভিযোগ তুলেন, ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধের শেষদিকে বল পায়ে রাখাকে কেন্দ্র করে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ৬ নং ও ৮ নং জার্সি পরিহিত খেলোয়াড় সর্বপ্রথম আমাদের প্লেয়ার রিফাতকে সজোরে ধাক্কা ও কিল ঘুষি দেয় যার ভিডিও ফুটেজ আমাদের কাছে রয়েছে। এতে আমাদের প্লেয়ার প্রতিবাদ জানালে তাদের প্লেয়ার ও দর্শকরা আমাদের খেলোয়াড় ও দর্শকদের উপর আক্রমন শুরু করে। অতঃপর আমাদের গ্যালারিতে থাকা দর্শকদের সাথে হাতাহাতি শুরু হয়ে গেলে আমাদের প্লেয়ার জিসান প্রতিহত করতে গিয়ে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে। এসময় তারা আমাদের খেলোয়াড় ও দর্শকদের মারধর করে। এসকল অভিযোগের সকল তথ্য প্রমাণ এবং ভিডিও ফুটেজ আমাদের কাছে আছে।
এ ব্যাপারে প্রক্টর অধ্যাপক ড. আবদুল হাকিম বলেন, ‘দুই পক্ষই অভিযোগ দিয়েছিল। আমরা প্রশাসনকে জানিয়েছি। প্রশাসন তদন্ত কমিটি করে দিয়েছে। বাকি কথা, রিপোর্ট প্রকাশের পর বলা যাবে।’
এসএস/
মন্তব্য করুন