ববি প্রতিনিধি:
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কোটা সংস্কার আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপর হামলা চালিয়েছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের নামধারী ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। এ ঘটনায় ১৫ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।
সোমবার(২৯ জুলাই ) বেলা দুইটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাউন্ড ফ্লোরে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়করা তাদের পরবর্তী কর্মসূচি নিয়ে সভার জন্য একত্রিত হলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উপস্থিতিতে এ হামলা করে ছাত্রলীগের নামধারী একদল নেতাকর্মী।
জানা যায়, সভার কথা শুনেই সকাল ১০ টা থেকে ক্যাম্পাসের চারটি ফটকে পুলিশ, র্যাব ও সেনাবাহিনীকে অবস্থান নিতে দেখা যায়। আন্দোলনকারীরা এসময় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের প্রশাসনিক ভবন-১ এর নিচ তলায় অবস্থান নেন। এসময় নামধারী ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে জড়ো হয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে ভিতের ঢুকে যান এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সামনেই লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা করেন তারা।
ছাত্রলীগ পরিচয়ধারী নেতা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আবুল খায়ের আরাফাতের নেতৃত্বে শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করেন- আবিদ হাসান (গণিত বিভাগ; ২০১৫-১৬ সেশন), মাহমুদুল হাসান তমাল (আইন বিভাগ; ২০১৭-১৮ সেশন), আল সামাদ শান্ত (ভূতত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগ; ২০১৭-১৮ সেশন), খালেদ হাসান রুমি (ভূতত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগ; ২০১৭-১৮ সেশন), সাইফ আহমেদ (অর্থনীতি বিভাগ; ২০১৭-১৮ সেশন),সাব্বির হোসেন (বাংলা বিভাগ; ২০১৮-১৯ সেশন), শরীফুল ইসলাম (একাউন্টটিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগ; ২০১৮-১৯), রাকিবুল হাসান (বাংলা বিভাগ; ২০১৮-১৯)।
এছাড়াও উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী অশোক আলী, আইন বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী শাহারিয়ার সান ও শেখ মোহাম্মদ সাইফ হামলায় অংশগ্রহণ নেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
হামলার ঘটনায় বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়ক সুজয় বিশ্বাস শুভ, ভূমিকা সরকার সহ আরো ১৩ জন আহত হন। আহত শিক্ষার্থীদের শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
শিক্ষার্থীরা জানান, রাতে গ্রাফিতি নষ্ট করে দিনে প্রকাশ্যে হামলার চালিয়েছে পরিচয়ধারী ছাত্রলীগ নেতা কর্মীরা।
আহত সমন্বয়কারী সুজয় বিশ্বাস শুভ বলেন, গত পরশু দিন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা একটা সংবাদ সম্মেলন করে কতিপয় গণমাধ্যম এই সংবাদ সম্মেলনের তথ্যকে বিকৃতি রুপে প্রকাশ করে সারাদেশে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রশ্নবিদ্ধ করে ফেলে। সে ব্যাপারে পরবর্তীতে সঠিক সিন্ধান্ত নেওয়ার জন্য আমরা সমন্বয়কারীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাউন্ড ফ্লোরে মিটিং এ বসেছিলাম। এমতাবস্থায় ছাত্রলীগের একটি গ্রুপ আমাদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। এতে ১৫ জন আহত হয়েছে। এর শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি নয় জন ভর্তি রয়েছেন।
এদিকে সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মো. আব্দুল কাইউমের সাথে যোগাযোগের জন্য একাধিকবার তাকে ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভূঁইয়া বলেন, এ ধরনের ঘটনা কাম্য নয় ৷ সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর যেকোনো ধরনের হামলার সাথে যারা যারা জড়িত থাকবে তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে
উল্লেখ্য, প্রতিষ্ঠাকালীন থেকে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের কোনো কমিটি নেই।
ইএইচ/
মন্তব্য করুন