কুবি প্রতিনিধি: কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শিক্ষক সমিতির সাত দফা জানিয়ে ক্লাস বর্জনসহ বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করে আসছে। শিক্ষক সমিতির এই সাত দফা দাবি বাস্তবায়নের জন্য ছয় সদস্যের কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
সোমবার (২২ এপ্রিল) রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) আমিরুল হক চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে ছয় সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়।
কমিটিতে আহ্বায়ক হিসেবে আছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির এবং সদস্য-সচিব হিসেবে আছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ শামসুজ্জামান মিল্কী।
এছাড়া কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো: আসাদুজ্জামান, ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক এবং সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক মুহাম্মদ আহসান উল্লাহ, কলা ও মানবিক অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. বনানী বিশ্বাস এবং আইকিউএসি’র পরিচালক অধ্যাপক ড. মো: রশিদুল ইসলাম শেখ।
শিক্ষক সমিতির দাবি বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির বলেন, ‘শিক্ষক সমিতির দাবি-দাওয়াগুলো আমরা এখনো পাইনি। আমরা তো তাদের দাবি দাওয়া বাস্তবায়ন করতে পারব না, বাস্তবায়ন করবেন উপাচার্য স্যার। কমিটির সদস্য-সচিব অধ্যাপক ড. শামসুজ্জামান মিল্কীকে নির্দেশনা দিয়েছি তাদের দাবিসমূহ পাওয়ার সাথে সাথে কাগজপত্র নিয়ে বসে আমরা একটা মিটিং করব। শিক্ষক সমিতির সদস্যদের সাথে কথা বলে কোন প্রক্রিয়ায় দাবিসমূহ বাস্তবায়ন করা যায় এ ব্যাপারে একটা সুপারিশ নামা উপাচার্যের কাছে উপস্থাপন করব। দাবি-দাওয়াগুলো কীভাবে বাস্তবায়ন হবে সেটার সুপারিশ করব উপাচার্যের কাছে।’
এদিকে দাবি বাস্তবায়ন কমিটি গঠন করা নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে কুবি শিক্ষক সমিতি।
কমিটি নয় উপাচার্য নিজেই পারেন শিক্ষক সমিতির দাবিগুলো বাস্তবায়ন করতে এমনটাই বলেছেন শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের।
তিনি বলেন, ‘এখনো আমাদের কোনো চিঠি দেওয়া হয়নি। কমিটির বিষয়ে আমরা কিছু জানি না। আমরা যেহেতু উপাচার্য স্যারের কাছে দাবিগুলো জানিয়েছি একমাত্র তিনিই পারেন দাবিগুলো বাস্তবায়ন করতে। এখন তিনি যদি আরও কয়েকজন রেখে শিক্ষক সমিতির সাথে আলোচনায় বসতে চান তাহলে বসতে পারেন। তবে, আমাদের দাবিগুলো একমাত্র উপাচার্য স্যারই পারবেন বাস্তবায়ন করতে৷’
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএফএম আবদুল মঈন বলেন, ‘শিক্ষক সমিতির যেসব যৌক্তিক দাবি রয়েছে সেগুলা বাস্তবায়নে আমরা পদক্ষেপ নিচ্ছি। শিক্ষকদের সাথে আলোচনা করে সুপারিশ করতে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। আলোচনা করে উদ্ভুত পরিস্থিতি নিরসন করা হবে। তাই শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দকে আলোচনায় বসতে আহ্বান জানাচ্ছি।’
উল্লেখ্য, গত ১৯ ফেব্রুয়ারি শিক্ষক সমিতির নির্বাচনের পর উপাচার্যের কক্ষে শুভেচ্ছা বিনিময় করতে গেলে শিক্ষক সমিতির সঙ্গে অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য এবং ছাত্রলীগের বাগবিতণ্ডার ঘটনা ঘটে। শিক্ষকদের নায্য দাবি আদায়ের জন্য তিন দফায় ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করে। প্রথম দফায় ১৩ ও ১৪ মার্চ ক্লাস বর্জন করেন। দাবি আদায় না হওয়ায় দ্বিতীয় দফায় ১৯ মার্চ থেকে ২৭ মার্চ ফের ক্লাস বর্জন করা হয়। এবারও দাবিসমূহ মেনে না নেয়ায় তৃতীয় দফায় ২১ এপ্রিল থেকে ২৩ এপ্রিল ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করে।
এসআই/
মন্তব্য করুন