রাবি প্রতিনিধি:
কোটা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর করা মন্তব্যের জেরে আগামীকাল থেকে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীরা। সোমবার (৭ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে কোটা বিরোধী এক ব্যতিক্রমী প্রতিবাদ সভায় এ বর্জনের ঘোষণা দেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
এছাড়াও বন্ধ থাকবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল দাপ্তরিক কাজ। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপসহ আগামীকাল থেকে তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলতে সার্বিকভাবে প্রস্তুতি নিতে সকল শিক্ষার্থীদের আহবান জানান তারা।
সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি সংস্কার ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখাসহ চারদফা দাবিতে তৃতীয় দিনের মত আজ বিকেল সাড়ে ৩টায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে সমাবেশ পালন করেছে রাবি শিক্ষার্থীরা।
‘মুক্তিযুদ্ধের মূলকথা, সুযোগের সমতা’, ‘সারা বাংলায় খবর দে, কোটা প্রথার কবর দে’, ‘আঠারোর হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার’, ‘জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্রসমাজ জেগেছে’, ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা’, ‘মুক্তিযুদ্ধের বাংলায়, বৈষম্যের ঠাই নাই’ শিক্ষার্থীদের এমনসব স্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোড।
এসময় শিক্ষার্থীরা জানান, সার্বজনীন পেনশন স্কিম বাতিলের দাবিতে শিক্ষকদের চলমান আন্দোলন শেষ হলেও শিক্ষার্থীরা শ্রেণী কক্ষে ফিরবেন না। কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তাদের এ আন্দোলন চলমান থাকবে। প্রয়োজন হলে আগামীকাল থেকে কঠোর আন্দোলনে যাবেন তারা।
এদিকে, ক্লাস-পরীক্ষা বাদ দিয়ে উচ্চ আদালতের রায়ের পর কোটাবিরোধী আন্দোলনের কোনো যৌক্তিকতা নেই বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রোববার গণভবনে বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় এ মন্তব্য করেন তিনি। এরপর থেকেই শিক্ষার্থীরা ক্লাস পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দেন এবং কঠোর আন্দোলনে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
ক্লাস পরীক্ষা বর্জনের বিষয়ে জানতে চাইলে কোটা পদ্ধতি সংস্কার আন্দোলনের আহ্বায়ক মেহেদী সজীব বলেন, প্রধানমন্ত্রী বক্তব্যে আমরা ছাত্র সমাজ মনোবল হারাতে বসেছি। আমরা আজকের কর্মসূচি থেকে আগামীকাল থেকে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছি। ইতোমধ্যে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক বিভাগের শিক্ষার্থীরা ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে নিয়েছে। আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলমান থাকবে। আমরা আগামীকাল ১১টা থেকে কঠোর আন্দোলনে যাবো। কারণ আমাদের দাবি নিয়ে সরকার ছিনিমিনি খেলছে।
কোটা আন্দোলনের অন্যতম আহবায়ক আমান উল্লাহ খান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর আশেপাশে এখনো অনেক দুষ্টুচক্রের লোক আছে যারা প্রধানমন্ত্রীকে অবমাননা করতে চায়। আমাদের কাছে মনে হয় হাইকোর্টের রায়ের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে অবমূল্যায়ন করা হয়েছে। কোটা বাতিলের যে কথা তিনি সংসদে বলেছিলেন, সেই কথা চার বছর পর কিভাবে হাইকোর্টের রায়ে বাতিল হয়ে যায়। আমরা প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে কাজ করে তার সিদ্ধান্তকে আবারও বাস্তবায়ন করবো।
ইএইচ/
মন্তব্য করুন