জবি প্রতিনিধি:
পুরান ঢাকার ন্যাশনাল মেডিকেল ইনস্টিটিউট হাসপাতালে যাত্রাবাড়ীর ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থী অভিজিত হাওলাদার ভুল চিকিৎসায় মারা যাওয়া অভিযোগে ও বিচারের দাবিতে
ঘটনার দুদিন পর তার সহপাঠীরা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজে প্রতিবাদ জানাতে আসলে কবি নজরুল সরকারি কলেজ ও সোহরাওয়ার্দী কলেজের শিক্ষার্থীসহ স্থানীয়রা তাদের ওপর হামলা চালায়।
রবিবার (২৪ নভেম্বর) বিচারের দাবিতে কবি নজরুল সরকারি কলেজ ও সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের শিক্ষার্থীদের সাথে ঢাকায় ও তার আশেপাশের ৩০টির ও অধিক কলেজের প্রায় ৫ হাজার শিক্ষার্থী সম্মিলিতভাবে কবি নজরুল সরকারি কলেজ ও সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজে হামলা চালায়।
পরবর্তীতে দুই পক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। এতে এখন পর্যন্ত ইত্তেফাকের মাল্টিমিডিয়া রিপোর্টোর জাকির হোসেনসহ প্রায় ৩৫ জনের অধিক আহত হয়েছেন।
ধাওয়া-পাল্টা দাওয়ার এক পর্যায়ে ঢাকার সম্মিলিত কলেজের শিক্ষার্থীরা সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের ভিতরে প্রবেশ করে পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করে যার পরিপ্রেক্ষিতে পরীক্ষায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা ভয়ে পরিক্ষার হল থেকে বের হয়ে যায়।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, পরিক্ষার হলে থাকা শিক্ষার্থীদের প্রবেশ পত্র, প্রশ্ন ও উত্তর পত্র পরিক্ষার হলে পড়ে আছে এবং কক্ষের আসবাপত্র ভাংচুর অবস্থায় দেখা যায়। তাছাড়াও কলেজের একটি এ্যাম্বুলেন্স, একটি প্রাইভেট কার ও মাইক্রো বাস ভাংচুর করে। কলেজের বেশিরভাগ শ্রেণীর কক্ষের জানালার কাচঁ, আসবাপত্র ভাংচুর করেছে শিক্ষার্থীরা। এছাড়াও কম্পিউটার, প্রজেক্টর, বইসহ নানান সামগ্রী লুটপাট করে। এই সময় কলেজের অধ্যক্ষসহ নারী শিক্ষার্থীরা অবরুদ্ধ হয়ে যায়।
অন্যদিকে একই সময়ে ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল ইনস্টিটিউট হাসপাতালে বিক্ষোভকারীরা মূল গেইটে ও প্রসাশনিক ভবনের গ্লাস এবং একটি এম্বুলেন্স ও ইনস্টিটিউট ভবনের বাইরের গ্লাস ও ভবনের ভেতরে প্রবেশ করে ভাংচুর চালায়। এইসময় কলেজের একজন নিরাপত্তা প্রহরীসহ ৪ জন আহত হয়। হামলার ফলে বিদেশী শিক্ষার্থীসহ সবার মাঝে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। শিক্ষার্থীরা পূর্ণরায় কবি নজরুল সরকারি কলেজের প্রবেশের চেষ্টা করলে ব্যর্থ হয়ে কলেজ ভবনের জানালার গ্লাস ভাংচুর করে।
শেষ খবর পাওয়া প্রয়ন্ত কবি নজরুল সরকারি কলেজ ও সরকারি শহীদ সোহরোওয়ার্দী কলেজের শিক্ষার্থীরা সেন্স গ্রেগরি স্কুল এন্ড কলেজে হামলা চালিয়েছে।
কবি নজরুল সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী নিরব আহম্মেদ বলেন, কলেজে অনার্স প্রথম বর্ষের পরীক্ষা চলাকালীন ক্যাম্পাসে ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজ (ডিএমআরসি), ঢাকা সিটি কলেজ, ধানমন্ডি আইডিয়াল কলেজ, ঢাকা কলেজ, দনিয়া কলেজসহ কয়েকটি কলেজের শিক্ষার্থীরা হামলা ভাঙচুর করেছে। তারা তাদের একতাবদ্ধতার পরিচয় দিয়ে দুটি ক্যাম্পাসে হামলা করেছে। আমরা এই ঘটনার বিচার চাই।
সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের অধ্যক্ষ কাকলি মুখোপাধ্যায় বলেন, আমরা বাকরুদ্ধ। কিছু বুঝে উঠার আগেই তারা আমাদের উপর হামলা করে। আমাদের সব কক্ষে ভাংচুর করেছে। কি পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা আমরা দেখে বলতে পারবো। আমি পুলিশকে কল দিয়েছিলাম। কিন্তু তারা আমাদের জানায় তাদের উপযুক্ত ফোর্স না থাকায় পদক্ষেপ নিতে পারছে না। আমি বারবার আর্মি পাঠানোর জন্য বলেছি, কিন্তু তাদের দিক থেকে কোনো রেসপন্স পাইনি।
তিনি আরও বলেন, কলেজের কোন অফিস এবং কোন বিভাগের কক্ষই অক্ষত নেই। পুরো কলেজ এখন ধ্বংসস্তূপে পরিণত। দুজন শিক্ষকের ব্যক্তিগত গাড়ি এবং কলেজের গাড়িটিও ভেঙে তছনছ করে দেওয়া হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির আর্থিক পরিমাণ পরবর্তী সময়ে জানানো হবে।
/ইএইচ
মন্তব্য করুন