সাগর শুভ্র, শাবিপ্রবি প্রতিনিধি: ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে কোনো ইফতার পার্টি না করার অনুরোধ জানিয়ে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে চরম বিপাকে পড়ে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি) এবং নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় নোবিপ্রবি) প্রশাসন।
বিজ্ঞপ্তিটি প্রকাশিত হওয়ার পর থেকেই দেশে বিদেশ এর তীব্র সমালোচনা শুরু হয়। সমালোচনার মুখে নিজেদের বক্তব্য পরিবর্তন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনগুলো।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিজেদের বক্তব্য পরিবর্তন করলেও ধর্মীয় বিষয়ে হস্তক্ষেপ করায় দেশের প্রায় প্রত্যেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদে ফুসে উঠে।
বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হওয়ার প্রথম দিনই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীর। মানববন্ধন করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিয়ের শিক্ষার্থীরাও।
পরবর্তীতে পরের দিন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়সহ আরো কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে মানবন্ধন করে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
মানববন্ধনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের বাঁধা দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের বিরুদ্ধে।
মানববন্ধন ও গণ-ইফতার কর্মসূচী পালন করা বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হলো- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বশেমুরবিপ্রবি), নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (নোবিপ্রবি), আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম (আইআইইউসি), পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পাবিপ্রবি), ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি), রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি), জাহঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি), শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি), কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি), শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (শেকৃবি), জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি), রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট) ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি), হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্বদ্যিালয় (হাবিপ্রবি), বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় (ববি) সহ আরো অনেকগুলো বিশ্ববিদ্যালয়।
মানবন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সাধারণ শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত ও বাঙালির চিরাচরিত মুসলিম সংস্কৃতির উপর নগ্ন হস্তক্ষেপ কখনোই মেনে নেবে না শিক্ষার্থীরা। গণ-ইফতার ও প্রতিবাদ সমাবেশ করে এই সিদ্ধান্তের নিরব প্রতিবাদ করেছে শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবি ভবিষ্যতে যেন এরকম কোন সিদ্ধান্ত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশসন নেওয়ার সাহস না করে।’
এসময় ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকলেই এরকম সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করেন।
গণমাধ্যমে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌরভ ঘোষ নামের এক সনাতন ধর্মাবলম্বী এক শিক্ষার্থী বলেন, প্রতিবছর রমজান মাস এলেই বন্ধুদের সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ে ইফতার করি। আমি মনে করি অসাম্প্রদায়িক মনোভাব প্রকাশ করতে অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে ধর্মীয় রীতিনীতিতে নিজেদের সম্পৃক্ত রাখা।
গত ১০ মার্চ শাবিপ্রবি ও ১১ মার্চ নোবিপ্রবি প্রশাসন ক্যাম্পাসের বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট সকলকে আসন্ন পবিত্র রমজান মাসে ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে ইফতার পার্টির আয়োজন না করার জন্য অনুরোধ জানিয়ে বিজ্ঞপ্তি দেয়। পরবর্তীতে তীব্র সমালোচনার মুখে সিদ্ধান্ত বদল করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কর্তৃপক্ষ।
এসআই/
মন্তব্য করুন