জাবি প্রতিনিধি: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ধষর্ণের ঘটনায় প্রশাসনের পক্ষের সহায়তাকারীদের দায়ী না করলে উপাচার্য নিজেই দায়ী হবেন বলে মন্তব্য করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের অধ্যাপক ও নিপীড়ন বিরোধী মঞ্চের আহ্বায়ক রায়হান রাইন।
বুধবার (১৩ মার্চ) দুপুর দুইটায় তৃতীয় দিনের মতো বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘নিপীড়ন বিরোধী মঞ্চের’ ব্যানারে পাঁচ দফা দাবিতে অবরোধ কর্মসূচিতে চার অনুষদের ডিনদের সাথে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন। এর আগে, গত সোমবার সকাল নয়টা থেকে নতুন প্রশাসনিক ভবনের ফটকে তালা ঝুলিয়ে অবরোধ শুরু করেন আন্দোলনকারীরা।
রায়হান রাইন উপস্থিত ডিনদের বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশ অনুযায়ী কোনো দুর্ঘটনার দায় অভিযুক্তকে না দিলে ওই ঘটনার দায় স্বয়ং উপাচার্যকেই নিতে হবে। এই বার্তা উপাচার্যকে আপনারা পৌঁছে দিবেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘অভিযুক্ত প্রক্টর এবং প্রভোস্টকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করলে প্রশাসনিক ভবন খুলে দিয়ে উপাচার্যের সঙ্গে আলোচনায় বসা যায়। নয়তো সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া না হলে প্রশাসনিক ভবন ছাড়া অন্যত্র কোথাও আলোচনায় বসে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।’
এ সময়, গাণিতিক ও পদার্থবিষয়ক অনুষদের ডিন অধ্যাপক ফরিদ আহমেদ বলেন, নিপীড়ন বিরোধী মঞ্চের সর্বশেষ দাবিগুলো আমরা জেনেছি। অবরোধ তুলে নিয়ে আলোচনায় বসতে তারা দুটি শর্ত দিয়েছে। উপাচার্য মহোদয়ের কাছে তাদের শর্তগুলো জানাবো এবং খুব শীঘ্রই এর সমাধান হবে বলে প্রত্যাশা করছি।
এদিকে, অবরোধ চলাকালে উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, রেজিস্ট্রার ও কোষাধ্যক্ষসহ প্রশাসনিক ভবনের কোনো কর্মকর্তা ও কর্মাচারীকে ভবনে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। যার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ে এক ধরনের প্রশাসনিক স্থবিরতা দেখা দিয়েছে।
কর্মসূচিতে দাবিগুলো হলো- মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের হল থেকে বের করে গণরুম বিলুপ্ত করে নিয়মিত শিক্ষার্থীদের আবাসন নিশ্চিত করা এবং র্যাগিং সংস্কৃতির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনা; ক্যাম্পাসে বিভিন্ন সময়ে নানাবিধ অপরাধে অভিযুক্তদের বিচারের আওতায় আনা; নিপীড়কদের সহায়তাকারী প্রক্টর ও মীর মশাররফ হোসেন হলের প্রাধ্যক্ষের অপরাধ তদন্ত এবং সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তদন্ত চলাকালে তাদের প্রশাসনিক পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া; মাদকের সিন্ডিকেট চিহ্নিত করে জড়িতদের ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া।
অবরোধের বিষয়ে নিপীড়ন বিরোধী মঞ্চের অন্যতম সংগঠক আলিফ মাহমুদ বলেন, ‘মাহমুদুর রহমান জনির বিচার হলেও সেই ঘটনায় ভিক্টিমকে জোর করে দায়মুক্তি লিখে নেয়া প্রক্টরের ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন। ধর্ষণের ঘটনায় সেদিন প্রক্টরের উপস্থিতিতে ধর্ষক মোস্তাফিজ পালিয়ে গেছে। ইউজিসি বলেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দায় এড়াতে পারে না। তাছাড়া র্যাব বলেছে দীর্ঘদিন যাবৎ প্রতি মাসে প্রায় ৭-৮ হাজার পিস ইয়াবা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করে। এছাড়াও অসংখ্য অভিযোগ এই প্রক্টর নিজে ধামাচাপা দিয়েছেন। তাই প্রক্টরকে অব্যাহতি দিয়ে তদন্ত করতে হবে। সে পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।’
এসআই/
মন্তব্য করুন